পানিতে ২ ঘণ্টা হেঁটে মেয়েকে হাসপাতালে নিলেন বাবা

সন্তানের বিপদে বাবা-মা এমনি দিশেহারা হয়। ছুটে যায় দূর-দূরান্তে। বাবা-মা কোথায়ও কমতি রাখে না তাদের সন্তানকে বিপদ থেকে ফিরিয়ে আনতে। সন্তানের বিপদে তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অন্ধ্রপ্রদেশে। খবর-সিসিটিভি নিউজ।

ঘরে ছয় মাসের কন্যাশিশু অসুস্থ। বাইরে বন্যার পানি প্রায় গলা সমান। তাই বলে বন্যার পানি দেখে বাবা কি আর ঘরে বসে থাকতে পারেন! কন্যাকে পানি থেকে বাঁচাতে তুলে ধরলেন মাথার ওপর। অনিশ্চিত প্রত্যেকটা পদের ঝুঁকি নিয়ে হাঁটতে থাকলেন বাবা। দুই ঘণ্টা হেঁটে পৌঁছলেন নিকটতম হাসপাতালে।

এই বাবা হলেন পাঙ্গি সাতিয়াবু। ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অন্ধ্রপ্রদেশের কুদামুসারে

গ্রামের অধিবাসী তিনি। বাবার এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে তা নেটিজেনদের হৃদয় স্পর্শ করে।

সম্প্রতি টানা ২০ দিনের বৃষ্টিতে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের অনেক এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। কিন্তু কয়েক দিন ধরেই শিশুকন্যার জ্বর সারছে না। তাই পরিবারের সবার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাবা।

বাবা যখন মেয়েকে মাথার ওপরে তুলে পা পা করে হাসপাতালের দিকে এগোচ্ছেন, তখন সে গভীর ঘুমে। হয়তো বুঝতেই পারেনি- কী অসাধ্য সাধন করছেন তার বাবা।

শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে তিন মাইল দূরে চিন্তাপল্লীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয় শিশুটিকে। গলাসম পানি আর পা ডুবে যাওয়া কাদার মধ্যদিয়ে দুই ঘণ্টা হেঁটে মেয়ের প্রতি ভালোবাসার নজির রাখলেন বাবা!

চিকিৎসক জানিয়েছেন, ভাইরাসজনিত জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল শিশুটি। এখনও সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তবে সে শংকামুক্ত। যেখানে ভারতে কন্যাসন্তান জেনে অনেক ভ্রূন নষ্ট করার ঘটনা ঘটছে, সেখানে এই শিশুকন্যার প্রতি ৩০ বছর বয়সী বাবার এমন ভালোবাসায় উচ্ছ্বসিত সবাই।

একজন লিখেছেন, ধনী হোক গরীব হোক মা-বাবার ভালোবাসা শর্তহীন। আরেকজন এটাকে ‘বীরত্বপূর্ণ, সাহসী ও মহৎ’ কাজ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। কেউ আবার মেয়ের প্রতি বাবার এই মহিমান্বিত ভালোবাসাকে পাহাড়ের মতো দৃঢ় বলে মন্তব্য করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর