ভোটযুদ্ধের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে

নিস্তরঙ্গ রাজনীতিতে ভোটযুদ্ধের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ২২-২৩ অক্টোবর দলের কাউন্সিলসহ সার্বিক প্রস্তুতি শুরু করেছে। বসে নেই বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাম ও ছোট দলগুলোও।

সরকারবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও কাউন্সিলোত্তর কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিএনপির হাই-কমান্ড শেখ হাসিনা সরকারের অধীনেই নির্বাচনে আসার ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে। তবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনকালীন সময়ে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক রদবদলও চাইছে দলটি। নির্বাচন কমিশনের হাতেই যেন সর্বময় ক্ষমতা থাকে সেটিও নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০ আসনে নিজ দলের মন্ত্রী, এমপি ও সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের অবস্থা জানতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বাইরে বেসরকারি সংস্থা দিয়েও জরিপ চালিয়েছেন। ৩০০ আসনের পরিষ্কার চিত্র তিনি নিতে চান। বিএনপিও তাদের মতো করে একই কাজ করছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনের পথ ছেড়ে নির্বাচনের পথেই হাঁটছে বিএনপি। বিদেশিদের কাছেও তাদের একটিই আবদার- অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

এরশাদের জাতীয় পার্টি কাউন্সিলোত্তর কমিটিই গঠন করেনি দলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল দিল্লি সফর করে এসেছে। এরশাদ নিজেও দিল্লি ও যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর জাতীয় পার্টি নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে জোরেশোরে মাঠে নেমেছেন। ক্ষমতাচ্যুতির পর যেসব এলাকায় জাতীয় পার্টি অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে, সেসব এলাকায় আগামীতে ভালো ফলাফল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন এরশাদ। অক্টোবরে বিশাল সমাবেশ করছেন। সিলেট সদর থেকে এরশাদ আগামী নির্বাচন করতে চান।

এছাড়া বামপন্থীও ছোট রাজনৈতিক দলগুলোও নিজেদের মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ইতোমধ্যেই কাউন্সিল করে কমিটি গঠন করেছে। দলটিতে নতুন করে ভাঙনের পরও সবাই যার যার মতো অবস্থান থেকে আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভালো ফলাফলের আশায় কাজ করছে।

ইসলামী এক্যজোট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) মঞ্জু, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), নেজামে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সরকার যদিও বলে আসছেন- আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই, তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আগামী বছরের শেষ দিকেই একাদশতম জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে ভালো ফল ধরে রাখার প্রত্যাশায় আওয়ামী লীগ এমনটা করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চলতি বছরের শেষে দলীয়ভাবে জেলা পরিষদ নির্বাচন এবং আগামী বছরের শুরুতে কুমিল্লা এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দিয়ে দরকার নির্বাচনি পরিবেশ তৈরি করতে চায়। জাতীয় নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নির্বাচন দিয়েই নিজেদের অবস্থানও জানতে চায় আওয়ামী লীগ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর