খালেদা জিয়ার গাড়িবহর আক্রান্ত

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত শনিবার সড়কপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে একাধিক হামলা হয়েছে। প্রথমে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহর হামলাকারীদের কবলে পড়ে।

এর পরের বড় হামলাটি হয় ফেনীতে। এখানে বহরের ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়িও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন সাংবাদিক ও টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন। এমনকি হুমকির মুখে হোটেলে খাবারও খেতে পারেননি সাংবাদিকরা। এর আগে দুপুরে মুন্সীগঞ্জের ভবেরচর ও কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জের কাছেও দলীয় চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে বলে বিএনপি অভিযোগ করেছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতে কক্সবাজারে গেছেন। তাঁর এই সফর পূর্বপরিকল্পিত। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে আগে থেকেই অবহিত করা ছিল।

তার পরও গাড়িবহরে হামলার ঘটনা কেন ঘটল? বিমানে যাওয়ার সুযোগ থাকতেও বিএনপির মতো একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেত্রী পথের ধকল সয়ে কেন সড়কপথে কক্সবাজার যাবেন; এ নিয়ে রাজনৈতিক কূটতর্ক হতে পারে। কিন্তু তাতে দায় ও দায়িত্ব অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হতে পারে, ঘটনাটি একেবারেই সাজানো নাটক। তাই যদি হবে, তাহলে এই নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার আগেই কেন বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি? অতীতে আওয়ামী লীগের নেত্রীর ওপরও এমন অনেক হামলা হয়েছে, এ কথা বলেও পারও পাওয়া যাবে না। দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান নেত্রীর গাড়িবহরে হামলা হয়েছে, এ বিষয়টিকে খাটো করে দেখার কোনো উপায় নেই। দেশের বাইরেও বিষয়টি আলোচিত হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের স্থিরতা ফিরে আসার বিষয়টি নিয়ে যাদের ভাবনা আছে, তাদের কাছে এই ঘটনাটি নিতান্তই অনভিপ্রেত। বিষয়টি যে সুস্থ রাজনীতির জন্য বড় অন্তরায়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা আবার প্রমাণ করল, দেশের রাজনীতিতে সহিষ্ণুতার অভাব এখনো দূর হয়নি। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে আমাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতি শিগগির অস্থিরতা থেকে মুক্ত হতে পারবে না।

বিএনপি বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। সংসদে না থাকলেও দলটির জনভিত্তি উপেক্ষা করা যাবে না। দলটির চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা দুঃখজনক। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না। তাদের দায়িত্ব ছিল সব ধরনের নিরাপত্তা বিধানের। তারা এ কাজে ব্যর্থ হয়েছে। এখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই আবার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। যারা হামলা চালিয়েছে, তারা কেউই ভিনগ্রহ থেকে আসেনি। হামলাকারীদের আইনের হাতে সোপর্দ করার দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিতে হবে। আমরা আশা করব, রাজনৈতিক সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে সব দল তাদের সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর