মন্ত্রীর ভাগ্নে ওবায়দুল হত্যায় স্ত্রীকে রিমান্ডে

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসির ভাগ্নে কোয়ালিটি আইসক্রিমের জিরো ব্র্যান্ডের ব্যবস্থাপক ওবায়দুল হক হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত স্ত্রী তাসমিন খদিজা সোনিয়াকে (২৬) রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার সোনিয়াকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন মহানগর হাকিম।

বুধবার মধ্য রাতে তাকে চট্টগ্রামের ‘ট্রিটমেন্ট’ হাসপাতালের সামনে থেকে ডিবি সোনিয়াকে গ্রেপ্তার করে। ওই হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে গভীর রাতেই ছাড়পত্র নিয়ে সিএনজি অটোরিকশাযোগে হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেন সোনিয়া। স্বামী খুন হওয়ার কয়েক দিন পরই চট্টগ্রামে বাবার বাড়িতে চলে যান সোনিয়া। জ্বর হওয়ার কারণে গত ২১ জুলাই পাঁচলাইশে ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে ভর্তি হন সোনিয়া। তবে ডিবির ধারণা, দুই আসামির জবানবন্দিতে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি জানাজানির পর ‘অসুস্থ’ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সোনিয়া।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন রাতে সেখানকার কর্মস্থল থেকে রিকশায় বাসায় ফেরার পথে কলাবাগানের সার্কুলার রোডে দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন ওবায়দুল। পরে সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তিন যুবক ওবায়দুলের কাছে থাকা ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে গুলি করে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, ‘ছিনতাইকারীদের হাতে নুরুল ইসলাম বিএসসির ভাগ্নে খুন’। ভিডিও ফুটেজসহ বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত করছিল পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের পর ওবায়দুলের মামা চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম বিএসসি প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এর ফলে মামলার তদন্তে আরো গতি বাড়ে বলে জানায় সূত্র। নিহত ওবায়দুল তার স্ত্রীকে নিয়ে সার্কুলার রোডের ৫৭ নম্বর বাসার দোতলায় থাকতেন।

সম্প্রতি হত্যার সঙ্গে জড়িত মিঠু ও তানভীর নামে দুই আসামিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে সোনিয়ার সম্পৃক্ততা জানায়। তারা দু’জন সম্পর্কে সোনিয়ার প্রেমিক রুবেলের ভাগ্নে। জবানবন্দির তথ্য অনুযায়ী ঘটনার রাতে ওবায়দুল হত্যা মিশনে মিঠু, রুবেল, তানভীর ও তার আরেক ভাগ্নে পাপ্পু উপস্থিত ছিল।

দুই আসামি জবানবন্দিতে জানায়, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় চার বছর আগে চট্টগ্রামের তাসমিন খদিজা সোনিয়া ও চাঁদপুরের সাইফুল্লাহ ওরফে রুবেলের প্রেম হয়। আট মাস আগে পারিবারিকভাবে সোনিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় ওবায়দুল হকের। তবে বিয়ের পরও সাবেক প্রেমিক রুবেলের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখতেন সোনিয়া। তার সঙ্গে ঘর বাঁধতেই মূলত ওবায়দুলকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। এ জন্য পিস্তল কিনতে রুবেলের হাতে সোনিয়া তুলে দেন ৬০ হাজার টাকা। এরপর রুবেল অস্ত্র কিনে তার তিন ভাগ্নেকে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ওবায়দুলকে হত্যা করায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর