ক্ষমতায় রাখার নির্বাচনে যাবে না বিএনপি

কম সময়ে মধ্যেও যদি নির্বাচন দেয়া বিএনপি তাতে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে। তবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার নির্বাচনে অংশ নিবে না দলটি। নির্বাচনের আগে জনগণকে ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে। জনগণ যাকে ভোটে দিয়ে সে ক্ষমতায় আসবে। এমনটাই জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় পূর্বপশ্চিমকে বলেন, দেশে যদি আগামীকাল জাতীয় নির্বাচন হয় সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মত প্রস্তুতি রয়েছে বিএনপির। বিএনপি পাঁচ বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলো এবং আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য এটি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। জাতীয় নির্বাচন যত অল্প সময় দেওয়া হোক না কেন তার জন্য সদা প্রস্তত রয়েছে বিএনপি। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক ও নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দুরাস্থার মধ্যে গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। আর সে গণতন্ত্র রক্ষা করা বিএনপির দায়িত্ব। বিএনপি আমরা যে কোন মুহুর্তে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। তবে ৫ জানুয়ারির মত আরেকটি ভোটারবিহীন কুকুর মার্কা নির্বাচনের মাদ্যমে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার নির্বাচনে যাব না।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষে সব দলের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। আমরা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন চাই। রকিব মার্কা কমিশন চাই না। সরকারের সন্তুষ্টি না করে জনগণকে সন্তুষ্ঠি করতে হবে। রকিব মার্কা কমিশন গঠন করে ৫ জানুয়ারির মতো প্রশাসনিক সহায়তায় সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভোটের বাক্সে সিল মেরে ভরে ফেলার মহড়ার নির্বাচনে বিএনপি যাওয়ার প্রশ্ন আসে না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী পূর্বপশ্চিমকে বলেন, জাতীয় নির্বাচন জনগণের দাবি। বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকারসহ কোন নির্বাচনই সুষ্ঠ হয়নি। সবগুলোই রক্তাক্ত, কেরে নেয়া, দখল করা নির্বাচন হয়েছে। বিএনপি সরকার পরিচালনাকারী ও আন্দোলন কারী দল। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা চাপ ও কাজ করবো। আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে। অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন হলে বিএনপি অংশ নিবে এবং ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সাংগঠনিক ভিত্তি বিএনপির আছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে তুলতে তৎপর দলের হাইকমান্ড। সাংগঠনিক বিষয়ে অতীতের ভুলত্রুটি সংশোধন করে এবার সর্বস্তরে দল গুছিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে যারা প্রত্যাশিত পদ পাননি তাদের পদ দেয়ার পাশাপাশি সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ের সব কমিটি পুনর্গঠন করছে দলটি। এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ক’জন সিনিয়র নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই তারা নেত্রীর কার্যক্রম করছেন।

দলের হাইকমান্ডের দিকনির্দেশনা অনুসারে সারাদেশের মহানগর, জেলা, উপজেলা ও এর অধীন অন্যান্য ইউনিটকে নতুন নেতৃত্বে ঢেলে সাজানোর কাজ চলছে। অনেক স্থানে স্থানীয়ভাবে কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন চলছে। যার তদারকি করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান।

নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বিএনপির ক’টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিও ঘোষণার অপোয় রয়েছে। মূলত নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়েই এসব কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান বিএনপির নেতারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংগঠনের কার্যক্রম ও কমিটি পুনর্গঠন চলমান একটি প্রক্রিয়া। এটি চলছে। আমরা সংগঠন গোছানোর কাজ করছি। নির্বাচনের জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছি। সামনে আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতিও চলছে। বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নয়, জোর করে মতায় বসে আছে। যাদের কোন জনগণের সমার্থন নেই।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর