ভাঙনে ৩শ ঘর-বাড়ি বিলীন

বন্যার মৌসুম শুরু না হতেই সিরাজগঞ্জে রাক্ষুসী যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে চলা পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন। এতে শুষ্ক মৌসুমেই তিন শতাধিক বাড়ি-ঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের বাহুকা, চর বাহুকা, টুটুলের মোড়, কাজিপুরের শুভগাছা পয়েন্টে প্রচণ্ড শ্রোত ও ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টির ফলে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এদিকে ভাঙন চলতে থাকেলও তা প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ ভাঙন কবলিত মানুষের।

সরেজমিনে বাহুকা এলাকা ঘুরে ও কৃষক ময়দান আলী, শুভগাছার আব্দুল মজিদ, আব্দুল কাদের, মহির উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সদর উপজেলার বাহুকা থেকে কাজিপুর উপজেলার খুদবান্দি পর্যন্ত পাউবোর নদী সংরক্ষণ বাঁধের টুটুল মোড় এলাকায় গত ১৫ দিনে শতাধিক বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আর গত তিনমাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে তিন শত বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মসজিদসহ হুমকির মুখে রয়েছে বাহুকা, শুভগাছাসহ আশপাশের গ্রামগুলো।

এলাকাবাসী আরও জানান, নদীর পানি বাড়তে থাকলে যেকোনো সময় শিমলা-খুদবান্ধি বাঁধটি ভেঙে যেতে পারে। এতে তিনটি ইউনিয়নের অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

রতনকান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে অব্যাহত ভাঙনে শত শত পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়লেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা শুধু পরিদর্শন করেই চলে যাচ্ছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৗশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, আসামে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় যমুনায় পানি বাড়ছে। আর পানি বাড়ার কারণে নদীভাঙন শুরু হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বাহুকা থেকে খুদবান্দি ও কাজিপুরের মেঘাই এলাকা মিলে ৮ কিলোমিটার নদীতীর রক্ষা বাঁধের একটি প্রকল্প ইতোমধ্যে প্রি-একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। একনেকে প্রকল্পটি অনুমোনের অপেক্ষায় রয়েছে। ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, ভাঙনরোধে জরুরী বরাদ্দের জন্য বোর্ডে ই-মেইল বার্তা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকায় ভাঙনরোধের কাজ শুরু হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর