সাকিব বোল্ড শিশির

শিশির বলতেই পারেন ” ধন্যবাদ জুকারবার্গ, ধন্যবাদ তোমার ক্যালমাতেই আমি পাইলাম, আমি তাহাকে পাইলাম । তা শিশির-সাকিব কে নিয়ে লিখতে গিয়ে হঠ্যাত জুকারবার্গ কে নিয়ে টানাটানি কেন ?

কারন আছে বৈকি। জুকারবার্গের এই ফেসবুক কেরামতির জন্য ই যে আজ দুজনে চার হাত যুগলবন্দি করে এক সাথে গেয়ে উঠতে পারেন ” মোরা আর জনমে এক এক ছিলাম “। এই ফেসবুক না থাকলে যে আজ শিশির-সাকিবের পরিচয় ই হতোনা ! বিয়েতো বহু দূর !

তাই তো ফেইসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকার বার্গ কে সাকিব’স ডাউনে ডিনারের আমন্ত্রন করলেই বা কি দোষ। সাকিব ছিলেন বিশ্বসেরা সাকিব কে দিয়ে বিশ্ব চিনেছে বাংলাদেশ কে আর আমরা চিনেছি উম্মে আহম্মেদ শিশির কে। বাঙ্গালি যুবক সাকিব আল হাসান যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো লাখ কোটি তুরুনি তাদের সবাই কে ছ্যাকা দিয়ে শিশির কে নিজের করে নিলেন।

বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের যার বলের স্পিন যাদুতে ঘোল পানি খাই আর সে কিনা শেষ পর্যন্ত আমেরিকা প্রবাসী শিশির নামক এক বাঙ্গালি তরুনীর মায়াবী স্পিনে ঘায়েল হয়ে নিজের ব্যাচেলর নামক উইকেট টি হারালেন ?

সাকিব বোল্ড শিশির। তাদের পরিচয় পর্ব যেন রুপকথার গল্পকেও হার মানায়। এ যেন এক রুপকথার দেশের গল্প সে গল্পের নায়ক নায়িকা সাকিব শিশির। রুপকথার মত’ই শুরু হয় তাদের শুরুটা। সাকিব থাকেন বাংলাদেশে, শিশির সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে মার্কিন মুলুকে।

কিন্তু ভাবতে নিশ্চয় অবাক লাগে তাহলে তাদের পরিচয় কি করে হলো। তারপর প্রেম এরপর প্রেম থেকে বিবাহ। শুরুতেই তো বলেছি ধন্যবাদ জুকারবার্গ। সেই জুকার বার্গের দুনিয়া ফেসবুক থাকতে এই বর্তমান যুগে প্রেম আটকে থাকবে এ কেমন কথা?

দেশের সবচেয়ে বড় ফেইসবুক সেলেব্রেটি সাকিব আল হাসান। যার আইডিতে পরে থাকতো শত শত ফেন্ড রিকুয়েস্ট যার ফেইসবুক আইডিতে রয়েছে লাখ ফলোয়ার, যে কোন পোস্টের কমেন্টে হাজার হাজার মেয়েদের আই লাভ উই বলা।

সেই সেলিব্রেটি মানুষ টি কি না দেখে দেখে শিশির আইডি কে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দেওয়া। সাকিব প্রথমে শিশির আইডি কে ফেক মনে করেও ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। শিশির তো রিকুয়েস্ট দেখে অবাক কোটি কোটি নারীর স্বপ্নের পুরুষ কিনা বেঁছে বেঁছে তাকেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে? এ নিশ্চয় ফেক আইডি। খেলোয়াড়দের নামে কত ফেক আইডি আছে ! আর এতো বিশ্বসেরা দেশসেরা সেলিব্রেটি সাকিব আল হাসান।

অনেক ভেবে শিশির রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট হয়। এরপর বাকীটা তো ইতিহাস হয়ে গেলো। প্রথম প্রথম তাদের একটু চ্যাটিং আর ফেইসবুকে একে অপরের খোজ খবর নেওয়া। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা যে তাদের সাত পাকে বাদবে বলেই পরিচয় করা তাই সম্পর্ক কি এখানে থেমে থাকবে এটা কি করে হয়…?

মাঠেও শিশির মাঠের বাইরেও শিশির। সন্ধার সময়ে

মাঠের কুয়াশা ঘাসের শিশির কে সবসময় হার মানিয়ে বিখ্যাত বিখ্যাত বোলারদের মেরে রান করা সাকিব এবার যেনো মার্কিন মুলক আমেরিকা প্রবাসী বাঙ্গালী কন্যা শিশির কে জয় করে ফেলে। তাই সম্পর্কটা শুধু ফেসবুকে আপলোড করা ছবি- স্ট্যাটাসে লাইক দেয়ার ভিতরেই থাকেনি, তত দিনে বাঙ্গালি তারকা জোয়ান সাকিবের মনের ওয়ালেও যে লাইক দিয়ে ফেলেছেন আমেরিকা প্রবাসী বাঙ্গালি কন্যা শিশির।

মাঠেও শিশির মাঠের বাইরেও শিশির। সাকিব যেনো তখন ধীরে ধীরে শিশির কে জয় করার মন্ত্র পাঠ করছে। সাকিব মাঠেও যেমন দুর্দান্ত তেমনি মাঠের পারফরম্যান্সের মত’ই প্রেমের ক্রিজেও টগবগিয়ে ছুটল সাকিব-শিশিরের প্রেমের ঘোড়া।

আহা কি প্রেম সে প্রেম কি শুধু ফেইসবুকে থাকেনি স্কাইপ আর ফোনে কথা বলা। সবকিছু মিলিয়ে যেনো তাদের ভালবাসা বাড়তেই থাকে যার ফলসুরপ কাউন্টি খেলতে সাকিব যখন ইংল্যান্ডে, আমেরিকা থেকে সাকিবের ভালবাসার টানে ইংল্যান্ডে ছুটে এলেন বঙ্গ ললনা উম্মে আহম্মেদ শিশির।

দুজনের দেখা হলো, চোখে চোখে কথা হল, এক সাথে ঘর বাঁধার স্বপ্নের বীজ ও বোনা হল। সে বীজের নাম সাকিব শিশির। লাইলি মজনু, শিরি ফরহাদ, দেবদাস পারু, তাদের প্রেম গুলো যেমন ইতিহাস হয়ে থাকবে তেমনি বর্তমান সময়ের আলোচিত জুটি সাকিব শিশির বর্তমান প্রেমিকদের কাছে আইডল।

এতো বড় সেলিব্রেটি এত বড় মাপের খেলোয়ার সে কি পারবে তার ভালবাসা কে জয় করতে, সাকিব চাইলে সব সম্ভব তার প্রমান আমরা অনেক আগে পেয়েছি। হঠ্যাৎ করেই একদিন সাকিব জানিয়ে দিলেন ১২/১২/১২ বিখ্যাত তারিখে মার্কিন প্রবাসী উম্মে আহম্মেদ শিশিরের সাথে ঘাট ছারা বাধবে।

নিউজ টি যখন সংবাদ পত্রিকা তে আসে কোটি কোটি ললনাদের মনের ভিতর যেনো এক অসম্ভব ঝড় সৃষ্টি হয়। যে সাকিব কে নিয়ে এতোদিন স্বপ্ন দেখেছে সে সাকিব আজ অন্য একজনের। সাকিবেই জানিয়ে দিলেন ১২।১২। ১২ তে শিশিরে সিক্ত হচ্ছেন তিনি। বিয়ের আগে কত রকমের কথা, নানান রকমের বানোয়াট কিছু নিউজ প্রকাশ করে এদেশের নিউজ পেপার কিন্তু সব বাধা কে সকল সমোলচনা কে পিছনে ফেলে ১২/১২/১২ তে নারানগন্জের কন্যা শিশির কে নিজের করে নেয়।

রচিত হয় আরেকটি সফল ভালবাসার জয় সাকিবের জয় হয় ভালবাসার। মার্কিন প্রবাসী শিশির ছোট থেকেই বাবা মায়ের সাথে সেখানেই থাকতো ক্রিকেট টা তেমন ভালো বুঝতেন না, তবে স্বামী যখন ক্রিকেটার না বুঝলেও বুঝতে হবে তাই বিপিএল চলাকালীন সময়ে স্টেডিয়ামের ভিআইপি বক্সে নিয়মিত দেখা যেত গালে হাত দিয়ে বসে থাকা হ্যাংলা একটি মেয়ে শিশির কে।

সাকিব শুরু করলেন তার দিত্বীয় ইনিংস। তাদের ভালবাসা শুধু এখানে থেমে থাকেনি। আন রোমান্টিক সাকিব যেনো বিয়ের পর রোমান্টিক হয়ে গেলো। বিয়ের পর প্রায় প্রতি দিনেই বাসায় ফেরার পথে শিশিরের জন্য ফুল কিনে আনা, সেঞ্চুরীর পর লাভ চিহ্ন একে শিশিরকে ডেডিকেট করা, খেলার মাঝে বিরতির ফাঁকে বৌকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া, যেখানেই যান সেখানেই শিশিরকে বগলদাবা করে ঘুরতে যাওয়া, বর্তমান যুগের ছেলেরা যেনো সাকিব কে দেখে ভালবাসায় আরো রোমান্টিক হয়েছে।

তারকা না হয়েও সাকিবের কল্যানে শিশিরের তারকা খ্যাতি পাওয়া, দিনে ৪০ বার শিশিরকে লাভ ইউ বলা যেন অন্য এক আবেগী সাকিব। বন্ধুরাতো তো দুষ্টামি করে নামেই দিয়েছে ” বৌ পাগলা সাকিব । শুধু কি তাই?

শিশিরের দাবী মেনে তাকে কসমেটিকসের দোকান করে দিয়েছেন সাকিব। ক্যারিবীয়ান সফরে গিয়ে সাকিব-শিশির, তামিম-আয়েশা জুটি মেতে ছিলেন দুষ্টামি করে আম চুরীর অভিযানেও। অষ্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে গিয়ে দুজনে তুলে ছিলেন সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাথে অন্তরঙ্গ কিছু ছবি, গাড়ীতে ক্যামেরা রেখে বাসায় চলে আসায় সেই ছবি গুলো হারিয়ে গেছে। সাকিব কথা দিয়েছেন ” শিশিরের জন্য হলেও আরেকবার অষ্ট্রেলিয়ায় গিয়ে সেইসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা জায়গাগুলো তে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলব ।

সাকিবের সাথে বিভিন্ন বিঙ্গাপনে শুটিং করা। আহা’ এ যেনো আরেক এক সাকিব যারা নাম সাকিব শিশির জুটি। ১২/১২/১২ তে বিয়ের পর আজ ১২/১২/১৬ তে ৪ বছর পেরিয়ে গিয়ে এখন ও ভালোবাসার ক্রিজে ব্যাটিং করে নট আউট এই জুটি। শিশির যেনো সাকিবের জন্য আশির্বাদ হয়েই এসেছেন। বিয়ের পর প্রথম বলেই ছক্কা মেরে জানান দেন ক্রিকেটের আইকন সাকিব। সাকিব-শিশিরের “তাদের এই মধুর ভালবাসার মাঝে ” তাদের ভালবাসার ভাগ নিতে গত ০৯/১১/১৫ তারিখে যোগ হলেন তাদের রাজকন্যা ” মানে তাদের প্রথম

কন্যা সন্তান , আলাইনা। বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাকিব যেমন রাজার বেশে এসেছেন তেমনি সাকিব কন্যা আলাইনা রাজকন্যার বেশে তার ঘর আলোকিত করেছে। এক বছর বয়স আলাইনা হাসান অব্রি ইতি মধ্যে বাবার মত সেও ঝড় তুলছে এই ঝড় ব্যাট বলের না, এই ঝড় সেলছি ঝড়। বাবা মায়ের সাথে সেলফি তুলার সময় তার চাহনি, তার মুখ বাকানোর স্টাইল, গেটাপ সব যেনো এক অন্যরকম দেখার মত।

সদ্য শেষ হওয়া বিপিএল ফাইনাল ম্যাচে সাকিবের সাথে শিরোপা নিতে মাঠে আসেন সাকিব কন্যা আলাইনা চ্যাম্পিয়ন বাবার সাথে শিরোপায় হাত রেখে বিপিএল ফাইনাল কে যেনো করে রাখে স্বরনীয়। সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের সেরা জুটি তারা! তাদের কন্যা সন্তান কে নিয়ে আছেন অনেক সুখে।

আজ তাদের চুথর্ত বিবাহ বছর। বিবাহের চারটি বছর পার হয়ে গেছে তাদের সম্পর্ক টা হয়ে গেলো এক ধরনের রেকর্ডময় কেননা সেটা ভাচুয়াল ফেইসবুক থেকে শুরু। সারাজীবন সুখে থাকুক এই জুটি। অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো সাকিব ভাই এবং শিশির ভাবির জন্যে। সুখে থাক তোমরা! তোমার পারফরম্যান্সে সুখে রাখ আমার মত কোটি সাকিবিয়ানদের।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর