রাষ্ট্রপতির প্রেমপত্র এবং বিয়ে দর্শন

বিয়ে এবং রাজনীতি বিষয়ে ‘সময়মত সবকিছু করতে না পারলে মজা থাকেনা’ বলে এক মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনে চ্যান্সেলর এর বক্তব্যে তিনি

বক্তব্য বর্তমান ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে মূল্যায়ন করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি নিজের বিয়ের প্রসঙ্গ আনেন। তিনি বলেন, ‘কী আর বলব! সব কাজ একটু অগ্রিম করে ফেলছি তো। ম্যাট্রিক পাস করে, ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষা দিয়াই, ইনশাল্লাহ বিয়ার কাম কইরা লাইছি’।

আজকাল প্রযুক্তির স্পর্শে মানুষের জীবনে গতি আসলেও আবেগ, অনুভূতি কমে গেছে বলেও তিনি দুঃখ করেন রাষ্ট্রপতি। বদলে যাওয়া জীবনের উদাহরণ দিতে গিয়ে প্রেমপত্র লেখার চর্চা বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলেও আফসোস করেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমার গলাটা একটু বইসা গেছে গা। না হলে আরও অনেক কিছু বলতাম। ভবিষ্যতে যদি আপনাদের মাঝে আসলে আরও অনেক কিছু বলব।’

রাষ্ট্রপতি, ‘মনের কথা সব কিছু লেখা বড় কঠিন। আগে আমরা প্রেমপত্র লিখতাম। বিভিন্ন বই পত্র ঘেঁটে বিভিন্ন কোটেশন নিয়ে আমরা প্রেমপত্র লিখতাম। এখন তো প্রেমপত্রও উঠে গেছে। কারণ এখন সব মেসেজ। মেসেজ পাঠাই দিলেই সব কিছুই শেষ। প্রেমপত্র লেখাও একটি সাহিত্য। একটা আর্ট ছিল, শেষ হয়ে গেছে’।

সময়মত বিয়ের প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কেউ কেউ বলতে পারেন, ২৫ বছরে বিয়া না করলেও চলে। যেমন দুই বৎসর আগে আমাদের রেলমন্ত্রী বিয়ে করেছেন ৬৫ বছর বয়সে। এখন কেউ যদি এক্সাম্পল দেয় যে আমাদের রেলমন্ত্রী তো ৬৫ বছরে তো বিয়ে করসে। করসে, এটাও ঠিক, তবে এটা রেয়ার কেইস’।

নিজের ছাত্রজীবনে রাজনৈতিক কারণে কারাবরণ করা এবং এ কারণে পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়ার ইতিহাস বর্ণনা করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘আমার অবশ্য ইতিহাস সবই অন্যরকম। ৬১ সালে ম্যাট্রিক পাস কইরা, ৬৫ সালে বিএ পাস করার কথা ছিল। সেই বিএ পাস করলাম ৬৮ সালে, না ৬৯ সালে। অর্থাৎ চার বছরের জায়গায় আট বছরই লাইগা গেল। ছাত্র খারাপ ছিলাম ঠিকই , শুধু ছাত্র খারাপ ছিলাম এটা বললে হবে না। দুইবার পরীক্ষা দিতে পারি নাই। জেলে বন্দী থাকতে হইয়াছে।’

আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এইডারও একটা কাহিনি আছে। যখন নাকি বিএ পাস করতামই পারি না, তখন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব একই কথা যে বিএ পাস কবে হইব, কী ব্যাপার-স্যাপার। উত্তর দিতে দিতে আর ভালো লাগে না। তখন একটা চিন্তা কইরা ফাললাম। তখন আইয়ুব খান, মোনায়েম খাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতাসি। আন্দোলন তুঙ্গে। পরে এক জনসভার মধ্যে…কিশোরগঞ্জে, বিরাট জনসভা, কিশোরগঞ্জ স্টেডিয়ামে। সেখানে ৭০-৮০ হাজার মানুষের মাঝে ঘোষণা করলাম, যতদিন পর্যন্ত আইয়ুব খান, মোনায়েম খাঁ কে উৎখাত করতে পারব না, ততদিন আমি বিএ পাস করব না। সবাই করতালি দিল। যাক একটা সার্টিফিকেট পাইয়া গেলাম। এরপরে বিএ পাস কবে হইব, এইতা নিয়া আর কোন কথা বলেনাই’।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর