হারিয়ে যাচ্ছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণীরা

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্রায় ৩ শতাধিক বন্যপ্রাণীদের বসবাস। এসব প্রাণীই মূলতঃ সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের সৌন্দর্য্যকে বাঁচিয়ে রাখছে। কিন্তু নানা কারণে এদের মধ্যে ২০ প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হতে চলেছে।

বিলুপ্ত প্রায় এসব প্রানীদেরকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য দাবী জানিয়েছেন এখানে আসা পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বর্তমানে উল্লেখযোগ্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে ১৪৯ প্রজাতির পাখি, ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ১৮ প্রজাতির সরিসৃপ। রয়েছে চিতা বাঘ, মেছো বাঘ, লজ্জাবতী বানর, মায়া হরিণ, উল্লুক, ময়না পাখি, ঘুঘু পাখি, টিয়া পাখি ও ঈগল পাখি।

উল্লেখযোগ্য বন্যপ্রাণীদের কয়েকটি প্রজাতি কালের আর্বতনে বিভিন্ন কারণে হারিয়ে গেছে।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের পাশের টিপড়া পল্লীর বাসিন্দাদের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, এক সময় ওই উদ্যান বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম ছিল। এখন আর সে দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না। বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণী গুলো রক্ষার জন্য বর্তমানে বন বিভাগের কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না।

বিলুপ্ত হওয়ার কারণ সম্পর্কে সাতছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় উদ্যানের পাশের বিভিন্ন চা বাগানগুলোতে ক্ষতিকর কীটনাশক ও ওষুধ প্রয়োগ এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিরাপদ অভয়াশ্রম না থাকাই এসব বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া শীতকালে সাতছড়ির ৭টি ছড়ার সব ক’টিই শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়। ফলে বন্যপ্রাণীরা পানির তৃষ্ণায় দিক-বিদিক ছুটাছুটি করে। কখনও কখনও ওইসব গ্রামাঞ্চলে গিয়ে পুকুরে পানির তৃষ্ণা নিবারণ করতে গেলে এসব প্রাণী মানুষের কবলে পড়ে প্রাণ হারায়।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান বন্যপ্রাণীদের অভয়াশ্রম

সিলেট বিভাগে যে কয়টি জাতীয় উদ্যান রয়েছে এদের মধ্যে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান অন্যতম। বন জঙ্গলে ভরপুর এ উদ্যানের পাখিদের কলকাকলীত যে কোন মানুষকেই আকৃষ্ট করে তুলে।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে যেন সৌন্দর্য্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি। ২ শত ৩৪ হেক্টর সীমানা নিয়ে সাতছড়ি। এর পূর্ব নাম ছিল রঘুনন্দন হিল রির্জাভ ফরেষ্ট।

১৯৭৪ সালের বন্য প্রানী সংরক্ষণ-সংশোধন আইন অনুযায়ী ২০০৫ সালে সাতছড়িকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পুরো সাতছড়িই যেন সবুজের সমারোহ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর