বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো দেশেরই মৈত্রী চুক্তি নেই

বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো দেশেরই মৈত্রী চুক্তি নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, আক্ষরিক অর্থে মৈত্রী চুক্তি বলতে বুঝানো হয়ে থাকে ‘ট্রিটি অব ফেন্ডশিপ’। সেই অর্থে বাংলাদেশের কোনো মৈত্রী চুক্তি নেই।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে ১৯৭২ সালে ২৫ বছর মেয়াদী বন্ধুত্ব ও মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যা ১৯৯৭ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। পরবর্তীতে এই চুক্তিটি আর নবায়ন করা হয়নি।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ’র প্রশ্নের লিখিত জবাবে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নমূলক চুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের সময় একটি সহযোগিতা ও উন্নয়নের রূপরেখা চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাণিজ্য, যোগাযোগ, পানিসম্পদ, বিদ্যুৎ ইত্যাদি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর প্রশ্নোত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বের প্রেক্ষিতে পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন বহুমাত্রিক। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করে আসছে। এ কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে আমাদের সাহসী উদ্যোগ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

ভারতীয় ভিসা সহজীকরণ নিয়ে সিলেট-৫ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদনপত্র জমা দেওয়া ও ভিসা প্রাপ্তিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের অসুবিধার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোচরে আনা হয়েছে। এটি আমাদের উচ্চ পর্যায় থেকে ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জোরালোভাবে বারংবার উত্থাপন করা হয়েছে।

তিনি জানান, ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে উভয় দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভিসা প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ভিসা প্রক্রিয়াকরণে কিছু সময় লাগে মর্মে ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ অসুবিধা নিরসনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে আসছে।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নোত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশের ৩০টি জেলার সঙ্গে ভারতের যৌথ সীমান্ত বিদ্যমান। সামাজিক যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন, অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা প্রভৃতি নানাবিধ কারণে উভয় দেশের মানুষের মধ্যে চলাচল রয়েছে।

বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে ২ হাজার ৩২৭ বাংলাদেশি নাগরিক আটক রয়েছেন। যাদের অধিকাংশই অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযুক্ত বলেও জানান আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর