সঠিক সময়ে পে-স্কেল বাস্তবায়ন করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নে শঙ্কিত না হওয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সঠিক সময় নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, সরকার আর্থিক স্বচ্ছলতা ও মর্যাদার সঙ্গে জীবন-যাপনে সহায়তার লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে নতুন পে-স্কেল দিয়েছে। তাই এটি সঠিক সময় বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি আজ সন্ধ্যায় রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক বিশেষ অতিথি ছিলেন। এতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম মোশাররফ হোসাইন ভূইঞা, এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব এম মোশাররফ হোসেনও বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এসোসিয়েশনের সভাপতি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের মনে রাখতে হবে তারা জনগণের সেবক, শাসক নন। জনগণের করের অর্থ থেকে তাদের বেতন-ভাতা আসে। তাই আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণকে সেবা দেয়া।
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে এ সার্ভিসের অনেক সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তারা বঙ্গবন্ধু’র সহযাত্রী হয়ে দেশ পুনর্গঠনেও আত্মনিয়োগ করেছিলেন। আপনারা তাদেরই উত্তরসূরী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের মাঝামাঝি এসে আমরা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। এখন আমাদের লক্ষ্য এ অবস্থানকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে মাঝামাঝি অবস্থানে নিয়ে যাওয়া।
তিনি বলেন, আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট ‘উত্তম চর্চা’ বা ‘গুড প্র্যাকটিসেস’ উদ্ভাবন এবং সেগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের কাজের গতি ত্বরান্বিত করতে ‘পাবলিক সার্ভিস অ্যাক্ট-২০১৫’ মন্ত্রিপরিষদ নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়ে আমরা পদোন্নতির জট খুলে দিয়েছি। আমাদের সময়ে যত পদোন্নতি হয়েছে, এর আগে কোন সরকারের সময় এত পদোন্নতি হয়নি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০৯-২০১৪ পর্যন্ত সচিব পদে ৯২ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ২০৩ জন, যুগ্ম-সচিব পদে ১ হাজার ১১৩ জন এবং উপ-সচিব পদে ১ হাজার ৮২ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত এপ্রিলে ২২৭ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত সচিব পদে, ২৮৮ জনকে যুগ্ম-সচিব পদে এবং ৩২১ জনকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে উপ-সচিব থেকে তদূর্ধ্ব ৩২৫টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। পদোন্নতি প্রদানের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা থাকলে তার সমাধান এবং আইনী বাধাসমূহ নিষ্পত্তি করে পদোন্নতি প্রদানের কার্যক্রম অব্যাহত রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে সরকারি কর্মকর্তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী এসোসিয়েশনের সদস্যদের সঙ্গে নৈশভোজে যোগ দেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর