ভাঙ্গায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বড়ব্রীজ সংলগ্ন কুমারনদে আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার শত বছরের পুরনো এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় দুরদুরান্ত থেকে বাহারী ধরনের অর্ধশতাধিক নৌকা অংশগ্রহন করে। ভাঙ্গা পৌরসভা,বাজার বনিক সমিতি ও নৌকাবাইচ উৎযাপন কমিটি এর আয়োজন করে। অনেকটাই নদীবেষ্টিত এবং এলাকার মানুষের যাতায়াতের অন্যতম বাহন নৌকা হওয়ায় কালের পরিক্রমায় ‘মেসোপটেমিয়ার মানুষদের শুরু করা এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলাটি দেখতে ৩ কিলোমিটার ব্যাপী নদীর দু,পাড়, বাড়ীর ছাদ, নৌকায় তিল ধারনের জায়গা ছিলনা। নৌকাবাইচ উপলক্ষে প্রতিযোগিরা বেশ কয়েকদিন যাবৎ নৌকায় রং লাগানো থেকে শুরু করে চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করার জন্য চলে তাদের নৌকার সাজসজ্জার কাজ। বিকেলে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলেও সকাল থেকেই বিভিন্ন নামের বাহারীর্ ংও সাজের ‘সাইন্ধা.‘বাচাড়ী আসতে থাকে। নদীবক্ষে সঙ্গীতের তাল-লয়ে বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ ছন্দময়তায় নৌকাগুলো যখন এগিয়ে যায় তখন এক মনোমুগ¦কর দৃশ্যের অবতারনা হয়। আবেগ-উত্তেজনায় নদীজল আন্দোলিত করে বাদ্যের তালেতালে মাঝিমাল্লারা যখন বাবরী দুলিয়ে, দর্শক ও মাঝিমাল্লাদের নানা হর্ষধ্বন্রি সাথে নৌকাগুলো এগিয়ে যায় আর নানাপ্রকার শারিরীক কসরত প্রদর্শন করে তখন রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা, নৌকায়, নদীর দু’পাড়ে থাকা হাজারও মানুষ করতালি দিয়ে তাদেরকে স্বাগত জানায়। নির্মল বিনোদনের এ প্রতিযোগিতা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার জন্য এক সপ্তাহ আগে থেকেই পুর্ন প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়। থানা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আবদুল্লাহ, ফায়ার সার্ভিসসহ, ফরিদপুর থেকে আসা অতিরিক্ত পুলিশ সার্বিক আইনশৃংখলার দায়িত্ব পালন করেন। সন্ধ্যায় ভাঙ্গা থানা চত্বরে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরন করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য স্থপতি নিলুফার জাফর উল্লাহ,বিশেষ অতিথি ছিলেন ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, জেলা আওয়ামীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, ভাঙ্গা বাজার বনিক সমিতির সভাপতি শহিদুল হক মিরু মুন্সীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার প্রধান উপদেষ্টা আওয়ালীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরন করেন। বিজয়ী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন সহ প্রত্যেককে সান্তনা পুরষ্কার প্রদান করা হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর