ঢাকায় আইপিইউ সম্মেলন শুরু আজ

আন্তঃপার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) ১৩৬তম সম্মেলন আজ রাজধানী ঢাকায় শুরু হচ্ছে। এই সম্মেলন বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এর গুরুত্ব তুলে ধরতে বাংলাদেশের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করবে।
আইপিইউ’র সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী শুক্রবার সকালে এখানে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরা এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী আল ফ্রেড কিসিঞ্জারের মন্তব্যের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সৃষ্ট নেতিবাচক ধারণা দূর করার একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে।
সাবেক মাকির্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর বাংলাদেশকে একটি তলা বিহীন ঝুড়ি বলে উল্লেখ করেছিলেন।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতায় বলেন, সফল ভাবে এই সম্মেলন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রগতির ক্ষেত্রে এটি হবে একটি মাইল ফলক। এই সম্মেলন দেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, আমরা এই সম্মেলন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতি, সম্ভাবনা এবং একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ার কথা তুলে ধরার সুযোগ পাবো।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আইপিইউ’র মহাসচিব মাটির্ন চুংগংও বক্তব্য রাখেন।
এ বছরে সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ”রিএ্যাড্রেসিং ইনইকুয়ালিটি: ডেলিভারিং অন ডিগনিটি এন্ড ওয়েল বিং ফর অল”। সম্মেলনে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সারথি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, পাচঁ দিনব্যাপী এই সম্মেলন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিদেশী অতিথিদের জন্য পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
১৯৭২ সালে ফোরামে যোগ দেয়ার পর এই প্রথম বারের জন্য বিশ্বের আইন প্রণেতাদের দীর্ঘদিনের পুরানো এই সংগঠনের সম্মে¥লনের স্বাগতিক দেশ হয়েছে বাংলাদেশ।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বিশ্বের ১২০ টি দেশের ৫৩ জন স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং ২০৯ জন নারী পার্লামেন্টারিয়ানসহ মোট ১৩৪৮ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী একটি স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্ত করবেন এবং আইপিইউ’র ওয়েভসাইট টেলিভিশন উদ্বোধন করবেন।
সম্মেলনের অন্যান্য কর্মসূচি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাচঁটি ভেনুতে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে যোগ দিতে আসা অতিথিরা নগরীর ১৫টি হোটেলে থাকবেন।
দেশে এবং বিদেশে সম্মেলনের সংবাদ পাঠাতে পারে, এ জন্য বিআইসিসি’তে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হাইস্পিড ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল সুবিধাসহ অত্যাধুনিক মিডিয়া সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
আইপিইউ’র সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, আইপিইউ’র একজন মুখপাত্র দিনের কর্মসূচি শেষে মিডিয়া সেন্টরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন।
আইপিইউ’র কনভেনশন অনুযায়ী স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী স্বাগতিক দেশের স্পিকার হিসাবে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন। সম্মেলনে যোগদানকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের অভ্যন্তরে ও বাইরে চার স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১২’শ নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকবে এবং নিরাপত্তা কাজ তদারকিতে এএসপি থেকে এসপি পযার্য়ের আরো ১৪ জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। বিদেশী অতিথিদের ব্যাগ ১৭ মিনিটের মধ্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাউন্টারের সংখ্যা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি একটি হেলফ ডেস্কও স্থাপন করা হয়েছে।
বিমান বন্দর থেকে বিআইসিসি পযর্ন্ত এবং পার্শবর্তী এলাকার সড়কে অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে না রঙের ফেস্টুন ও ব্যানার স্থাপন করা হয়েছে।
১৮৮৯ সালে আইপিইউ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম সদর দপ্তর ছিল সুইজারল্যান্ডে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, চীফ হুইপ এএসএম ফিরোজ, হুইপ ইকবালুর রহিম, সংসদ সদস্যগণ, আইপিইউ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর