প্রার্থী নিয়ে নির্ভার আওয়ামী লীগ-বিএনপি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দিনাজপুর-৪ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন মাঠে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)’র মনোনয়ন প্রত্যাশীরা কেউই বসে নেই। নির্বাচনকে ঘিরে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, রাস্তার মোড়ে নেতানেত্রীদের ছবি সংবলিত বিলবোর্ড, পোস্টার সাঁটিয়ে ও বিভিন্ন দিবসগুলোতে শ্রদ্ধাঞ্জলির শুভেচ্ছা ব্যানার দিয়ে জমজমাটভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। দলীয় বর্ধিত সভা, প্রতিটি ইউনিয়নে সমাবেশ, বিয়ে-শাদিতে অংশগ্রহণ, ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আর্থিক অনুদান, অসুস্থ
নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানো, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা প্রদান করছেন তারা। অনেকেই কেন্দ্রের সবুজ সংকেতের আশায় সিনিয়র নেতাদের নিকট গ্রুপিং-লবিং করছেন।

চিরিরবন্দর উপজেলার ১২টি ও খানসামা উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসন গঠিত।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি প্রার্থীদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম হলেন- বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি। তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় রয়েছেন জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমান মানু ও ঢাকা ল্যাবএইডের অর্থোপেডিক্স সার্জন ডা. এম আমজাদ হোসেন। অপরদিকে, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ আখতারুজ্জামান মিয়া। এছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি’র হাফিজুর রহমান সরকার। বিএনপি জোটের মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠতে পারেন জামায়াত নেতা চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের দু’বারের চেয়ারম্যান আলহাজ আফতাবউদ্দীন মোল্লা ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) নেতা আশরাফ আলী খান। অবশ্য এ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থীর নাম আলোচনায় আসেনি।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী পুনরায় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। নেতাকর্মীরা তার পক্ষে নিয়মিত দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করায় সাধারণ মানুষ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তার প্রতি অনেকটা দুর্বল। তিনি মনোনয়ন লাভ করলে দল আবারো জয়লাভ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। অন্যদিকে, সাবেক হুইপ ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমান মানু নির্বাচন করার আশায় রয়েছেন। তিনি ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে বিতর্কিত হন। ওই নির্বাচনে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার ভোট পান। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিজয়ী হন। ঢাকা ল্যাবএইডের অর্থোপেডিক্স সার্জন ডা. এম আমজাদ হোসেনও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তদবির অব্যাহত রেখেছেন। করছেন বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ।
এদিকে, ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আলহাজ আখতারুজ্জামান মিয়া। বিএনপির এ নেতার রয়েছে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। তিনিও রয়েছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায়। আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় আখতারুজ্জামান মিয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মতবিনিময় করে চলেছেন। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-নিপীড়ন সহ্য করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন এবং মাঠে রয়েছেন।
অপরদিকে, শিল্পপতি হাফিজুর রহমান সরকার বিএনপি দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তার সমর্থকরা জানান। এদিকে, জামায়াত প্রকাশ্যে রাজনীতির মাঠে নামতে না পারলেও নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন নেতা জানান, জোটের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে। ভোটের বৈতরণী পার হতে হলে বিএনপি’র তাদের প্রয়োজন আছে। ২০১৪ সালের আগে ও পরে তাদের ওপর দিয়ে হামলা-মামলার অনেক ধকল গেছে। এজন্য চিরিরবন্দর উপজেলার দু’বারের উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান জামায়াতের সাবেক জেলা আমির মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আফতাবউদ্দীন মোল্লা কৌশলে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রতীক বড় বিষয় নয়। কর্মী-সমর্থকদের আয়ত্তে রাখতে জামায়াত যেকোনো প্রতীক নিয়ে ভোটের ময়দানে থাকতে প্রস্তুত আছে। এ আসনে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় গণতান্ত্রিক দল (জাগপা)’র কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ আলী খান মনোনয়ন লাভের প্রত্যাশায় রয়েছেন। তিনি জাগপা’র একক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর