উৎসবের আমেজে চলছে নৌকা-ধানের শীষের প্রচারণা

আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণার আর মাত্র সময় আছে ৬ দিন। তাই দিন যতই ঘনিয়ে আসছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের প্রচারণা ততই গতি পাচ্ছে। দম ফেলার ফুসরত নেই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি দুই মেয়র ও ১৫৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থীদের। বিশেষ করে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে নৌকা-ধানের শীষের প্রচারণা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে প্রচারণা যেন উৎসবের আমেজে চলছে। বেলা ২টার দিকে গণসংযোগের সঙ্গে চলে মাইকিং প্রচারণা। একটার পর একটা মাইকের আওয়াজে নগরবাসীর মনে বিরক্ত উদ্রেক করলেও তা মেনে নেন হাসি মুখেই।
বুধবার সকাল থেকেই গণসংযোগে বেরিয়ে পড়েন কুসিক নির্বাচনের মেয়র পদের দুই হেভিওয়েট প্রার্থী। আর তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে একই সঙ্গে প্রচারণা চলে উভয় প্রার্থীর ২৭টি ওয়ার্ড ভিত্ত্বিক কমিটির প্রচারণা।
ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বুধবার প্রচারণা শুরু করেন নগরীর সদর দক্ষিণ উপজেলার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। এখানে গোয়াল মথন এলাকায় গণসংযোগ করে তিনি ১৫নং ওয়ার্ডে আসেন। এই ওয়ার্ডের কাটাবিল, চট্রিপাড়া, বালুধুম, প্রফেসর পাড়া, গজারমাল কলোনীসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ করেন। বিকেলে শুরু করেন নগরীর সদর দক্ষিণ উপজেলার ১৯নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ। ঢুলিপাড়া, নেউরা, রাজাপাড়াসহ ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন এবং উঠান বৈঠকে মিলিত হন। এ সময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপির সহ সভাপতি সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপি নেতা মফিজুল ইসলাম বাবুলসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ৯টা থেকে নগরীর ১০ ও ১১ নং ওয়ার্ডে ব্যাপক গণসংযোগ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও কুসিক নির্বাচনের দলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরু, জেলা যুবদলের সভাপতি আমীরুজ্জামান আমীর, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আখি, জেলা ছাত্রদল সিনিয়র সহ সভাপতি সাজ্জাদুল কবীর সাজ্জাদ প্রমুখ।
নগরীর ১৬ ও ১৭নং ওয়ার্ডে দিনভর গণসংযোগ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কুমিল্লা নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসিম উদ্দিন, জেলা বিএনপির বন ও পরিবেশ সম্পাদক আতাউর রহমান ছুটি প্রমুখ। এ ছাড়াও নগরীর অন্যান্য ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নেতৃত্বে অন্যান্য টিম গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছে।
নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা বুধবার সকাল ৯টায় নগরীর ২২নং ওয়ার্ড থেকে তার নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। এর আগে তিনি স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সভা করেন। তিনি ২২নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করে দুপুরে প্রচারণা চালান ২৩নং ওয়ার্ডে। এর আগে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে স্বাচিপের একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। এ সময় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মোহসিনউজ্জামান চৌধুরীসহ অন্যান্য স্বাচিপ নেতা উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে আঞ্জুম সুলতানা সীমা গণসংযোগ শুরু করেন ২৪নং ওয়ার্ডে। গণসংযোগে দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগমসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় মহিলা লীগ নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রান ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শ্রী সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সবুর, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী. ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদসহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নেতারা নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন।
শুক্রবার সাক্কুর নির্বাচনী ইশতেহার :
ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু শুক্রবার তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবেন। মনিরুল হক সাক্কুর পিএস মো. কবির বুধবার দুপুরে এ কথা নিশ্চিত করেছের। তিনি জানান, মেয়র সাক্কুর ইশতেহারে কুমিল্লার নগরবাসীর সার্বিক উন্নয়নে এবং নাগরিকদের আধুনিক সুযোগ সুবিধা প্রদান করে কিভাবে কুমিল্লা সিটিকে দেশের একটি মডেল সিটি হিসেবে তৈরি করা যায় তার একটি রুপ রেখা তিনি প্রদান করবেন।
মেয়র প্রার্থী সাক্কুর চেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী সামাদ ধনী বেশি :
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন, ১৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা। কিন্তু নগরীর ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী একেএম সামাদ সাগর বছরে তার আয় দেখিয়েছেন ৬৯ লাখ টাকা। যা এবারের কুসিক নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলরসহ ১৫৪ জন প্রার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ আয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর