আওয়ামী লীগে কোন্দল বিএনপিতে ঠাণ্ডা লড়াই

হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতীয় নির্বাচনের বাকি আরো এক বছরের বেশি সময়। এরই মধ্যে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে দেশজুড়ে। চান্দিনা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুমিল্লা-৭ আসনও এর ব্যতিক্রম নয়। চান্দিনার ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে বড় দুটি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাসহ প্রভাবশালী একাধিক প্রার্থী। এ আসনে অভ্যন্তরীণ বিরোধে জর্জরিত আওয়ামী লীগ। বিএনপি জোটে রয়েছে ঠাণ্ডা লড়াই।

এ আসনে আওয়ামী লীগ মানেই অধ্যাপক আলী আশ্রাফ। একক আধিপত্য বিস্তার করে পর পর পাঁচবার নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক মো. আলী আশ্রাফ এমপি। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার বৈঠা হাতে নিতে তিনিসহ মরিয়া একাধিক প্রার্থী। কেউবা প্রকাশ্যে আবার কেউবা পর্দার আড়ালে দলীয় হাই কমান্ডের দারস্থ হচ্ছেন। অধ্যাপক আলী আশ্রাফ তার দীর্ঘদিনের নৌকার বৈঠা হাত ছাড়া করতে নারাজ। অপরদিকে অধ্যাপক আলী আশ্রাফ থেকে নৌকা প্রতীক কেড়ে নিতে মরিয়া একাধিক প্রার্থী। কমপক্ষে ৬ জন প্রার্থী এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। যদিও আলী আশ্রাফের পাল্লাই ভারি। এছাড়া আলোচনায় আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এর সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. প্রাণগোপাল দত্ত। কুমিল্লা উত্তর আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক নারী নেত্রী নাজনীন আকতার, চান্দিনা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মো. নাজমুল আহসান মজুমদার (রিপন), কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, শাহাজাদা মিঞা খোকা ও যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য  মো. মজিবুর রহমান।
আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী সব প্রার্থীর সর্মথকরা। কেউ বলছেন দলীয় হাই কমান্ডের নির্দেশ পেয়ে গণসংযোগে নেমেছেন, আবার কেউ বলছেন দল আমাদের প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবেন। এ নিয়ে চান্দিনা আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের মাঝে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। বহুল ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস বুকে চলছে প্রার্থীদের পক্ষে নানা প্রচারণা। নামে বেনামে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই লিখছেন এই নেতা আউট ওই নেতা ইন। আবার কেউ অধ্যাপক আলী আশ্রাফ এর পক্ষে আবার কেউ বা ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের পক্ষ নিয়ে ফেস বুকে স্টেটাস দিচ্ছেন।
এদিকে অধ্যাপক ডা. প্রাণগোপাল দত্তের সমর্থকরা বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন চান্দিনার সাধারণ জনগণের জন্য। চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে সব রকমের সেবা দিয়ে বেড়াচ্ছেন গরিব দুঃখী অসহায় মানুষদের।
অধ্যাপক ডা. প্রাণগোপাল দত্ত বলেন, আগামী নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চাইব। প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবো। আমি চাই চান্দিনাবাসীর সেবা করতে এবং এলাকার অসহায় মানুষদের পাশে থেকে তাদের সুখ দুঃখের সাথী হতে।
শাহজাদা মিঞা খোকা বলেন, ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত দলের জন্য আমি অনেক কিছু করেছি। আগামী নির্বাচনে অবশ্যই প্রার্থী হব এবং নির্বাচন করব ইন্‌শাল্লাহ। এতদিন চান্দিনার জনগণের সুখ দুঃখে তাদের পাশে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও  থাকবো।
অপরদিকে বিএনপি জোটে চলছে ঠাণ্ডা লড়াই। নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল এলডিপির (লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি) মহাসচিব  সাবেক মুক্তিযোদ্ধা প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহম্মেদ দলকে সুসংগঠিত করতে চষে বেড়াচ্ছেন চান্দিনার প্রতিটি ইউনিয়ন, হাট, বাজার, গ্রাম ও পাড়া মহল্লা। আগামী নির্বাচনে জোটের হয়ে তিনি লড়বেন এটা নিশ্চিত বলে মনে করছেন তার সমর্থকরা। রেদোয়ান আহম্মেদ এর বিশ্বস্ত কয়েকজন নেতাকর্মী ইতিমধ্যে বেশ চাঙ্গা মনোভাব নিয়ে রেদোয়ান আহম্মেদের ছবিসহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদের প্রার্থিতার কথা জানান দিচ্ছেন। কমেন্ট আর পাল্টা কমেন্ট এর মাধ্যমে সবাইকে জানান দিচ্ছেন- এই আসন থেকে বিএনপি দলের নয় শরিক দল এলডিপির প্রার্থীর মনোনয়ন নিশ্চিত। এ ব্যাপারে ড. রেদোয়ান আহম্মেদ বলেন, ২০ দলীয় জোটের একটি দলের মহাসচিব হিসাবে আমি মনে করি আগামী নির্বাচনে আমাকে মনোনয়ন দেয়া উচিত। যদি নীতি নির্ধারণী মহল মনে করেন এটা আমার পাওয়া উচিত তাহলে আমি পাব।
অপরদিকে উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতৃবৃন্দ জানান, নেত্রী এখনো কারোর মনোনয়ন নিশ্চিত করেননি। তবে এ পর্যন্ত এই আসনে এগিয়ে বিএনপির প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ মো. খোরশেদ আলম। আমরা আশা করি এ আসন থেকে বিএনপি প্রার্থীই মনোয়ন পাবেন। তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রহণ যোগ্যতা এবং সার্বিক বিষয় চিন্তা-ভাবনা করেই নেত্রী সিদ্ধান্ত নিবেন কে এই আসন থেকে নির্বাচন করবেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর