নতুন চোখে দেখতে হবে সম্পর্কের চমক! মেজর জেনারেল মো. আবদুর রশীদ (অব.)

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর অনন্য এককে রূপ নিয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর পর তিনিই একমাত্র ভারতীয় নেতা বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে অবিভক্ত সম্মান পেলেন। তিনিই একমাত্র ভারতীয় যিনি বাংলাদেশের মানুষের বিশ্বাস কুড়িয়েছেন একচ্ছত্রভাবে। এই সফরে তিস্তা চুক্তির সম্পাদন হলে তিনি এখানকার মানুষেরও নেতা বনে যেতেন, বাংলাদেশের অগণিত মানুষ হয়তো রাস্তায় নেমে এসে উল্লাসে ফেটে পড়ত। ভারতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে মোদি স্বপ্ন তৈরি করেছেন। স্বপ্নকে সত্যি করার কৌশল বানিয়েছেন নিপুণতার সঙ্গে। উপলব্ধি করেছেন ব্রহ্মা-নিয়ন্ত্রণ প্রতিযোগিতার মাঠে নামতে হলে রক্ষণশীল অন্তর্মুখিতা ছেড়ে বহুমাত্রিক গতিশীল বহির্মুখিতার পথ ধরতে হবে। নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে দরদি, সংবেদনশীল অথচ সমর্থ শক্তির প্রতীক হিসেবে। কাছের দেশগুলোর আস্থা ছাড়া চূড়ায় আরোহণ সম্ভব নয়, তাই শুরুটাই করেছেন প্রতিবেশী থেকে। বাংলাদেশ পারে চলাচলের বহুমাত্রিক রাস্তা খুলতে, কমাতে পারে নিরাপত্তা ঝুঁকি, সংযোগ করতে পারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে। অনুকরণীয় হয়ে উঠতে পারে দক্ষিণ এশিয়ায় সহমত তৈরিতে। ক্ষমতা নেওয়ার প্রথম বছরে তিনি ভারতকে বিশ্ব-নিয়ন্ত্রকদের দলে ঢোকাতে এবং বাণিজ্য প্রসারের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে অনেক দেশ চষে বেড়ালেও পাশের দেশটিতে আসতে বছর ঘুরে গেছে। ৪১ বছর ধরে পড়ে থাকা স্থলসীমান্ত চুক্তিকে ভারতীয় সংসদে অনুমোদন করিয়ে নিজ হাতে দিতে এসে মন জয় করে ফেলেছেন সবার। ভারত বিদ্বেষীদেরও মিত্র বনে যেতে বাধ্য করেছেন।

উত্থান-পতনের বেড়াজালে আটকে থাকা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অনাস্থা ও অবিশ্বাসের বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে এসে দুই দেশের সার্বিক উন্নয়নে সম্ভাবনার শক্তিগুলোকে কাজে লাগিয়ে যৌথভাবে মহাকৌশল রচনা করতে পারেনি এতদিন। রাজনীতির কাদা এবং মনের সংকীর্ণতা প্রাচীন সভ্যতার ভাগীদার ও একই সংস্কৃতির অংশীদার দুই দেশের বন্ধনে কৃত্তিম বিভাজন রেখাকে মোটা করার কৌশল নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে। সম্পর্কের ঐতিহাসিক ভিত্তি ও বর্তমানের অনুজ্ঞাসূচককে অবজ্ঞা করে কষা হিসাব খুঁজে বেড়িয়েছে ভারত থেকে কী পেলাম আর ভারত আমাদের কাছ থেকে কী নিয়ে গেল। অপ্রাপ্তির বেদনাকে তীব্র করে মনের মধ্যে বাসা বাঁধা সুপ্ত বিদ্বেষ নিয়ে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়া গেলেও তা হৃদয় ছুঁতে পারে না। পারস্পরিক স্বার্থ ও শঙ্কার উপলব্ধিকে বাইরে রেখে কোনো অংশীদারিত্ব গড়ে উঠতে পারে না। মাথায় অভিলাস গোপন রেখে নিজ স্বার্থের প্রাধান্য বন্ধুত্বকে কখনো শক্ত ও টেকসই করতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য থেকে জন্ম নেওয়া ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আনুষ্ঠানিক কূটনীতির বেড়াজাল ছাড়িয়ে আবেগে আবৃত হয়ে পড়েছে এই সফর থেকে। মুজিব ও ইন্দিরার তৈরি সম্পর্কের রূপকল্প নতুন করে খুঁজে নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সুসম্পর্কের অন্তরায় হওয়া কাঁটাগুলোকে এককভাবে তুলে ফেলতে শুরু করেন প্রথমবার ক্ষমতায় এসে। তার স্বস্তিমূলক প্রতিবেশী নীতির মনোযোগ থেকে প্রতিবেশী রূপান্তরিত হয় অংশীদারে। অমীমাংসিত বিষয়ের সুরাহার লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালেই স্বাক্ষর হয় গঙ্গা পানি চুক্তি। ১৯৯৭ সালের শান্তিচুক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বস্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল। প্রতিবেশীর সুসম্পর্ক ছিল চুক্তিগুলোর স্তম্ভ। ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাংলাদেশের মাটিতে ঠাঁই না নেওয়ার নীতি ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের নতুন সূচনা আনে। ভারতের নিরাপত্তার প্রতি মনোযোগিতা, বাস্তবায়নের আন্তরিকতা ও ঐকান্তিকতা থেকে পুনরায় ফেরত আসতে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গড়ে ওঠা আস্থা ও বিশ্বাস। সম্পর্ক নতুন মোড় নেয় ইতিবাচক উষ্ণতার দিকে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চিরাচরিত ভাবনা থেকে বেরিয়ে বিশ্বে ভারতের স্থানকে নতুন উচ্চতায় নিতে নতুন ধারণাপ্রসূত কৌশল নিয়ে মাঠে নামেন। তার নেতৃত্বের নতুন অবয়ব এবং গতিশীলতা পরিবর্তনের আবহাওয়ায় ঝড় তোলে। ভারতের গতিশীলতার অনুঘটক হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্বকে বুঝতে পেরে সহজ ও সাবলীল সম্পর্কের ওপর জোর দেন। দুই দেশের মানুষ ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে মনস্তাত্তি্বক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয় দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রজ্ঞা। পারস্পরিক সম্পর্কে শুধু স্বস্তি ও সহযোগিতা হলেই চলবে না, পৌঁছতে হবে মানুষের হৃদয়ের কাছে। স্থলসীমান্ত চুক্তির অনুমোদন যে তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ, একাগ্রতা ও ঐকান্তিকতার ফসল তা নিঃসন্দেহে অনুমান করা যায়। মোদি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশের প্রতি ভারতের আন্তরিকতা যেন দ্বিধাবিভক্ত বা বিতর্কিত না হয়ে পড়ে। অনুভূতির অনন্যতা থেকে বাংলাদেশের মানুষ আবেগে অবিভূত হয়েছে। ভারতবিদ্বেষী চিন্তার ধারক ও বাহকরা পিছটান দিলেও সম্পর্ককে মূল্যায়ন করছে দেনা-পাওনার মাপকাঠিতে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে প্রাপ্তির বেড়াজালে ফেলে ধোঁয়াশা তৈরি করে মানুষকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অনাস্থার মাঠে।

৪১ বছর ঝুলে থাকা স্থলসীমানা চুক্তির বাস্তবতা মানুষের মনে রাজনৈতিক লক্ষ্যে তৈরি করা অনেক দিনের সুপ্ত বৈরী মনোভাব রাতারাতি বন্ধুত্বের সেতুবন্ধনে রূপান্তরিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধে গড়ে ওঠা আবেগ বিধুর সম্পর্ক আবার নতুন করে সজীব হতে শুরু করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা আসায় অনাস্থার বাকি দেয়ালটুকু বিলীন হবে আস্থার নতুন জোয়ারে।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিস্ময়কর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মোদিকে স্বাগত জানালে ভারতবিদ্বেষী রাজনীতি চর্চা মুখ থুবড়ে পড়ে। বিএনপি-জামায়াত জোটের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির স্নায়ুকেন্দ্র ছিল ভারতবিদ্বেষ ও ধর্মের ব্যবহার। সরকার হটানোর ব্যর্থ আন্দোলনের পরিণতিতে সঙ্কুচিত অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য মোদিকে আস্থায় নিয়ে ভারতপ্রীতির নতুন কৌশল আরেকটি বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। যদিও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সখ্যের বিপক্ষে ইতিবাচকভাবে নেতিবাচক প্রচারণার গতিধারা একবারে বিলীন হয়ে যায়নি। প্রকারান্তরে ভারত থেকে বাংলাদেশ কী পেল বা পেতে যাচ্ছে তার হিসাব কষতে শুরু করেছে। দুই সমমর্যাদার স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ পারস্পরিক স্বার্থকে ধরে রেখে একে অপরের প্রয়োজন, ঝুঁকি ও প্রবৃদ্ধিকে মাথায় রেখে সম্পর্ক তৈরি করে। একে অপরের শঙ্কা ও স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এগুলেই কেবল টেকসই হয় সুসম্পর্ক। বাংলাদেশের মানুষের কাছে অনুভূতিপ্রবণ ভারতের সঙ্গে উল্লেখ করার মতো অমীমাংসিত বিষয় হলো- তিস্তা নদীর পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। ভারতের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে আঞ্চলিক সংযোগ। সম্পর্কের গোড়ায় কাজ করেছে পারস্পরিক রাষ্ট্রীয় স্বার্থ। রাষ্ট্রনায়কের সুনিপুণতা নির্ভর করে কীভাবে পারস্পরিক স্বার্থের দর কষাকষিতে নিজ স্বার্থ ঠিক রাখা যায়। বিশ্ব ব্যবস্থাকে আরও সুবিন্যস্ত করতে আন্তর্জাতিক আইনকানুন নতুন ভিত্তি তৈরি করেছে। যেখানেই বিরোধ সেখানেই মীমাংসার আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া রয়েছে। শুধু দরকার বিবদমান দেশের সমাধানের ঐকান্তিকতা ও একে অপরের ক্ষতি না করার সদিচ্ছা। বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্রসীমার আন্তর্জাতিক নির্ধারণ ও দুই দেশের মেনে নেওয়া একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। পারস্পরিক আন্তরিকতার ফসল স্থলসীমান্ত চুক্তি আর একটি ইতিহাস গড়েছে।

মোদির সফর দুই দেশের অভিন্ন লক্ষ্যকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের আশ্বাসসহ ভারতের সঙ্গে ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগির কৌশল ঠিক করতে দুই দেশ কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। ভারতের দেওয়া ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের মূল লক্ষ্য সংযোগ স্থাপনের অপরিহার্য ও দুর্বল কাঠামোর নির্মাণ এবং উন্নয়নকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। আঞ্চলিক ভৌত সংযোগ নিঃসন্দেহে বাণিজ্যকে অনেক প্রসারিত করবে। বাংলাদেশকে এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে নিজ বাণিজ্য বৃদ্ধির সঙ্গে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক সংযোগের কেন্দ্রে পরিণত করতে পারলে সবচেয়ে বেশি সফলতা পাওয়া যাবে।

গঙ্গা ছাড়া আর কোনো নদীর জন্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তি নেই। তিস্তা চুক্তিতে দুই দেশের পানি ভাগাভাগির অংশ চূড়ান্ত হয়ে আছে। ভারতের পক্ষ থেকে পানি দেওয়ার বিষয় নয়, আন্তর্জাতিক নদীর পানির অংশীদার হিসেবে তিস্তার পানির অধিকার সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের। চুক্তির মাধ্যমে হিস্যার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি এড়াতে ভারতীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধির কৌশল নেওয়া হয়েছে। ৪ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্প বৃহৎ বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করল, যা বিনিয়োগের পাশাপাশি আঞ্চলিক বিদ্যুৎ নিরাপত্তাকে শক্ত করবে। ভারতীয়দের জন্য মংলা ও ভেড়ামারায় দুটি শিল্প এলাকা বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে। পণ্য প্রস্তুত ও ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশে প্রস্তুত পণ্য প্রবেশে গতি আনতে সক্ষম হবে এ উদ্যোগ। যদিও ভারতের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশ নিয়ে দুই দেশকে আরও বাস্তবমুখী বাণিজ্য সংযোগ কৌশল নিয়ে এগুতে হবে। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বর্তমান মাত্রা ভাঙতে হবে, যা চিরাচরিত চিন্তা থেকে সম্ভব নয়। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের মাত্রা চিরাচরিত ধ্যান-ধারণা থেকে মুক্ত হয়ে নতুন অভিলাষপূর্ণ মাত্রায় উঠে আঞ্চলিক ও আন্তঃআঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংহতিতে পরিণত করতে হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের অন্তর্নিহিত লক্ষ্যগুলো একসঙ্গে করলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের একটি রূপকল্প ফুটে ওঠে। যাকে ভিত্তি করে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সহযোগিতা ঘুরতে থাকবে। মোদির সফরের তাৎপর্য খুঁজতে হলে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের কৌশলগুলোকে আরও গভীরভাবে দেখতে হবে।

দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রে বৃহৎ ভূখণ্ড, মানুষ ও অর্থনীতি নিয়ে ভারতের অবস্থান। এই বৃহৎ দেশটির সঙ্গে তাল রাখতে হলে দেশীয় মানব সম্পদের গুণগত মানের উন্নতি করতে হবে। উন্নত মেধা ও অর্জিত জ্ঞানের মান থেকে জন্ম নেবে দেশের সামগ্রিক সক্ষমতা। দুই দেশের পারস্পরিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা ও ভাগ্যোন্নয়নে নিবেদিত করতে পারলে সুসম্পর্ক টেকসই করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের জনবান্ধব ও টেকসই সম্পর্ক বিশ্ব নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করবে, যার নতুন ভিত্তি নরেন্দ্র মোদি তার সফরের মাধ্যমে স্থাপন করে গেলেন।

লেখক : স্ট্র্যাটেজি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক। ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিসের নির্বাহী পরিচালক।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর