কেরির দর্শন মিললেও চীনা প্রেসিডেন্টের চেহারা দেখেনি জাপা

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির দর্শন মিললেও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মুখদর্শনই ঘটেনি জাতীয় পার্টির। দলটির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ সংসদের বিরোধী দলের নেতা। রাষ্ট্রীয় অতিথিরা বাংলাদেশ সফরে এল সরকারের সঙ্গে দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে নানামুখী বৈঠক, চুক্তি সম্পাদনের বাইরে রেওয়াজ অনুযায়ী বিরোধীদলের নেতার সঙ্গেও সৌজন্য বৈঠক করেন।

কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেশে-বিদেশে কেউই জাতীয় পার্টিকে বিরোধীদল মনে করছে না। পর্যবেক্ষকসহ রাজনৈতিক অঙ্গনই নয়, খোদ জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে এমন অভিমত প্রকাশ্য রূপ নিচ্ছে। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে-জাতীয় পার্টির অবস্থান কোথায়?

সংসদে বিরোধীদলের আসনে বসেও কপালে সেই মর্যাদা তাদের জুটছে না কি দেশে, কি বিদেশে। জন কেরি ব্যস্ততম সফরে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিটের বৈঠক হয়। কিন্তু বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের হয়ে যারা বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করেছিলেন তারা ব্যর্থ হন। ধানমণ্ডিতে বিশিষ্ট নাগরিকদের সভায় সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামকে দিয়ে ভিজিটিং কার্ড পাঠিয়ে জন কেরির সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন।

সর্বশেষ চীনের প্রেসিডেন্ট ২২ ঘন্টার ঢাকা সফরকালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লা মেরিডিয়ান হোটেলে প্রতিনিধি দল নিয়ে ৪০ মিনিটের বৈঠক করলেও বিরোধীদলের নেতা রওশন এরশাদ মুখদর্শনের সুযোগ পাননি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ-হতাশা।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট এরশাদের ভাই ও কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের একটি নিউজ পোর্টালের কাছে এ নিয়ে সোজাসাপটা কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন-‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও তার প্রতিনিধি দল সরকারের সঙ্গে বৈঠক করবে এটা স্বাভাবিক। পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করে। কিন্তু জাপার সঙ্গে জিনপিং এর বৈঠক হয়নি, না চেয়ারম্যানের না বিরোধী দলীয় নেতার। ফলে, এটি পরিষ্কার বিরোধীদল হিসেবে তাদের উপেক্ষা করা হয়েছে। এই গুরুত্বহীনতা দল হিসেবে জাপার অবনমন।’

জিএম কাদের মনে করেন, ‘একটি বিদেশি রাষ্ট্র তার বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি সম্ভাব্য শক্তিশালী দলগুলোর সঙ্গেও কথা বলে। বিনিয়োগের নিশ্চয়তা বাড়াতেই এ ধরনের বৈঠক করা হয়। কিন্তু, এবার চীনের প্রেসিডেন্ট বিরোধীদলের সঙ্গে বৈঠক করেনি। এর মানে হচ্ছে দল হিসেবে জাপা গুরুত্ব হারাচ্ছে। বিদেশিদের কাছে গুরুত্ব হারালে, দেশেও তো এমন দলের দাম নেই। এটি মাত্র একটি বিভাগের ব্যর্থতা নয়, সামগ্রিকভাবে বিচার করতে হবে। এর থেকে জাপাকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। না হলে দলকে খারাপ রেজাল্ট দেখতে হবে। আগামীতেও কোনও বিদেশি ডেলিগেটও জাপার সঙ্গে বসতে চাইবে না।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর