ইংল্যান্ডকে ৩৪০ রানে হারাল প্রোটিয়ারা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  ইংল্যান্ড যে হারের মুখে রয়েছে সেটি তৃতীয় দিন শেষেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইংলিশরা যে এমন নাকানিচুবানি খাবে সেটি হয়তো খোদ দক্ষিণ আফ্রিকাও চিন্তা করেনি। স্বাগতিক দলকে নিয়ে নটিংহ্যামে রীতিমতো ‘ছেলেখেলা’ করেছে প্রোটিয়ারা।আজ সোমবার চতুর্থ দিন জো রুটের দলকে ৩৪০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৩৩৫ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০৫ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ১৩০ রানের বড় লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ৩৪৩ রান তোলে ইনিংস ঘোষণা করে প্রোটিয়ারা। ফলে ইংল্যান্ডের সামনে ৪৭৪ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য দাঁড়ায়। সেটির পেছনে ছুটতে গিয়ে ৪৪.২ ওভারে মাত্র ১৩৩ রানেই গুটিয়ে লজ্জাজনক হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ রান করার পথে অ্যালান বোর্ডারকে (১১,১৭৪) টেস্ট রানসংখ্যায় স্পর্শ করেন অ্যালেস্টার কুক। এছাড়া মঈন আলি ২৭, বেন স্টোকস ১৮ এবং জনি বেয়ারস্টো করেন ১৬ রান। কিটন জেনিংস (৩), গ্যারি ব্যালান্স (৪), জো রুট (৮), লিয়াম ডওসন (৫) এবং স্টুয়ার্ট ব্রড (৫)- সবার নামের পাশেই মোবাইলের ডিজিট।ইংল্যান্ডকে ৩৪০ রানে ‘বিধ্বস্ত’ করল প্রোটিয়ারা

দ্বিতীয় ইনিংসের ইংল্যান্ডের উইকেটগুলো ভাগ করে নেন ভারনন ফিল্যান্ডার, কেশব মাহরেজ, ক্রিস মরিস এবং ডোয়াইন অলিভিয়ে। ফিল্যান্ডার ও মাহরেজ নেন তিনটি করে উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন অলিভিয়ে ও মরিস।

সোমবার ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টের চতুর্থ দিন বিনা উইকেটে ১ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে ইংল্যান্ড। দলীয় ৪ রানের মাথায় ফিল্যান্ডারের বলে জেনিংসের বোল্ড হওয়ার মধ্য দিয়ে ইংলিশদের পতনের শুরু। এরপর ২৮ রানের মাথায় ব্যালান্স এবং ৫৫ রানের মাথায় ফেরেন রুট। ব্যালান্সকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন ফিল্যান্ডার। অন্যদিকে অসাধারণ ডেলিভারিতে রুটকে বোল্ড করেন মরিস।

উইকেট পতনের মিছিল থামাতে পারেননি কুক-বেয়ারস্টোরা। দলীয় ৭২ রানের মাথায় মরিসের বলে উইকেটের পেছনে কুইন্টন ডি কককে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন কুক। ২৫ মিনিট পর মাহরেজের বলে মরিসকে ক্যাচ দিয়ে তাকে স্বাগতিক ওপেনারকে অনুসরণ করেন বেয়ারস্টো। ৮৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বড় পরাজয়ের শঙ্কার মুখে পড়ে ইংল্যান্ড।ইংল্যান্ডকে ৩৪০ রানে ‘বিধ্বস্ত’ করল প্রোটিয়ারা

ষষ্ঠ উইকেটে মঈন ও স্টোকস মিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তবে সেই প্রতিরোধ স্থায়ী হয় মাত্র ১০ ওভার। অলিভিয়ে ও মাহরেজের তোপের মুখে পড়ে ২৯ বলে ১১ রান তোলে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে লজ্জাজনক হারকে সঙ্গী করে মাঠ ছাড়ে প্রথম টেস্টে ২১১ রানের বড় জয় পাওয়া ইংল্যান্ড।।

এর আগে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকান কোনো ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি না পেলেও ৩৩৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় সফরকারীরা। প্রোটিয়াদের হয়ে হাশিম আমলা ৭৮, কুইন্টন ডি কক ৬৮, ভারনন ফিল্যান্ডার ৫৪, ক্রিস মরিস ৩৬ এবং হিনো কুন করেন ৩৪ রান।

প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে জেমস অ্যান্ডারসন পাঁচটি এবং স্টুয়ার্ট ব্রড নেন তিনটি উইকেট। স্টোকস পান দুটি উইকেট।ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম ইনিংসে রুট এবং বেয়ারস্টো ছাড়া অন্যান্যা ব্যাট হাতে সুবিধা করতে না পারায় ২০৫ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। রুট ৭৮ এবং বেয়ারস্টো করেন ৪৫ রান। ব্যালান্সের ব্যাট থেকে আসে ২৭ রান।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্রথম ইনিংসে তিনটি করে উইকেট নেন মাহরেজ ও মরিস। দুটি করে উইকেট নেন মরকেল ও ফিল্যান্ডার।ইংল্যান্ডকে ৩৪০ রানে ‘বিধ্বস্ত’ করল প্রোটিয়ারা

দ্বিতীয় ইনিংসেও দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কোনো ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও ৩৪৩ রানের বড় পুঁজি পায় প্রোটিয়ারা। ডিন এলগার ৮০, আমলা ৮৭, ডু প্লেসিস ৬৩ এবং ফিল্যান্ডার ৪২ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেললেও জয়ের ভিত পায় সফরকারীরা।দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে মঈন চারটি এবং স্টোকস ও অ্যান্ডারসন দুটি করে উইকেট নেন।

দুই ইনিংসে ৯৬ রান করার পাশাপাশি ৫ উইকেট নেয়ায় ফিল্যান্ডার ম্যাচ-সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার লাভ করেন। আগামী ২৭ জুলাই লন্ডনে কেনিংটন ওভালে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সিরিজের তৃতীয় টেস্ট শুরু হবে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে শেষ টেস্ট শুরু হবে আগামী ৪ আগস্ট। এর আগে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমান ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ইংলিশরা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর