বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরে আসছেন

উন্নয়নের বিস্ময়কর অগ্রযাত্রার দেশ, বাংলাদেশ দেখতে আসছেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিলেও বাংলাদেশের অগ্রগতিকে অস্বীকার করতে পারেনি সংস্থাটি। বরং অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দেশটির ভূমিকার প্রশংসাও করেছে সংস্থাটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সহশ্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে (এমডিজি) বাংলাদেশের সাফল্যে তিনি অভিভূত। তাই সরেজমিন দেশটি সফর করার সিদ্ধান্ত নেন নিজ আগ্রহেই। উপলক্ষ হিসেবে বেছে নিয়েছেন বিশ্ব দারিদ্র্য বিমোচন দিবসকে। ১৭ই অক্টোবর এই দিবস পালন করা হয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জিম ইয়ং কিম হবেন বিশ্বব্যাংকের ৫ম প্রেসিডেন্ট যিনি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রবার্ট স্ট্রেঞ্জ ম্যাকনামারা প্রথম বাংলাদেশ সফর করেন। সর্বশেষ ২০০৭ সালের নভেম্বর তৎকালীন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রবার্ট বি. জোয়েলিক দুই দিনের সফরে বাংলাদেশ এসেছিলেন। এছাড়াও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতোপূর্বে বাংলাদেশ সফর করেছেন পল উলফোভিজ। ২০০৪ সালে সফরে আসেন জেমস ডি. উলফেনসন। দক্ষিণ কোরীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিক জিম ইয়ং কিম ২০১২ সালের ১ জুলাই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। তার সফরকে গুরুত্বের সাথেই দেখছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে দারিদ্র্য বিমোচন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসসহ জীবন মানের উন্নয়নে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। বিশ্বব্যাংকও প্রতিবছর তাদের সহায়তার পরিমাণ বাড়িয়েছে। এবারকার প্রেসিডেন্টের সফরকালে সহযোগিতা আরো সম্প্রসারণের নতুন ঘোষণাও তিনি দেবেন বলে জানা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনসহ এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশ অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, উন্নয়নশীল বিশ্বে অনুকরণীয় হয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় মাথাপিছু আয় কম হওয়া সত্ত্বেও শিশু মৃত্যু হার, মাতৃ মৃত্যুহার কমানোয় সাফল্য দেখিয়েছে। বাংলাদেশ দেখিয়েছে প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য বিমোচনের একমাত্র অবলম্বন নয়। স্বল্প আয় নিয়েও অনেক অর্জন সম্ভব। এই সাফল্য দেখতেই বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, জিম ইয়ং কিম বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের হার ৩ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেন। বিশ্ব দরিদ্রের একটি বড় অংশ বাস করছে দক্ষিণ এশিয়ায়। তাই এই অঞ্চলের দরিদ্র মানুষ রেখে বিশ্ব দারিদ্র্যের হার কমানো সম্ভব নয়। এ জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিশ্বব্যাংকের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে ভারত পাকিস্তান, নেপাল এমনকি শ্রীলঙ্কা থেকেও বাংলাদেশের এমডিজির সাফল্য অনেক বেশি। তবে পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর দারিদ্র্য বিমোচন পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে ভালো। কিন্তু বাংলাদেশ তুলনামূলক স্বল্প মাথাপিছু আয় নিয়ে যে অর্জন করেছে সেটি আমাদের অনেক বড় অর্জন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর