তবুও ফুরফুরে মেজাজে ইসি

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে খোদ সরকার ও দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির মধ্যে ক্ষোভ বাড়লেও ফুরফুরে মেজাজে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দেশের প্রতিটি ইউপির ভোটকেন্দ্র ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দখল করছে। বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। কোথাও কোথাও রাতেই ব্যালট বাক্স ভরানো হচ্ছে। কিন্তু ইসি মনে করছে নির্বাচন ‘সুষ্ঠু’ হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের দুটি ধাপে ব্যাপক অনিয়ম, সহিংসতা ও ভোট কারচুপির ঘটনা ঘটেছে। এতে শিশুসহ প্রায় ৩৫ জন প্রাণ হারান। সামনে আরো চার ধাপের নির্বাচন রয়েছে। কিন্তু এসব নির্বাচনের জন্য বাড়তি কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখেনি ইসি।

তবে পরবর্তী ধাপের ইউপির নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করবে ইসি। আগামী ১৩ এপ্রিল বেলা ১১টায় এ বৈঠক হবে বলে ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সহিংসতা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে এ বৈঠক আহবান করা হচ্ছে বলে একাধিক কর্মকর্তা জানান।

তবে ইসির কোনো নির্দেশানায় শুনছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন, নির্বাচনী সংহিংসতা আমরা কমিয়ে আনতে পারছি না। কারণ অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের কাছ থেকে কাঙ্খিত সহযোগিতা পাচ্ছি না।

প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের সময় আমরা অন্য ডিপার্টমেন্টের উপর নির্ভর করি। অন্য ডিপার্টমেন্টের লোকজনকে আমাদের রির্টানিং কর্মকর্তাও করতে হয়েছে। তাদেরকে আমরা খুব অল্প সময়ের জন্য ট্রেনিং দেই। তাদের উপর আমাদের তেমন কর্তৃত্বও নেই। সেজন্য কাঙ্খিত সহযোগিত কিংবা যে মাপের সেবা চাই তা পাই না। এজন্য এসব ঘটনা ঘটছে।

ইসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইসি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর কোনো প্রভাব খাটাতে পারেনি। সে ধরনের কোনো চেষ্টাও কারো ছিল না। এজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে না ডেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বশেষ অবস্থা জানতে কমিশনার জাবেদ আলী বিভিন্ন দফতরে ঘুরেছেন। তিনি পুলিশ, বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ড এবং র্যা রে সদর দফতরে যান। ফলে ইসির দুর্বলতা প্রকাশ পায়। আর অতিরিক্ত আত্মতৃ্প্তির কারণেও আগামীতে আরো বিঙ্খৃলা হতে পারে বলে অনেকে জানিয়েছেন।

এত হতাহত ও ভোট ডাকাতির পরও ইসি এর দায় নিচ্ছে না। রবং এর দায় বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও নির্বাচনী সংস্কৃতির উপর ছেড়ে দিয়ে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন তারা।

এই বিষযে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বৃহস্পতিবার জাগো নিউজকে বলেন, দুই ধাপের ইউপি নির্বাচনে ইসি সন্তুষ্ট। আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার করেছি। কিন্তু প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা সহযোগিতা করছে না। তাই আমাদের করার কিছু নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অবস্থা দেখে যা মনে হচ্ছে আগামীতে সহিংসতা আরো বাড়বে। কারণ ইসি মনেই করে না নির্বাচন সুষ্ঠ হচ্ছে না। বরং তারা ফুরফুরে মেজাজে আছে। যা জাতির জন্য দুঃখজনক।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর