অর্থাভাবে চিকিৎসা হয়নি শিশুটির

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে নয় বছর বয়সী এক শিশু অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা হয়নি।
স্থানীয় এক চিকিৎসক মো. জাহিদুল ইসলাম আক্রান্ত শিশু আলিমুনের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের পাতায় পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়। স্যোশাল মিডিয়ার কল্যাণে জানতে পেরে গণমাধ্যমকর্মীরা শিশুটির পাশে দাঁড়িয়েছে।

রোববার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, শিশু আলিমুন ঘরের বারান্দায় বসে খাবার খাচ্ছে। মাথাটা ফোলা। হঠাৎ কেউ দেখলে আতকে উঠবেন। তার মাথায় একাধিক ফোঁড়া। যা দেখতে টিউমারের মতো। মাথা থেকে এখন পিঠে ও হাঁটুতে ফোঁড়া উঠতে শুরু করেছে।

শিশুটির শরীরে কী রোগ তা শনাক্ত হয়নি। এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন চিকিৎসকরা। তারা শিশুটিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে এনেছেন।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দর গ্রাম। এই গ্রামে এক শতক জমির উপর কুঁড়ে ঘরে আলিমুনের মা সখিনা বেগম, দাদি কুলসুম বেগম, বড় ভাই শুকুর আলী শেখ বসবাস করেন। বাবা আজাহার শেখ তিন বছর আগে মারা গেছেন। মা সখিনা বেগম দিনমজুর। রাস্তা ও পরের বাড়িতে কাজ যে টাকা রোজগার করেন, তাই দিয়ে কোনো রকমে চলে সংসার। অভাবের সংসার চালাতে মা সখিনাকে হিমশিম খেতে হয়। এই অভাবের মধ্যে কীভাবে তিনি ছেলের চিকিৎসা করাবেন।

আলিমুনের বড় চাচি শরীফা বেগম বলেন, চার থেকে পাঁচ বছর আগে আলিমুনের মাথায় টিউমারের মতো দেখা দেয়। তখন ওর বাবা বেঁচে ছিলেন। সেই সময়ে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল। ধারদেনা করে আলিমুনকে কিছু দিন ওষুধ খাওয়ানো হয়। খুলনার চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আর্থিক অনটনে তা আর সম্ভব হয়নি।

গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মো. নাসির বলেন, তারা শিশুটির অসুস্থতার বিষয়ে জানতেন না। এখন তার চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অরুণ চন্দ্র মন্ডল বলেন, স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে শিশুটির বিষয়ে জানতে পেরেছেন। তার শরীরে কী রোগ হয়েছে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে বলা যাবে না। শিশুটিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

এখানে তার চিকিৎসা সম্ভব না হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

 

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর