মোনায়েম খানের বাড়িতে হাসপাতাল করতে আগ্রহী: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও যুদ্ধাপরাধী মোনায়েম খানের বাড়িতে হাসপাতাল করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তবে তা নির্ভর করছে সরকারের ওপর।

মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন সেমিনার হলে কনফারেন্সে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ আগ্রহের কথা জানান। নেগলেক্টেড ট্রপিকাল ডিজিজেস অ্যান্ড লেপরোজি রিসার্চ (এনটিডি অ্যান্ড এলআর) বিষয়ক এ আয়োজন করে দি লেপরোজি মিশন ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশ। কনফারেন্সে কুষ্ঠ ও এনটিডি নিয়ে গবেষণালব্ধ ফলাফলগুলো উপস্থাপন করা হয়।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘পেপারে দেখলাম রাজাকার মোনায়েম খানের বাড়িটায় হাসপাতাল করার দাবি উঠেছে। ভাল কথা, বাড়িটা যদি সরকার আমাকে দেয় তাহলে আমি হাসপাতাল করে দেব, ইনশা আল্লাহ।’

উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে স্বাধীনতাবিরোধী মোনায়েম খানের দখলকৃত জমি বাজেয়াপ্তের জোর দাবি উঠেছে। সম্প্রতি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সমিতি, প্রজন্ম ৭১, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চা সম্মিলিতভাবে মোনায়েম খানের দখলকৃত জমি বাজেয়াপ্তের দাবিতে মানববন্ধন করে। এতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক সংহতি প্রকাশ করেন।

কুষ্ঠ ও উষ্ণমণ্ডলীয় অবহেলিত রোগগুলো নিয়ে গবেষণা কনফারেন্সে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রথমে আমাদের সিন্ধান্ত নিতে হবে, কেউ কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে দূরে ঠেলে দেওয়া যাবে না। আমাদের ওষুধ আছে, নিরাময় করার পদ্ধতি আছে। কুষ্ঠ রোগ নিরাময়ের জন্য আমাদের অবশ্য যা যা করণীয়, তা আমরা করব।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘রোগ নিরাময়ে সরকারের পাশাপাশি এনজিওগুলো কাজ করছে। এজন্য আমি আনন্দিত। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অনেক রোগই আমরা বাংলাদেশে আসতে দেইনি। আল্লাহর রহমতে আমরা সতর্ক ছিলাম বলে জিকাও আসতে পারেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘রোগমুক্ত করার জন্য আমরা সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অনেক রোগ নিরাময়ের জন্য আমাদের অনেকগুলো হেলথ কমিউনিটি কাজ করছে। অনেকেই জানেন একটি রাজধানীতে একটি আধুনিক নিউরো হাসপাতাল আছে। যেখানে আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছে। কিন্তু সবাই চলে যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মুগদায় আমরা একটা ৫০০ শয্যার হাসপাতাল করেছি। সবাইকে ঢাকা মেডিক্যালে বা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে যেতে হবে কেন?’

কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর (ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড লাইন ডাইরেক্টর সিডিসি) ডা. মো. আবদুস সবুর। এ ছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিপসম এর অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সাবেরা সুলতানা। সভাপতিত্ব করেন দি লেপরোজি মিশন ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডাইরেক্ট মি. শলোমন সুমন হালদার।

কনফারেন্স শেষে কুষ্ঠবিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ ও সম্প্রচারের জন্য প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ছয়জন সাংবাদিককে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। উপস্থিত ছিলেন একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর