ভেনিজুয়েলাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা

অধিনায়ক লিওনেল মেসির নৈপুণ্যে ভেনিজুয়েলাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে কোপা সেমিফাইনালের টিকেট কাটল আর্জেন্টিনা। ম্যাচের শুরু থেকে দারুণ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে গোল করেছেন মেসি। সেই সঙ্গে গোল সহায়তায় করেছেন এই বার্সা তারকা।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করেন হিগুইন। দ্বিতীয়ার্ধে মেসি আর এরিক লামেলার গোলের মাঝে লক্ষ্যভেদ করেন সলোমন রনদন।
ভালো কয়েকটি সুযোগ অবশ্য পেয়েছিল ভেনিজুয়েলা। একটি গোল তারা পায়নি বল পোস্টে লাগায়। অদ্ভুত পেনাল্টিতে নষ্ট হয় আরেকটি সুযোগ। আর আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরোও ছিলেন দারুণ তৎপর। তবে রক্ষণভাগের দুর্বলতার জন্যই শক্তিশালী আর্জেন্টিনার সঙ্গে পেরে উঠেনি দক্ষিণ আমেরিকার অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলটি।
ফক্সবরোর জিলেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রবিবার ভোরে শুরু হওয়া ম্যাচে টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো একাদশে ছিলেন মেসি। দ্বিতীয় মিনিটে বলে প্রথম স্পর্শেই পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার মাতালেন দর্শক। বল নিয়ে আড়াআড়ি দৌড়ে কয়েকজন খেলোয়াড়কে ফাঁকি দিয়ে ক্রস করেছিলেন; তবে তা সহজেই বিপদমুক্ত করেন গোলরক্ষক এর্নান্দেস। পরের মিনিটে আর্জেন্টিনা অধিনায়কের বাঁকানো শট যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।
তবে মেসির নৈপুণ্যে গোল পেতে দেরি হয়নি। অষ্টম মিনিটে প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে রক্ষণের উপর দিয়ে তিনি বল বাড়ান ডি-বক্সে। হাফভলিতে তা জালে পাঠিয়ে টুর্নামেন্টে গোলের খাতা খোলেন হিগুইন। ২১তম মিনিটে ফিগেরা মেসিকে ডি-বক্সে ট্যাকল করলে পেনাল্টির আবেদন জানায় আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা। তবে তাতে সাড়া দেননি রেফারি।
তবে ডিফেন্ডারদের ভুল বোঝাবুঝিতে দ্বিতীয় গোলটি খেতে হয় ভেনিজুয়েলার। ভিগেরার লম্বা ব্যাকপাস ধরে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে কাটিয়ে ফাঁকা জালে গোল করেন হিগুইন। জেরার্ডো মার্টিনোর প্রথম পছন্দের এই স্ট্রাইকারের এটি ২৯তম আন্তর্জাতিক গোল।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে দমে যায়নি ভেনিজুয়েলা। প্রথমার্ধের শেষ ১০ মিনিটে তো আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগকে তারা রীতিমত নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে। তবে গোল হয়নি গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরোর নৈপুণ্যে। ৩৫তম মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে রনদোনের জোরালো শট নিচু হয়ে ঝাঁপিয়ে ঠেকান রোমেরো। চার মিনিট পর কর্নার থেকে লাফিয়ে উঠে রনদোনের জোরালো হেডে অবশ্য পরাস্ত হয়েছিলেন রোমেরো; তবে বল লাগে বাঁ পোস্টে। ৪১তম মিনিটে ভেনিজুয়েলাকে আবার গোল বঞ্চিত করেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক। ফ্রাঙ্ক মার্তিনেসের শট একজনের পায়ে লেগে দিক পাল্টে গোলে ঢুকছিল; পেছনের দিকে লাফিয়ে বলে আঙুল ছুঁইয়ে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা সেভটি করেন রোমেরো।
দুই মিনিট পর রোমেরো বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে মার্তিনেসের পায়ে ঝাঁপ দিয়ে তাকে ফেলে দিলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। কিন্তু পানেলকা শট নিতে গিয়ে গড়বড় করে ফেলেন লুইস মানুয়েল সেইহাস। এই মিডফিল্ডারের চিপ জায়গায় দাঁড়িয়ে কোলে টেনে নিতে কোনো সমস্যাই হয়নি রোমেরোর।
৬০তম মিনিটে নিকোলাস গাইতানের সঙ্গে বল দেয়া নেয়া করে গোলরক্ষকের পায়ের নিচ দিয়ে জালে বল পাঠিয়ে টুর্নামেন্টে নিজের চতুর্থ গোলটি করেন মেসি। সঙ্গে লেগে থাকা সেন্টারব্যাক আউগুস্তো ভিসকারোনদো জোর চেষ্টাই করেননি। ৫৪ নম্বর আন্তর্জাতিক গোল করে মেসি ছুঁলেন দেশের হয়ে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড।
৭০তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে আসা ক্রসে লাফিয়ে উঠে চমৎকার হেডে রোমেরোকে ফাঁকি দেন রনদোন। কিন্তু পরের মিনিটেই গোল করে ভেনিজুয়েলাকে খেলায় ফিরতে দেয়নি আর্জেন্টিনা। মেসির বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে ফাঁকি দেন গাইতানের বদলি হিসেবে নামা এরিক লামেলা।
হিউস্টনে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে প্রথম সেমি-ফাইনালে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হবে ২৩ বছর পর বড় কোনো শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে চলা আর্জেন্টিনা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর