তোপের মুখে ভূমিমন্ত্রী ও মেয়র

ঈশ্বরদীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িতে হামলা নিয়ে এবার দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়লেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ও তার জামাতা ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু।

ভূমিমন্ত্রী ও মেয়রের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের পর গত ১৮ মে হামলা-ভাংচুরের ঘটনা নিয়ে শনিবার ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় আলোচনা হয়েছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, প্রধান অতিথি ছিলেন ভূমিমন্ত্রী ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপি।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহাক আলী মালিথা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাবু ও শহীদুল ইসলাম।

ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের গ্রুপিং, দ্বন্দ্ব-সংঘাত এবং একের পর এক নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে পাল্টা-পাল্টি ভাংচুরের ঘটনার জন্য ভূমিমন্ত্রী ডিলু ও পৌর মেয়র মিন্টুকে দায়ী করে বক্তব্য দেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

নেতাদের মধ্যে আব্দুল খালেক, আতাউর রহমান বাবু ফকির, জুলহাস উদ্দিন, আজিজুর রহমান চঞ্চল, আবুল হাশেম, আবুল কাশেম গোলবার, হায়দার আলী, শিমুলসহ ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের ৯টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা বক্তব্য রাখেন।

দীর্ঘদিন পর ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের সভায় নেতাদের উপস্থিতিতে তাদের সমর্থক ক্যাডারদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক নিয়ে সামনাসামনি কথা বলতে পেরে তৃণমূলের নেতারা খুশি।

সভা শুরুর পর পরই ঈশ্বরদীতে হামলা, ভাংচুর, মন্ত্রীর ছেলেসহ যুবলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও মামলার বিষয় নিয়ে কথা বলেন নেতারা। সব বক্তাই এসবের জন্য ভূমিমন্ত্রী ও তার জামাতাকেই দায়ী করেন।

প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা জুলহাস উদ্দিন বলেন, ইতিপূর্বে মিন্টুর সমর্থক ক্যাডাররা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী, সমর্থক ও একাধিক সাংবাদিকের বাড়িঘরে হামলা-ভাংচুর চালিয়েছে। অন্য নেতারা গত ১৮ মে ঈশ্বরদীতে ভাংচুর ও হামলার জন্য মন্ত্রীর সমর্থক নেতাকর্মীদের দায়ী করে বক্তব্য দেন।

সভায় ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘মুখে কাপড় বেঁধে যারা দোকান ও বাড়িতে ভাংচুর করেছে এবং ইতিপূর্বে প্রকাশ্যে যারা ভাংচুর করেছে তাদের কাউকে দলে রাখা হবে না। যুবলীগ-ছাত্রলীগকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব মেনে রাজনীতি করতে হবে।’

মেয়র মিন্টু বলেন, ‘ওই দিন কারা হামলা-ভাংচুর করেছে তা পৌরসভার সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে। সন্ত্রাসী যেই হোক তার বিচার হবে।’

মন্ত্রী, মেয়র ও উপস্থিত সব নেতকর্মীই ঈশ্বরদীর সংঘাতময় রাজনীতি ও মন্ত্রী-মেয়রের ভুল বোঝাবুঝির অবসান চান।

এ বিষয়ে মেয়র মিন্টু বলেন, ‘মন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তিনিই পারেন সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান করতে পৌর আওয়ামী লীগের নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আগামী সভায় তা পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর