চৈত্র সংক্রান্তি আজ, বিদায় ১৪২৩

আজ চৈত্র সংক্রান্তি, চৈত্রের শেষ দিন। শেষ দিন ঋতুরাজ বসন্তেরও। বাংলা ১৪২৩ সাল শেষ গান গেয়ে আজ বিদায় নেবে। সেই সঙ্গে বসন্তকে বিদায় জানিয়ে বাঙালির সামনে আগামীকাল হাজির হচ্ছে আরও একটি নতুন বছর ১৪২৪। শুক্রবার সারাদেশের বাঙালিরা মেতে উঠবে বর্ষবরণের উৎসবে। নতুন দিনের বার্তা নিয়ে বৈশাখ নিয়ে আসবে বাঙালির মাঝে।

চৈত্র সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসে লোকোৎসব। বাংলা মাসের শেষ দিনটিকে ঘিরে লোকাচার অনুসারে নানা ক্রিয়াকর্ম করে থাকে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে প্রধানত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এটি নানা আড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকে। কালক্রমে বাঙালির সংস্কৃতিতেও কম বেশি লেগেছে বদলের বাতাস। আগে গ্রামবাংলায় চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে আচার-অনুষ্ঠানের অন্ত ছিল না। চৈত্র সংক্রান্তির মেলা উপলক্ষে গ্রামাঞ্চলের গৃহস্থরা মেয়ে-জামাইকে সমাদর করে বাড়ি নিয়ে আসতো। অবস্থা সম্পন্ন গৃহস্থরা সবাইকে নতুন জামা-কাপড় দিতো এবং খাবার-দাবারের আয়োজন করতো। সেই সংস্কৃতি এখন মূলত বছরের প্রথম দিনটিকে ঘিরেই।

এরপরও বাংলা সনের শেষ দিনটিতে আজ চৈত্র সংক্রান্তির মেলা ও নানা পর্ব গ্রামবাংলায় যে একেবারেই হচ্ছে না তাও নয়। চৈত্র সংক্রান্তির আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়েই মূলত বর্ষবরণের উত্তাপ ছড়ায়।

চৈত্র সংক্রান্তিতে ১৪২৪-কে স্বাগত জানাতে এখন উন্মুখ বাঙালি। বৈশাখকে বরণ করার জন্য চলছে সাজগোজ আর ধোয়ামোছা। চৈত্র সংক্রান্তি ও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসছে বৈশাখীমেলা। দোকানপাট ধুয়ে-মুছে বিদায়ী বছরের সব জঞ্জাল, অশুচিতাকে দূর করা হয়। লাল মলাটের হালখাতা নিয়ে নতুন বছরের অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা। পুরনো বছরের হিসাব-নিকাশ ঘুচিয়ে ফেলে ক্রেতার সঙ্গে নতুন সম্পর্ক তৈরিতে চলে মিষ্টিমুখ।

সারাদেশের ন্যায় রাজধানীর তাঁতীবাজার, শাঁখারীপট্টি, লক্ষ্মীবাজার, বাংলাবাজার, চকবাজার এলাকায় হালখাতা নিয়ে চলেছে বিশেষ আয়োজন। রাজধানীর বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজনে চৈত্রসংক্রান্তি উদযাপন করবে। এর মধ্যে বড় আয়োজনটি করা হয়েছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। চ্যানেল আই ও সুরের ধারা আয়োজিত ‘সানসিল্ক হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণ-এর অংশ হিসেবে চৈত্রসংক্রান্তির আয়োজন থাকছে। এবারের চৈত্রসংক্রান্তির বিষয় ‘বাংলাদেশে রবীন্দ্র। এদিন সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত থেকে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চলবে এ অনুষ্ঠান।

বাংলা নববর্ষকে বরণের জন্য রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রধান আয়োজন ছায়ানটের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। রমনা বটমূলে শেষ হয়েছে মঞ্চ নির্মাণ। শুরু হয়েছে মঞ্চ সাজানো। আগামীকাল সূর্যদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রমনা বটমূলে ছায়ানটের শিল্পীরা সমবেত কণ্ঠে গান গেয়ে বৈশাখকে স্বাগতম জানাবেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর