উপকূলের অঞ্চলের সংরক্ষিত বনজ সম্পদ আহরণের ফি বাড়ল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বন অধিদফতরের আওতাধীন পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের সংরক্ষিত বনের বনজ সম্পদ আহরণের বিভিন্ন  ফি’র পরিমাণ বাড়ল। ফি বৃদ্ধি করে সম্প্রতি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়েছে।

অপ্রধান বনজদ্রব্যের রয়্যালিটি হারের ক্ষেত্রে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতার (মাইজপাতা ও ঠেকপাতা ছাড়া অনুর্ধ্ব ৫০০ মণ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন যে কোনো নৌকার জন্য) সংগ্রহ ফি ২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে।

প্রতি কুইন্টাল মধ্য শিরা ছাড়া গোলপাতার সংগ্রহ ফি ৫০ টাকার স্থলে ১০০ টাকা ও মাইজ পাতা ও ঠেকপাতা ছাড়া গোলপাতার প্রতি পণের (৮০টি) সংগ্রহ ফি ১২ টাকার স্থলে ২৫ টাকা হয়েছে।

প্রতি কুইন্টাল মধু সংগ্রহে ফি ৭৫০ টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা, প্রতি কুইন্টাল নলখাগড়া আড়াই টাকা থেকে ৫০ টাকা, প্রতি কুইন্টাল বিভিন্ন প্রকার ঘাস (ধানসী, হোগলা ইত্যাদি) আড়াই টাকা থেকে ৫০ টাকা, প্রতিটি হেতাল সংগ্রহের ফি ৪ টাকা থেকে বেড়ে ৫ টাকা হয়েছে।

মাছ আহরণের ক্ষেত্রে ফি প্রতি কুইন্টাল ইলিশ, চিংড়ি, রূপচাঁদা, ভেটকি ও পাংগাস মাছ ছাড়া যে কোন সাদা মাছে ৩২০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার টাকা হয়েছে।

প্রতি কুইন্টাল ইলিশ রূপচাঁদা, ভেটকি ও পাংগাস সংগ্রহের ক্ষেত্রে ফি এখন এক হাজার ২০০ টাকার পরিবর্তে ৫ হাজার টাকা দিতে হবে।

প্রতি কুইন্টাল গলদা ও বাগদা ইত্যাদি বড় চিংড়ি সংগ্রহে ফি ২ হাজার ৫০০ টাকার পরিবর্তে ১০ হাজার টাকা এবং প্রতি কুইন্টাল গুড়া চিংড়ি সংগ্রহে ২৫০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার টাকা ফি দিতে হবে।

প্রতি কুইন্টাল রূপচাঁদা, পোয়া ও লাক্ষ্যা মাছের শুটকির ফি এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪ হাজার টাকা, প্রতি কুইন্টাল শুকনা মাছের (অন্যান্য শুটকি) ফি ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।

প্রতি কুইন্টাল শুকনা পরিত্যক্ত চিংড়ি বা কাঁকড়ার বর্জ্য মাথা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে আহরণের ফি ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা হয়েছে।

গোচারণের ক্ষেত্রে প্রতিটি গরুর প্রতি মৌসুমে (২-৩ মাস) ফি ১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা ও মহিষের ক্ষেত্রে ২২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করা হয়েছে।

বনাঞ্চলে অবস্থানসহ অন্যান্য ফিও বাড়ানো হয়েছে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে যে সব লোক মাছ ধরেন, তাদের জন্য পুনঃযানবাহনের বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন ফি ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে বা আংশিক সপ্তাহের অবস্থানের ফি বাড়নো হয়েছে। নৌকায় থেকে মাছ ধরার ক্ষেত্রে প্রতিজনের ফি ৭ টাকা থেকে বেড়ে ১০ টাকা এবং লঞ্চ বা ট্রলারে থেকে মাছ ধরার ক্ষেত্রে প্রতিজনের ফি ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা হয়েছে।

সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নৌকা বা লঞ্চে বা ট্রলারে যে সব মাছ ব্যবসায়ীরা থাকেন তাদের জন্য পুনঃযানবাহনের বার্ষিক রেজিস্ট্রেশন ফি ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে বা আংশিক সপ্তাহের জন্য অবস্থানের ফি বাড়ানো হয়েছে। এক্ষেত্রে নৌকায় অবস্থান করা মাছ ব্যবসায়ীদের প্রতিজনের ফি ৮ টাকা থেকে বেড়ে ২০ টাকা ও লঞ্চ বা ট্রলারে থাকা ব্যবসায়ীদের প্রতিজনের ফি ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা হয়েছে।

পারমিটধারী নৌকায় অতিরিক্ত অবস্থানের জন্য বনজদ্রব্যের মোট রাজস্বের ওপর ধার্যকরা অতিরিক্ত অবস্থানের ফিও বেড়েছে। এক্ষেত্রে প্রথম ৩ দিনের প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত অবস্থান ফি ২৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা, প্রথম ৩দিনের ঊর্ধ্বে প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত অবস্থান ফি ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা করা হয়েছে।

ভ্রমণকারী, জেলে এবং মাছ ব্যবসায়ীরা যারা পারমিটের মাধ্যমে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রবেশ করে অতিরিক্ত সময় অবস্থান করেন তাদের ক্ষেত্রে প্রতিজনের প্রতিদিনের অতিরিক্ত অবস্থান ফি ২ টাকার স্থলে হয়েছে ৩০ টাকা।

জেলে বা মাছ ব্যবসায়ীদের ট্রলারে অতিরিক্ত অবস্থানের ক্ষেত্রে প্রতিজনের প্রতিদিনের ফি ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে। মধু আহরণের পারমিটধারীদের অতিরিক্ত অবস্থানের জন্য প্রতিজনের একদিনের অতিরিক্ত অবস্থান ফি ৩ টাকা থেকে বেড়ে ১০ টাকা হয়েছে।

আদেশে আরও বলা হয়েছে— নৌকা নিবন্ধন সনদপত্র (বিএলসি) প্রতি আর্থিক বছরের জন্য জন্য ইস্যু করতে হবে। প্রতি বছরের জুলাই মাসে প্রথম পক্ষে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী বিএলসি ইস্যু করতে হবে (প্রতি ১০ কুইন্টালকে ১ ইউনিট ধরে বিএলসি ফি নিতে হবে)। প্রতি বিএলসি (১০ কুইন্টাল অর্থাৎ ১০ থেকে ২৯ কুইন্টাল পর্যন্ত) ফি ৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর