সিলেটে নিহত চার জঙ্গির একজন মুসা : পুলিশ

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত চার জঙ্গির মধ্যে একজন মাঈনুল ইসলাম ওরফে মুসা বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা। তারা জানান, মুসা যে ছবি দিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন, সেই ছবির সঙ্গে পুলিশের কাছে থাকা ছবির মিল দেখে তারা পরিচয় নিশ্চিত হয়েছেন।

পুলিশের মতে, মুসা নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা। নব্য জেএমবির কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিহত হওয়ার পর মুসা নব্য জেএমবিকে গোছানোর চেষ্টা করছিলেন।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটে সেনাবাহিনী ব্রিফিং করে জানায়, আতিয়া মহলের ভেতরে থাকা চার জঙ্গি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। এদের মধ্যে দুজন আগের দিন রোববার কমান্ডোদের গুলিতে নিহত হয় বলে ওই দিন সেনাবাহিনী জানিয়েছিল। বাকি এক নারী ও পুরুষ এর আগে না পরে নিহত হয়েছে, সে সম্পর্কে গতকাল কিছু বলা হয়নি।

গত ২৪ ডিসেম্বর

রাজধানীর আশকোনায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর আলোচনায় আসেন মাঈনুল ইসলাম। তার সাংগঠনিক ছদ্মনাম মুসা। ওই আস্তানা থেকে মুসার স্ত্রী ও জাহিদের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে আত্মসমর্পণ করলেও আরেক নারী বোমা ফাটিয়ে আত্মঘাতী হন। ওই অভিযানের পর মুসা চট্টগ্রামের দিকে আস্তানা গাড়েন। আশকোনার বাসাটি ইমতিয়াজ পরিচয়ে ভাড়া নিয়েছিলেন মুসা।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘আজিমপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর তানভীর কাদরীর ছেলে ও মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলামের মেয়ে দুজনেই “মুসা আঙ্কেল” নামের একজনের কথা বলেছে। জাহিদুলের মেয়ে আমাদের জানায়, তার মা জেবুন্নাহার শিলা ও ছোট বোন আজিমপুরের বাড়িতেই ছিল। একদিন জেবুন্নাহার শিলা তাদের জানান, তিনি মুসা আঙ্কেলের বাসায় যাচ্ছেন। মুসা আঙ্কেলের স্ত্রীর “বাবু” হবে।’

মুসার বাড়ি রাজশাহীর বাগমারায়। তিনি উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের বুজরুককোলা গ্রামের আবুল কালাম মোল্লাহর ছেলে। মুসার বাবা আবুল কালাম মোল্লাহ মসজিদের মোয়াজ্জিন ছিলেন। তিনি মারা গেছেন। মুসা গ্রামে খুব কম আসতেন। লোকজনের সঙ্গে তেমন যোগাযোগও ছিল না। এলাকায় মেধাবী ছাত্র হিসেবে মুসার পরিচিতি ছিল। ঢাকা কলেজে ইংরেজি সাহিত্য বিভাগে সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করে তিনি উত্তরার লাইফ স্কুলে যোগ দেন। এরপর থেকেই তাদের পারিবারিক অবস্থার উন্নতি হয়।

পুলিশ জানায়, লাইফ স্কুলের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের তাদের বলেছেন, মুসা এ (২০১৬) বছরের ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাস পর্যন্ত তাদের স্কুলে ইংরেজি পড়াতেন। পরে চাকরি ছেড়ে দেন। মুসার মা সুফিয়া বেগম গত ডিসেম্বরে বলেছিলেন, ১০ মাস ধরে তার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী-সন্তানের কোনো সন্ধান তারা পাননি। প্রথম আলো

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর