কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শহীদ আইভি রহমান স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ বন্ধ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অনিয়মের কারণে শহীদ আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিলেন উপজলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা আহমেদ। ফলে গত মঙ্গলবার থেকেই ঢালাই কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্টেডিয়াম নির্মাণে নিম্নমানের পাথর ও বালু ব্যবহারের দায়ে ঢালাই কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

জানা গেছে, স্টেডিয়াম নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাজের শুরু থেকে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। এরপরও তারা নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাচ্ছিল। ফলে ইতিমধ্যেই স্টেডিয়ামের দু’পাশের গ্যালারি নির্মাণে আনুমানিক ৬০ শতাংশ কাজ শেষ করেছে। বাকি কাজও শেষের পথে। এই অবস্থায় ব্যাপকহারে অনিয়মের বিষয়টি স্থানীয় লোকজন ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো. সায়দুল্লাহ মিয়া ও বিবিসি সভাপতি, স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপনকে অবগত করেন।

পরে অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে বিবিসি সভাপতি ও স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন গত সোমবার ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে অভিযোগের সত্যতা পেলে তিনি নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গতবছর ২০১৬ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে স্টেডিয়ামটিতে দ্বিতল প্যাভিলিয়ন ভবন নির্মাণসহ মাঠ উন্নয়ন, গ্যালারি, ড্রেন, চারদিকে দেয়াল ও গ্রিল নির্মাণ এবং মাটি ভরাট বাবদ ৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে মেসার্স ভূইয়া এন্ড ভূইয়া ডেভেলপার ও মেসার্স খলিলুর রহমান নামে দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ শুরু করেন।

এই স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজের মেয়াদ এক বছর নির্ধারণ করা হয় । সে হিসেবে এ মাসেই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজে ধীরগতির কারণে পরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ৬ মাস বৃদ্ধি করা হয়। ফলে আগামী জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে স্টেডিয়ামের ভবন নির্মাণকাজ ৭৫ শতাংশ শেষ হলেও গ্যালারিসহ অন্যান্য নির্মাণকাজ অন্তত ৪০ শতাংশ এখনো বাকি রয়েছে। তাছাড়া সিডিউল অনুযায়ী ৩/৪ সাইজের বোল্ডার পাথর ও সিলেকসন বালু দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সঠিক সাইজের পরিবর্তে নিম্নমানের নুরি পাথর ও সিলেকসন বালুর পরিবর্তে নদী থেকে ড্রেজারে তোলা বালু দিয়ে ঢালাই কাজ করে আসছিল। এসব অভিযোগের কারণে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।

স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ বন্ধের বিষয়টি স্বীকার করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেন সাংবাদিকদের জানান, সাপ্লায়ার নমুনা অনুযায়ী পাথর দেয়নি। তাই এমনটি হয়েছে। তবে সঠিক ও ভাল মানের পাথর এনেই ঢালায়ের কাজ পুনরায় শুরু করা হবে।

জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা আহমেদ জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় শ্রমিকরা নিম্নমানের পাথর ও বালু দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করছিল। তাই, ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি সঠিক সাইজের পাথর ও বালু আনতে পারে, তাহলেই তারা পুনরায় কাজ শুরু করতে পারবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর