আমন ধান কাটার উৎসব চলছে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠ জুড়ে পাকতে শুরু করেছে আমন ধান। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে একসাথে কাটা পরবে বেশিরভাগ ধান। এরই মধ্যে এই অঞ্চলের কিছু কিছু যায়গায় চলছে আমন ধান কাটার উৎসব। ভাল ফলন ও দামে বেশি পেয়ে খুশি কৃষকেরা।

কৃষকেরা বলছেন প্রতি বিঘায় ধান উৎপাদন হচ্ছে ১৮-২০ মন । আর এই নতুন ধান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০টাকা দরে। কিছু দিন আগেও প্রতিকুলতা পার করেছেন কৃষকরা। সেই প্রতিকুলতা কাটিয়ে কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে আমন ধান এতে খুশি কৃষক-কৃষাণী।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় লক্ষ্যমাত্রার বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে এবং ধানের দরও ভাল রয়েছে। এবারে জেলা বিভিন্ন উপজেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০ হাজার হেক্টর। তবে চাষ হয়েছিল ৭৩ হাজার হেক্টর। কিন্তু অতিরিক্ত বর্ষা ও বাধ ভেঙে ১২ হাজার হেক্টর জমি তলিয়ে যায়। রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠজুড়ে এখন পাকা সোনালি শিষের দোলা। বিস্তৃত মাঠজুড়ে যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই দেখা যায় শুধুই ধানের শিষ। কোথাও ধান কাটা আবার কোথাও ধানের মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষানীরা। কৃষকদের মুখে স্বপ্ন বিভোর সোনালি হাসি। কৃষকদের। চলতি মওসুমে মাজরা পোকার আক্রমন, গাছ ফড়িং রোগ শিষ ও পাতা মরা থেকে ক্ষেত বাঁচাতে প্রয়োগ করা হয়েছিল কীটনাশক। তবে চাষিরা জানান, ইঁদুরের আক্রমণ অনেক ক্ষেত নষ্ট হয়েছে এরপরও তারা ভালো ফলনের আশা করছেন। এবার এই বরেন্দ্র অঞ্চলসহ রাজশাহীতে আমন ধানের ব্যাপক ফলন পাওয়া যাচেছ এবং আশা করছেন কৃষক ও কৃষিবিদরা।

জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, এই মৌসুমে উপজেলায় ২৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘায় ১৭ মন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্রি-৪৯, ব্রি-৫১, ব্রি-৫৬, বিনা-৭, স্বর্না ও ভারতীয় জাত হুটরা ধান চাষ হয়েছে বেশি। উপজেলার পৌর এলাকার কৃষক আমিন মন্ডল বলেন আমি ১২ বিঘা আমন ধান চাষ করেছিলাম। আমার প্রতি বিঘায় ধান উৎপাদন হয়েছে ১৭ মণ যা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের লক্ষ মাত্রা সঠিক বলে মনে করি । আমার ধান কেটে মাড়াই প্রায় সম্পন্ন করেছি এবং বাজারে বিক্রি করেছি ৮০০- ৮৫০ টাকা দরে। তিনি আরো বলেন আমার প্রতি বিঘায় ধানে খরচ হয়েছে ৭ হাজার টাকা। গোদাগাড়ী কৃষি কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময়মত সেচ-সার জমিতে দেওয়ায় পোকার ও রোগ বালাই কম দেখা দিয়েছে। কিছুটা মাজরা পোকা ও গাছ ফড়িং এ ক্ষতি করলেও আমরা তা সময় মত পদক্ষেপ গ্রহণ করে না নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। এতে করে ধানের ফলন ভাল হচ্ছে। তবে গত মাসে ধানের দানা আসার সময় অতি বৃষ্টির কারণে ধানের গাছ গুলো মাটিতে শুয়ে যাওয়ার কারণে ফলন কম হয়েছে। অতি বৃষ্টি না হলে ধানের ফলন আরো বেশী হতো এই এলাকায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর