কিশোরগঞ্জের হাওড় অঞ্চলকে দুর্গত ঘোষণার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন

আমরা ভেবেছিলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে দেশের মানুষের জন্য পানি নিয়ে আসবেন। কিন্তু তিনি শূন্য হাতে ফিরে আসলেও হাওড় অঞ্চল পানিতে ভাসছে। সেখানকার প্রান্তিক কৃষকেরা তাদের সহায়-সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, নদী শাসন না থাকার কারণে আজকে আমরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সুনামগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ-নেত্রকোনা-হবিগঞ্জসহ যে সমস্ত হাওড় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাদের পাশে রাষ্ট্রের এখনই দাঁড়ানো উচিত। তাদের কৃষি ঋণ মওকুফ করে নতুন করে আবার আবাদ করতে পারে সেই ব্যবস্থা কৃষি মন্ত্রণালয় যদি করে তাহলে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমরা খুশী হবো।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ জেলার হাওড় এলাকাসহ প্লাবিত সকল হাওড় অঞ্চলকে দূর্গত ঘোষণার দাবিতে আয়োজিত নাগরিক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না এ কথা বলেন।

সংগঠনের সভাপতি মো. ওমর ফারুক সেলিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান তামান্না, বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড আবদুর রাজ্জাক, সচেতন নাগরিক সংহতির সভাপতি হাবিবুর রহমান বিপ্লব, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা।

সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সাংবিধানিক অধিকার ফোরামের সভাপতি সুরঞ্জন ঘোষ, কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট সমাজসেবক অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন বাদল, বন্ধু দলের সভাপতি শরীফ মোস্তফা জামান লিটু, গণ ঐক্যের সভাপতি আরমান হোসেন পলাশ প্রমুখ।

মাহমুদুর রহমান মান্না আরো বলেন, আমাদের দেশের দুই নেত্রী তাদের নির্দেশের বাইরে একটি গাছের পাতাও নড়ে না। এমনকি তাদের নেতাকর্মীরা জোরে কাশি দেয় না, নেত্রী বিরক্ত বা ঘুম ভেঙে যেতে পারে। সেখানে হাওড় অঞ্চলে এতবড় ক্ষতি হলো কারো কি নজরে কাড়লো না। সম্প্রতি মেয়র বরখাস্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমে বলেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি জানেন না।

প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে ফিরে এসে তিনি হিন্দি ভাষায় কথা বললেন। কি এমন আনন্দ পেলেন জানি না যে হঠাৎ করে মায়ের ভাষা ভুলে গিয়ে হিন্দিতে কথা বলতে শুরু করেছেন। তিনি অবিলম্বে হাওড় অঞ্চলকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করার জোর দাবি জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন,সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়ে কৃষকদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। হাওড় অঞ্চলের দুর্গত মানুষরা জীবন যুদ্ধে হিমশিম খাচ্ছে। অথচ এখনো তাদের পাশে কেউ নেই।

সচেতন নাগরিক সংহতির সভাপতি হাবিবুর রহমান বিপ্লব বলেন, অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে হাওড় অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে। হাওড় অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করে পরবর্তী ফসল না ওঠা পর্যন্ত বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি চালু করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম হাওড় অঞ্চলে বিস্তৃত করে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতি রোধে একটি কার্যকর কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। কৃষকের কৃষি ঋণ মওকুফ করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর