আমু-তোফায়েল-সুরঞ্জিতসহ নেতাদের নিয়ে যত আলোচনা

আওয়ামী লীগের প্রবীণ রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ নেতাদের নিয়ে দলের কাউন্সিল ঘিরে তুমুল জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। বিগত দুইটি কাউন্সিলে ওয়ান-ইলেভেনের ভূমিকার কারণে তাদের প্রেসিডিয়াম থেকে বাদ দিয়ে উপদেষ্টামণ্ডলীতে পাঠিয়ে দেওয়া হলেও এবার পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে পার্টির অভ্যন্তরে জোর আলোচনা চলছে । অর্থাৎ এবার তারা আবারো প্রেসিডিয়ামে ঠাই পাচ্ছেন।

দলের যারা এটি বিশ্বাস করেন তারা বলছেন, আগামী দিনের উন্নয়ন ও ঐক্যের রাজনীতির যে পতাকা শেখ হাসিনা উড়িয়েছেন সেই পতাকাতলে সবাইকে একত্রিত করার ইচ্ছা থেকেই তাদের প্রেসিডিয়ামে নেওয়া হচ্ছে।

ইতিমধ্যে স্থানীয় নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী হয়েছিলেন তাদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করায় তারা কাউন্সিলর ও ডেলিগেট হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। ওয়ান-ইলেভেনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে মাঠে নামায় ২০০৯ সালের কাউন্সিলে প্রেসিডিয়াম থেকে বাদ পড়েছিলেন এই তিন নেতা ও তাদের অনুসারীরা। এই তিনজনকে উপদেষ্টা পরিষদ ও পরবর্তীতে মন্ত্রীসভায় ঠাই দিয়ে পার্লামেন্টারি বোর্ডেও নিয়ে আসেন শেখ হাসিনা। জীবনের পড়ন্তবেলায় অসুস্থ সুরঞ্জিত মন্ত্রীসভায়ও নেই। বাকি দুইজন মন্ত্রীসভায় আছেন। তিনজনকে প্রেসিডিয়ামে নেওয়ার সম্ভবানায় বেশি।

কিন্তু দলের অভ্যন্তরে যারা এটি বিশ্বাস করেন না তাদের বক্তব্য হচ্ছে- যারা এমনটি বিশ্বাস করেন তাদের হিসেবে ভুল রয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা তাদের সংসদে, মন্ত্রীসভা ও উপদেষ্টামণ্ডলীতে যে ঠাই দিয়েছেন তাই অনেক। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তাদের সঙ্গে থাকায় শেষ হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনের পর এদের জন্য রাজনৈতিক অবসর অপেক্ষা করছে। তারুণ্যের স্লোগান উঠে গেছে শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্যের পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে।

দলের বর্তমান প্রেসিডিয়ামের মধ্যে মৃত্যু্জনিত কারণে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন এবং বহিস্কারের জন্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর জায়গা শূন্য আছে। অন্যদিকে নূহ-উল আলম লেলিন ও সাহারা খাতুন এবার প্রেসিডিয়াম থেকে বাদ পড়ছেন। এক্ষেত্রে চার জনের জায়গায় আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান এবং ডা. দীপু মনির প্রেসিডিয়ামে আসার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।

অন্যদিকে ঐ তিন প্রবীণ নেতার দুয়ার রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। দলের আরেক অংশ বলছেন, কে সাধারণ সম্পাদক হবেন, কারা প্রেসিডিয়ামে থাকবেন, কারা ওয়ার্কি কমিটি থেকে বাদ পড়বেন ও যুক্ত হবেন- সব জানেন শেখ হাসিনা। তিনি এখনো চুপচাপ। তার কাছ থেকে কেউ কোনো আভাস পাচ্ছেন না। শেষ পর্যন্ত কাউন্সিলে কি ঘটে তার ঘোষণা না আসা পর্যন্ত সবাইকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

বিগত ২ কাউন্সিলে দলের ওয়ার্কি কমিটি থেকে বাদ পড়া বগুড়ার আব্দুল মান্নান এমপি ও মুকুল বোস এবার কমিটিতে ঠাই পেতে পারেন। নতুনদের মধ্যে মেহের আফরোজ চুমকি, সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, তারানা হালিম, নসরুল হামিদ বিপু, শাহরিয়ার আলম, জুনায়েদ আহমেদ পলক, ইকবালুর রহিম ওয়ার্কি কমিটিতে ঠাই পাচ্ছেন এমনটি প্রায় অনেকের কাছে নিশ্চিত।

এছাড়া নবীবদের মধ্যে ঠাই পাওয়ার সম্ভাবনা যাদের রয়েছে তাদের মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা শাহে আলম, শফী আহমেদ, মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বাহাদুর বেপারী, অজয় কর খোকন, লিয়াকত সিকদার, নজরুল ইসলাম বাবু, মাহমুদুল হাসান রিপন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটনসহ মমতাজ বেগম (শিল্পী), নূরজাহান বেগম মুক্তা, খুজিস্তা নূর ই নাহরীন মুন্নী, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, ডা. নূজহাত চৌধুরী, আজিজুস সামাদ ডন।

এবারের কাউন্সিলে পদোন্নতির আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন যারা তারা হলেন, বীর বাহাদুর এমপি, আসাদুজ্জামান নূর এমপি, অসীম কুমার উকিল, মির্জা আজম, বাহাউদ্দিন নাসিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মৃণাল কান্তি দাস, একেএম এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দী, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাছিম।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর