টানা বসে থাকায় ডায়াবেটিস-ক্যানসার

আপনি কি জানেন, টানা দীর্ঘ সময় বসে থাকলে আক্রান্ত হতে পারেন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এমনকি মারাত্মক ক্যানসারে?

কি, অবাক হচ্ছেন? সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্যই। গবেষকরা বলছেন, যারা দিনে আটঘণ্টা বা তার বেশি সময় বিরতিহীনভাবে বা খুব কম বিরতিতে একভাবে বসে কাজ করেন বা টিভি দেখেন, তাদের শতকরা ৯০ শতাংশেরই রয়েছে টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি।

গবেষণার তথ্যে আরও জানা যায়, যারা দীর্ঘ সময় বসে থাকেন তাদের ৫০ শতাংশ বেশি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিসহ রয়েছে ৫৪ শতাংশ ফুসফুস ক্যানসার, ৬৬ শতাংশ জরায়ু ক্যান্সার ও ৩০ শতাংশ কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা।

মায়ো ক্লিনিক, এরিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ডক্টর জেমস লেভিন জানান, দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে ব্যক্তির মধ্যে বিপাকীয় উপসর্গসহ প্রায় একগুচ্ছ শারীরিক সমস্যার উন্মেষ হয়। উচ্চরক্তচাপ থেকে শুরু করে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া, কোমরসহ অন্যান্য পেশিতে চর্বি জমা হওয়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেয়।

একটানা বসে কাজ করলে শরীরে যে নয়টি ক্ষতি ডেকে আনতে পারে:


মাথা
দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী নালীতে সুষ্ঠুভাবে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। ফলে স্ট্রোক হতে পারে।

ফুসফুস
একটানা আট থেকে ১২ ঘণ্টা বসে থাকলে দিনে দু’বার রক্ত জমাট বা পালমোনারি এমবোলিজম হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আর এই জমাট রক্ত যদি মস্তিষ্কে প্রবাহিত হয় তাহলে ব্যক্তির হতে পারে স্ট্রোক।

বাহু
হাঁটাচলা বা শারীরিক কার্যকলাপ কম হলে উচ্চরক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকখানিই।

পাকস্থলী
একভাবে বসে থাকলে কোলন ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়াও বেশিক্ষণ একভাবে বসে থাকলে পেশির রক্তনালীতে থাকা এনজাইম চর্বি পোড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাই স্বাভাবিক বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হয়।

পায়ের পাতা
স্নায়ুর ওপর দীর্ঘক্ষণ চাপ পড়লে পা অবস হয়ে স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে।

ঘাড়
সারাদিন পা অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকার ফলে পায়ে পানি জমে। হঠাৎ উঠে দাঁড়ানোতে সব জলীয় পদার্থ ঘাড়ে এসে জমা হয়। এ থেকে ঘাড়ে ব্যথা ও নিদ্রাহীনতা হতে পারে।


হৃৎপিণ্ড
যারা বেশিরভাগ সময় বসে থাকেন, তাদের অন্যদের তুলনায় দু’গুণ বেশি হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

পিঠ
টানা বসে থাকায় মেরুদণ্ডে চাপ পড়ে মেরুদণ্ড সংকুচিত হয়ে যেতে পারে।

পা
বসে থাকার ফলে পানি পায়ে এসে জমা হয়, অনেক সময় পা ফুলে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর পর হাঁটাহাটি করলে সেগুলো সারা শরীরে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর