ভোটে গেল আরও ১২ প্রাণ

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের পঞ্চম ধাপেও গতকাল প্রাণ গেল ১২ জনের। ভোটে যথারীতি গোলাগুলি আর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দখল, বর্জন, ব্যালট ছিনতাইও হয়েছে আগের মতোই। শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণ ভোট হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যায় চিত্র। গোলাগুলি, বোমাবাজি করে সিল মারার মহোৎসব দেখা যায় বেশ কিছু ইউপিতে। এর মধ্যে শতাধিক কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করে দেয় ইসি। এ ছাড়া নড়াইলের বাঐসোনা ইউপিতে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত পুলিশ কনস্টেবল গোলাম ফারুক ৪০ দিন পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পঞ্চম ধাপে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত হয়েছেন শতাধিক। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ভোট বর্জন করেছেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীসহ অর্ধশত চেয়ারম্যান প্রার্থী। গোলাগুলি ও সংঘর্ষে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে চারজন, চট্টগ্রামের পটিয়ায় তিনজন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে দুজন এবং কুমিল্লার তিতাস, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও পঞ্চগড়ে একজন করে নিহত হন। এর মধ্যে একজন চেয়ারম্যান ও একজন ইউপি সদস্য প্রার্থীও রয়েছেন। ২০ জেলায় বেশি সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

৭১৭টি ইউপিতে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলে। ভোট গ্রহণের পরও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ধাপেও কেন্দ্রে নারীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। জাল ভোটের প্রভাবও ছিল বেশ কিছু এলাকায়। প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে বের করে দিয়ে প্রকাশ্যে সিল মারার ঘটনাও ঘটেছে। বিএনপি, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীর পাশাপাশি অন্যান্য দলের প্রার্থীরাও ভোট বর্জন করেন। সহিংসতা বাড়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তবে জাল ভোট কমেছে বলেও দাবি করেন তিনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে, আগের তুলনায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। বিএনপি বলেছে, পঞ্চম ধাপেও ছিল ভোট জালিয়াতির মহোৎসব। নির্বাচন কমিশন জেগে জেগে ঘুমিয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিভাগীয় নিজস্ব প্রতিবেদক, জেলা ও থানা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— জামালপুর : জেলার দেওয়ানগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতায় দুই স্কুলছাত্রসহ চারজন মারা গেছেন। গতকাল দুপুরে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের কুঠিরচর এবতেদায়ি দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের কুতুবের চর গ্রামের নূরুল ইসলাম ওরফে নূরে আলম (৬৫), শেখপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান (৩৫), স্কুলছাত্র মাজেদ (১৩) ও নবীরুল (১৪)। তারা সবাই বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাকিরুজ্জামান রাখালের সমর্থকরা জোরপূর্বক কেন্দ্রে ঢুকে সিল মারার চেষ্টা করে। এতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শাহজাহান মিয়ার সমর্থকরা বাধা দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। উভয় পক্ষই লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্র, রামদা, ফালা, তীর-ধনুক নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে সেখানে সংঘর্ষ ত্রিমুখী রূপ নেয়। টানা আধা ঘণ্টা সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় চারজন নিহত হন। এ ছাড়া ইব্রাহিম নামে একজন পুলিশসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুলিশ সদস্য ইব্রাহিমকে ঢাকায় এবং অন্যদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নোয়াখালী : বেগমগঞ্জে নির্বাচন চলাকালে দুজন নিহত হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়। গোলযোগের কারণে ৮১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে বেগমগঞ্জ ও সেনবাগ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে ভোট হয়। বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নের বাংলা বাজার কেবি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ এক কিশোর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। নিহত মো. শাকিল (১৬) জিলতলী ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের মো. মিলনের ছেলে। এর আগে সকালে একই উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের দারুল উলুম ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রের সামনে র‌্যাবের ধাওয়া খেয়ে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সৈয়দ আহম্মদ নামে (৬০) এক বৃদ্ধ মারা যান। এ ছাড়া সেনবাগ ও বেগমগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। বেগমগঞ্জের একলাসপুর বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে চৌমুহনী-মাইজদী সড়কে দুই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ছয়ানী ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে বেলা ১১টায় ভোট বর্জন করেন। চট্টগ্রাম : চার উপজেলার ৪৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পটিয়া উপজেলার কর্ণফুলী থানার বড়উঠান ইউনিয়নে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মো. ইয়াছিন নামে এক ইউপি সদস্য প্রার্থী এবং এক প্রার্থীর সমর্থক মোহাম্মদ হোসেন নিহত হন। এ সময় শরীফ ও আলম নামে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নিহত ইয়াছিন বড়উঠান ইউনিয়নের ৬ নম্বর শাহ মীরপুর ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে প্রার্থী ছিলেন। এ ছাড়া রায়পুর ইউনিয়নে সংঘর্ষে রুবেল নামে একজন নিহত হন। একই উপজেলায় দুপুরে শাকপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম শাকপুরা এলাকায় কেন্দ্র দখলকে ঘিরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এদিকে কর্ণফুলী থানার চর পাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের ব্যালেট পেপার ও সিলসহ সাবের আহমেদ নামে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে আটক করা হয়।

নড়াইল : জেলার বাঐসোনা ইউপিতে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত পুলিশ কনস্টেবল গোলাম ফারুক ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জানায়, নড়াইলের বাঐসোনা ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৮ এপ্রিল রাত ৯টায় নড়াগাতি উপজেলার চরকেকানিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফোরকান মোল্যা ও বিদ্রোহী প্রার্থী চুন্নু শেখের সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে গোলাম ফারুক গুরুতর আহত হন। প্রথমে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়া হয়। খুলনা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৪০ দিন পর গতকাল ঢাকা মেডিকেলে তিনি মারা যান। কুমিল্লা : ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতিপক্ষের টেঁটা হামলায় কুমিল্লায় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন নিহত হয়েছেন। তিনি বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। বিকালে জেলার তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের নাগেরচর বালুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া জেলার তিতাস, মেঘনা, হোমনা, বুড়িচং ও নাঙ্গলকোট উপজেলায় নির্বাচন চলাকালে কেন্দ্র দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া টেঁটাযুদ্ধ, গুলি, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এ সময় টেঁটাবিদ্ধ হন ১০-১৫ জন। সোনারগাঁ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়ায় পদদলিত হয়ে জয়ী প্রার্থীর সমর্থক ইদ্রিস আলী নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। গত রাতে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের লক্ষ্মীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী জানায়, ওই কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরাজিত প্রার্থী শাহাদাত হোসেন মুন্সির সমর্থক বাবুলের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি দল লাঠিসোঁটাসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জয়ী নুরুল ইসলামের বিজয় মিছিলে হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান ইদ্রিস আলী। সংঘর্ষে শামীম, আল আমিন, আলম, কবির হোসেন, ইসমাইলসহ ১৫ জন আহত হন। তাদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পঞ্চগড় : পঞ্চম ধাপের নির্বাচনের ফলাফল-পরবর্তী সহিংসতায় একজন মারা গেছেন। নাসির উদ্দিন (৫৫) নামে নিহত ওই ব্যক্তি একজন বিজয়ী সদস্য প্রার্থীর সমর্থক ছিলেন। নির্বাচনী সহিংসতায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ আহত হয়েছেন ২৬ জন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে ১০ নম্বর গরিনাবাড়ী ইউনিয়নের জোদ্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ইউপি সদস্য প্রার্থী তরিকুল ইসলাম টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে ৩২০ পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনোয়ার হোসেন পান ৩১১ ভোট। বিজয়ী হওয়ার পর আনন্দ উল্লাস করার সময় আনোয়ার হোসেনের সমর্থকরা বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর পাথর ছুড়তে থাকেন। পাথরের আঘাতে কারিয়াপাড়া গ্রামের ফাকু মিঞার ছেলে নাসিরউদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। এর মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লক্ষ্মীপুর : জেলায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, গুলি, জাল ভোট, কেন্দ্র দখল ও ব্যালট ছিনতাইয়ের মধ্য দিয়ে ১২টি ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। হাজিরপাড়া ইউনিয়নের তিনটি ও দিঘলী ইউনিয়নের দুটিসহ মোট পাঁচটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এসব ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। সিরাজগঞ্জ : জেলার শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর, কায়েমপুর, গাড়াদহ ও খুকনী এবং কাজিপুরের শুভগাছা ইউনিয়নে ভোটারদের দিয়ে জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে সিল মেরে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরিশাল : জেলার উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছেন রিটার্নিং অফিসার। নির্বাচনে অনিয়মের কারণে উজিরপুর থানার ওসি গোলাম ছরোয়ারকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করায় গুঠিয়ায় আওয়ামী লীগের তিন কর্মীকে ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আড়াইহাজার : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খাগকান্দা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের শম্ভুপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে কয়েকদফা সংঘর্ষ হয়। ময়মনসিংহ : বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ১০ ইউপিতে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন চলাকালে উপজেলার খেরুয়াজানি, দুল্লা ও কাশেমপুর ইউনিয়নে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসব ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়। রাজশাহী : জেলার চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া এলাকায় কেন্দ্রের বাইরে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ফেনী : জেলার দাগনভূঞার পাঁচ ইউনিয়নে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। এয়াকুবপুর ইউনিয়নের দেবরামপুর গ্রামের জাহানারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় প্রতিপক্ষ হামলা চালিয়ে এক প্রার্থীর বাড়িঘর ভাঙচুর করে। ধামরাই : ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের ওপর হামলা করে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল, দফায় দফায় সংঘর্ষ, বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন, এজেন্টদের হুমকি, কেন্দ্র দখলের চেষ্টাও চলে। বিভিন্ন কেন্দ্রে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ২৪ জন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : পুলিশ কর্মকর্তার ব্যালটে সিল, কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই, প্রকাশ্যে ভোট প্রদান, পুলিশের গুলিবর্ষণের মধ্য দিয়ে কসবা ও সদর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নরসিংদী : জাল ভোট, কেন্দ্র দখল, ককটেল বিস্ফোরণসহ নানা বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে সদর উপজেলার ১২টি ইউপিতে পঞ্চম ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ভোট চলাকালে বিভিন্ন ইউনিয়নের কেন্দ্রে বেশ কিছু ককটেল ও বোমা বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কিশোরগঞ্জ : মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জসিম ও খলিল নামে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মেম্বার প্রার্থী জসিমসহ পাঁচজন আহত হন। গাইবান্ধা : গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ও শালমারা ইউনিয়নের তিনটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়া এবং প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। যশোর : দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে গতকাল যশোরের তিনটি উপজেলা বাঘারপাড়া, অভয়নগর ও কেশবপুরের ২৮টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নাটোর : এজেন্ট বহিষ্কার, প্রার্থীকে প্রাণনাশের হুমকি এবং ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে সিংড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলার ১০ ইউপিতে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেছেন। এর মধ্যে সিংড়ায় ভোট বর্জন করেছেন সাত ও বড়াইগ্রামে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী। পাবনা : প্রকাশ্যে ভোট প্রদান ও সিল মারা ব্যালট সরবরাহ এবং বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে পাবনার ১৬ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর