মুখে বলবো না, মাঠে দেখাবো

পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষ। বিসিএল-এর একটি ম্যাচ তাও মাঠে গড়াবে ২৪শে মে। কিন্তু ছুটির ফাঁকেও বসে নেই ক্রিকেটাররা। মিরপুর শেরে বাংলায় ক্রিকেট একাডেমির মাঠ আর জিমে স্ব-উদ্যোগেই চলছে ট্রেনিং। এর মধ্যে বেশির ভাগই পেস বোলার। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ইমরুল কায়েসকে দেখা গেল অনুশীলনে। সঙ্গে আরেক ব্যাটসম্যান নাসির হোসেন। জিমের ফাঁকে ফাঁকে গল্প করছিলেন কয়েকজন পেসারের সঙ্গে। আগামী মাসেই ভারত আসছে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ খেলবে টাইগারদের বিপক্ষে। তাই জাতীয় দলে টিকে থাকার লড়াইয়ে নিজেকে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত নাসির। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৪ সালে শেষ টেস্ট খেলেছেন। ১৬ ম্যাচে ৩৬.৮৪ গড়ে রান করেছেন। টেস্টে তুলে নিয়েছেন ১টি সেঞ্চুরি ও ৬টি ফিফটি। তবুও  জিম্বাবুয়ে ও পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট একাদশে সুযোগ হয়নি তার। টেস্ট খেলতে না পারার আক্ষেপ তাকে পোড়াচ্ছে। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট দিয়েই মিশন শুরু। তাই ঘরোয়া চারদিনের ক্রিকেটে বিসিবিএল নিয়ে মনোযোগী এই তরুণ তারকা। দলের জিম করার ফাঁকে কথা হয় দৈনিক মানবজমিন-এর স্পোর্টস রিপোর্টার ইশতিয়াক পারভেজের সঙ্গে। তার কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: মাঠের বাইরে বসে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দেখেছেন। কেমন হলো?
নাসির হোসেন: আসলে বাংলাদেশ দল অনেক ভাল খেলছে। ওয়ানডে বলেন, টেস্ট বলেন, এই সিরিজে বাংলাদেশ যা আশা করেছে তাই পেয়েছে। খুলনা টেস্টে দেখেন আমরা যেভাবে কামব্যাক করে ম্যাচ ড্র করেছি মনেই হয়নি এটি বাংলাদেশ দল। হ্যাঁ, দ্বিতীয় টেস্ট আমরা হেরেছি। কিন্তু খুব যে খারাপ করেছি পাকিস্তানের বিপক্ষে তাও নয়। আমরা টসে জিতে ব্যাট করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি মনে হয় না এটি কোন ভুল ছিল। কারণ উইকেটে তখন পেসারদের বেশ সুবিধা ছিল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য- রাজীব ভাই ইনজুরিতে পড়ায় আমাদের একজন পেস বোলার যেমন কম হয়েছে, তেমনি একটি বোলিং অপশনও কমে গিয়েছিল। যে কারণে হয়তো পরিকল্পনা একটু এলোমেলো হয়ে গেছে। তবে আমরা দল হিসেবে ভাল খেলেছি।
প্রশ্ন: আগামী মাসে ভারত আসছে। নিজেকে কিভাবে প্রস্তুত করছেন?
নাসির:  এর মধ্যে বিসিবিএল-এর একটি ম্যাচ খেলেছি। ২৪শে মে আরেকটি ম্যাচ আছে। এখন ফাঁকা সময়ে নিজের উদ্যোগেই অনুশীলন করে যাচ্ছি। প্রতিদিন জিম করছি। আর বিসিবিএল-এর ম্যাচটা আছে, যারা ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলবে আশা করি এই ম্যাচটা তাদের জন্য অনেক উপকারে আসবে।
প্রশ্ন: টেস্ট দলে ফিরতে চান কি না?
নাসির:  বিষয়টা নির্বাচকের হাতে। আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।
প্রশ্ন: মিস্টার ফিনিশার বলা হয় আপনাকে। আপনি নিজে কতটা বিশ্বাস করেন।
নাসির: আমি যখন মাঠে নামি চেষ্টা করি খেলা শেষ করে আসতে। কখনও হয় কখনো হয় না। আর বেশ কিছুদিন ধরে আমিতো সুযোগই পাচ্ছি না। সুযোগ পেলে সেটি প্রমাণ করবো। আমি আসলে সব ফরমেটেই ফিনিশার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে চাই।
প্রশ্ন: ভারতের মূল শক্তি কি বলে মনে করেন?
নাসির: সবাই জানে ভারতের মূল শক্তি ব্যাটিং। আমাদের সেটি নিয়ে বেশি কাজ করতে হবে।
প্রশ্ন: ভারতের বিপক্ষে ফতুল্লার উইকেট কেমন চান?
নাসির: ক্রিকেটার হিসেবে উইকেট নিয়ে তেমন কোন চিন্তা নেই। কারণ, যে কোন উইকেটে খেলতে হবে। আর উইকেট নিয়ে ভাবার অনেকেই আছেন। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত চাইলে বলবো ট্রু উইকেট হলে ভাল হয়। কারণ, আমরা যেমন স্পিন শক্তির দল তেমনি ভারতও কিন্তু স্পিন বেশ ভাল খেলে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চয় সিনিয়ররা আছেন তারা ঠিক করবেন  কেমন উইকেট হলে ভাল হয়।
প্রশ্ন:  ভারতের তুলনায় আমাদের শক্তি কি?
নাসির: বেশ কয়েক বছর ধরেই আমরা দল হিসেবে খুব ভাল খেলছি। আমি মনে করি ‘টিম বাংলাদেশ’ হলো আমাদের মূল শক্তি। আরেকটা বিষয় হলো- আগে আমাদের দুই-একজনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। কিন্তু এখন দলের কেউ না কেউ হাল ধরে এগিয়ে নেন। সবাই এখন দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রশ্ন: মাশরাফি ও মুশফিকের অধিনায়কত্বে পার্থক্য কি?
নাসির: দু’জন নিজ নিজ জায়গাতে সেরা। আমি মনে করি না, তাদের অধিনায়কত্ব নিয়ে মন্তব্য করার কোন কিছু আছে বা করা উচিত।
প্রশ্ন: বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। তাদের বিপক্ষে আমরা কতটা ফেভারিট বলে মনে করেন?
নাসির: বিশ্বকাপ আর ঘরের মাঠে দুটি  খেলা সম্পূর্ণ ভিন্ন। অবশ্যই আমরা ভারতের বিপক্ষে ফেভারিট। কারণ আমরা এখন যেভাবে ক্রিকেট খেলছি তাতে যে কোন দলের বিপক্ষে সিরিজ জয় সম্ভব বলে মনে করি।
প্রশ্ন: আপনার লক্ষ্য কি?
নাসির:  লক্ষ্যটা এবার মুখে বলবো না, মাঠেই  দেখাবো।
প্রশ্ন: ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে কোন আক্ষেপ আছে কি?
নাসির: বলার কিছু থাকলেও আমরা বলার লোক না। এ সব বিষয় নিয়ে ভাবেন এমন অনেক লোক আছেন। ঘাটতি থাকলে সেটি তাদেরই পূরণ করার চিন্তা বেশি আছে। আমি এ নিয়ে কোন মন্তব্য করবো না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর