সরিষা ফুলের হলুদ বরণে সেজেছে ফসলের মাঠগুলো

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠে যতদুর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ রঙে মাখামাখি। সরিষা ফুলের মৌ-মৌ গন্ধ চারদিকে। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে সরিষা ফুল। সরিষা ফুলের হলুদ বরণে সেজেছে নওগাঁর ফসলের মাঠগুলো। প্রতিটি মাঠে সরিষার আবাদ হয়েছে চোখে পড়ার মতো। আর অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই কৃষকের ঘরে উঠবে সরিষা। কম খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা আগাম জাতের ও অধিক ফলনশীল এই ফসলের চাষ করেছেন। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন চাষিরা।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় ২৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে মান্দা উপজেলায় ৪ হাজার ২০০ হেক্টর, পতœীতলায় ৪ হাজার ৫০ হেক্টর, ধামইরহাটে ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর ও রানীনগরে ২ হাজার ৯৩০ হেক্টর। এছাড়া অন্যান্য উপজেলায় কমবেশি সরিষার আবাদ হয়ে থাকে। উন্নত বারি-৯, ১১, ১৪ ও ১৫, টরি-৭, হাইল্যান্ড ও সম্পদ জাতের সরিষা আবাদ করা হয়েছে।

সম্প্রতি জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে প্রায় সবকটির উপর দিয়ে স্মরণ কালের বন্যা বয়ে গেছে। বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় বিরূপ আবহাওয়া উপেক্ষা করে কৃষকরা আগাম জাতের সরিষার আবাদ করেছে। স্বল্প সময়, কম খরচ ও কম পরিশ্রমে এ ফসলের আবাদ হয়ে থাকে। পরবর্তীতে সরিষার জমিতে কম খরচে বোরো আবাদ করেন চাষীরা। ফলে সরিষার বিক্রির টাকা দিয়ে বোরো আবাদের খরচ কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারেন।

মান্দা উপজেলার দোডাঙ্গী গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, তিন বিঘা জমিতে উন্নত জাতের টরি-৭ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। আবাদও ভাল হয়েছে। আর কিছু দিনের মধ্যে ফসল ঘরে উঠবে। এখন ভাল দাম পেলেই হয়। প্রথম প্রথম সরিষার দাম ভাল পাওয়া গেলেও পরবর্তিতে তেমন আর দাম পাওয়া যায়না। সংরক্ষন করে রাখতে পারলে ভাল দাম পাওয়া যাবে। কিন্তু আমাদের মতো ক্ষুদ্র কৃষকদের পক্ষে ফসল ধরে রাখা সম্ভব হয়না।

রানীনগর উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, সম্প্রতি বয়ে যাওয়া বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম জাতের সরিষার আবাদে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকরা। এছাড়াও সরিষা উৎপাদনে কম সার, সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানীর প্রয়োজন হয় না। খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল হয়ে থাকে। আবার ওই জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। প্রতি বিঘায় সরিষার পরিমাণ ৬ থেকে ৭ মণ পর্যন্ত হয়ে থাকে। এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেই ভাল ফলন পাওয়া সম্ভব।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন, সরিষা একটি আগাম ফসল। এরপর বোরো আবাদ হয়ে থাকে। এ বছর কৃষককে সরিষা চাষে ব্যাপক সচেতন করা হয়েছে। কৃষি প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণে এ বছর সরিষার আবাদ কিছুটা কম হয়েছে। অতি বর্ষণে সরিষার ফলন কম হওয়ার আশংকা দেখা দিলেও পরবর্তীতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর