সাগরে মাছ শিকার

আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী কিংবদন্তি রামসাগরে চলছে দু’দিনব্যাপী মাছ শিকার উৎসব। এ দীঘিতে মাছ শিকার প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শৌখিন মাছ শিকারিরা অংশ নিয়েছেন। কিন্তু আশানুরূপ মাছ শিকারে ব্যর্থ হওয়ায় হতাশার কথা ব্যক্ত করেছেন মাছ শিকারিরা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী জাতীয় উদ্যান রামসাগর দীঘি। এ দীঘিকে ঘিরে রয়েছে কিংবদন্তি ইতিহাস। আর এ দীঘিতে মাছ শিকার উৎসব! চারদিকে পড়ে যায় সাড়া, তুমুল আলোচনা। কারা হবেন ভাগ্যবান- এ দীঘিতে মাছ শিকারে? কারা পাবে মাছ শিকার অনুমতির টিকিট? অবশেষে ৭ বছর পর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৪ হাজার টাকা ফি’র মাধ্যমে একটি করে মাছ শিকারের টিকিট দেয়া হয়। এ টিকিট পান দুই ব্যক্তি। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থান হতে বিভিন্ন পেশার শৌখিন মৎস্য শিকারিরা শুক্র ও শনিবার এ দীঘিতে মাছ শিকারে অংশ নেন। কিন্তু আশানুরূপ মাছ শিকারে ব্যর্থ হওয়ায় মাছ শিকারিরা হতাশ। রাজধানী ঢাকা থেকে আগত মাছ শৌখিন মাছ শিকারি আবু তালেব জানান, তিনি বড় আশা করে এসেছিলেন মাছ শিকারে ঐতিহাসিক রামসাগর দীঘিতে। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি হয়েছে। একটা বালিয়া মাছ ছাড়া কিছুই পাননি তিনি। যশোর থেকে আগত মাছ শিকারি বেলায়েত জানালেন, তিনি গোসল করতে নেমে রামসাগর দীঘি থেকে হাতিয়ে হাতিয়ে একটা টাকি মাছ ধরেছেন। এ মাছটি তার কাছে পনেরো হাজার টাকা মূল্যের। তিনি বলেন, জনপ্রতি মৎস্য শিকারিরা একটি টিকিটের বিপরীতে ৩টি বরশি বা হুইল ব্যবহারের অনুমতি পান। এতে টিকিটের মূল্য ৪ হাজার টাকা ছাড়াও মাছের খাদ্য চারা-টপ, যাতায়াত বাহন, ভাড়া, অবস্থান, খাওয়া-দাওয়াসহ আনুষঙ্গিক প্রায় জন প্রতি ১০ হাজার টাকা বাড়তি ব্যয় হয়। কিন্তু মাছ শিকারে বসে গুড়েবালির মতো অবস্থা তাদের। কেউ শিকার করতে পারেনি আশানুরূপ মাছ। নাটোর জেলা থেকে আগত মাছ শিকারি মকবুলের অভিযোগ, আগেভাগে জাল দিয়ে সব মাছ তুলে নিয়ে খালি পুকুরে তাদের মাছ শিকারে নামিয়েছে জেলা প্রশাসন। দেড় কেজি ওজনের একটি রুই মাছ শুধু শিকার করে প্রথম হয়েছেন একজন। কয়েকজন দু’একটি টাকি ও বালিয়া মাছ শিকার করেছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম। তিনি বলেছেন, হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এই মাছ শিকার উৎসবের আয়োজন। এটা বিনোদনের জন্য। তাছাড়া মাদকের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা ও রামসাগর এলাকাকে মাদক মুক্ত করার জন্যই এ আয়োজন। আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে দিনাজপুরের কিংবদন্তি রামসাগর দীঘিতে মাছ শিকারের উৎসব চলছে। আর এ মাছ শিকার করছেন, সখিন মাছ শিকারিরা। এ ধারা অব্যাহত থাকার দাবি সচেতন মানুষের।
এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর