নতুন বোতলে পুরনো মাল

বিএনপির মধ্যে একমাত্র খালেদা জিয়া জামায়াতের প্রতি কিছুটা নমনীয় বলে এখনও জামায়াত-বিএনপি সম্পর্কটা টিকে আছে, না হলে কত আগেই জামায়াত জোট থেকে বেরিয়ে যেত। জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীল এক নেতার মুখ দিয়ে পরিষ্কার করে বলা কথা এটা। এই নেতা নানা কারণে বিএনপির রাজনীতির প্রতি ক্ষুব্ধ। শুধু বিএনপির রাজনীতি না, দলটির সিংহভাগ নেতার প্রতি তার কোন আস্থা নেই। বিশ্বাস তো দূরের কথা। জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বিএনপির আগামী দিনের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও শঙ্কিত। জোটের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে জামায়াত প্রায় এক ঘরে হয়ে আছে। উপরন্তু বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছে কৌশলগত কারণে জামায়াত গুরুত্বহীন হয়ে পড়ায় তারা বিকল্প অবস্থানের সন্ধান করছে। তাহলে কি জামায়াত ভিন্ন চিন্তা করছে? জোট থেকে চূড়ান্তভাবে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে?

এরকম প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতা জানান, জোট নিয়ে আমরা চিন্তিত নই, আমরা জামায়াতের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। যদি আগামী দিনের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামীকে ধরে রাখা না যায় তাহলে দলটি কার জন্য রাজনীতি করবে? পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াতকে নতুন আঙিকে সাজানো এবং পুরনো বিতর্কিত, নিন্দিত ও প্রশ্নবিদ্ধ নেতৃত্বকে সরিয়ে দিয়ে দলে স্বচ্ছ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এ যাত্রায় দলটিকে বাঁচিয়ে রাখা। ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের একটি অংশ যারা জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে রয়েছে তারা এতদিন গোপনে কাজ করলেও বর্তমানে তারা প্রকাশ্যে এই পরিবর্তনে সোচ্চার। এই অংশটির নেপথ্যে রয়েছে শক্তিশালী চক্র।

জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান নেতৃত্বে থাকা একটি অংশ দলের এই পরিবর্তন, সংযোজন-বিয়োজনকে ভালোভাবে নিতে পারছেন না। ছাত্রশিবিরের সাবেক শীর্ষ নেতাদের একটি বড় অংশ দলের মধ্যে এই পরিবর্তনকে ‘ফরজে কেফায়া’ বলে মন্তব্য করেছেন। তারা বলছেন, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অতীত দিনের অপকর্মের দায়ভার কেন নতুন প্রজন্ম ও পুরো দলকে বহন করতে হবে? এ প্রশ্নে তারা বেশ সরব।

উল্লেখ করা প্রয়োজন, জামায়াতের রাজনীতিতে ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতাদের একটি বড় অংশ ভালো অবস্থানে আছেন। দলে তাদের অবস্থান ও প্রভাব প্রতিপত্তি যথেষ্ট। মূলত এই অংশটি দলের মধ্যে নতুন প্রজন্মের জন্য ভালো কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করতে চান। এই অংশটি জামায়াতের ভেতর সংস্কার করে মানুষের সামনে জামায়াত সম্পর্কে একটা ইতিবাচক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছেন। জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্ব এই অংশটির ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যেতে পারছে না বিশেষ কারণে। ইতিপূর্বে গণমাধ্যমে জামায়াতের ভাঙ্গন সম্পর্কে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন ছাত্র শিবিরের বেশ কয়েকজন সাবেক নেতা। সে সময় এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে অসন্তোষ, অরাজকতা তৈরি হলেও দেশের রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশের কারণে পরিস্থিতিকে ঠাণ্ডা মাথায় সামাল দেয়া হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের ইতিবাচক রাজনীতি, প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে জামায়াতের ভাঙনের চূড়ান্ত রূপ রেখাটি বেশ পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা জামায়াতের রাজনীতির মূল সংকট হিসেবে দলের নেতৃত্বে থাকা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত নেতাদের পদ-পদবিতে থাকা এবং দলের জন্য ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করে বলছেন, জামায়াতের নতুন নেতৃত্ব দলটিকে অতীত কলঙ্ক থেকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে। এক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সাজাপ্রাপ্তদের ঝেটিয়ে বিদায় করা ছাড়া কোন উপায় নেই। জামায়াতের এই নতুন নেতৃত্ব চায় দলটি সামনের দিনে এককভাবে রাজনীতির মাঠে অবস্থান করবে এবং প্রয়োজনে বৈরী পরিবেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার চেষ্টা করে যাবে। সেই যুদ্ধে যদি জামায়াত টিকে থাকতে না পারে তবে যা হবার তাই হবে। তবে এ ক্ষেত্রে আগামী দিনে বাংলাদেশে জামায়াতের রাজনীতি স্তিমিত হলেও দলটিকে মুসলিম লীগের ভাগ্যবরণ করতে হবে না- এ ব্যাপারে তারা একমত।

জামায়াতের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃত্বে চারদলীয় জোট গঠিত হওয়ার পর থেকে এই দু’দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে নানা বিষয়ে অনৈক্য ও অস্বস্তি কাজ করে আসছে। চার দলীয় জোট গঠন হওয়ার পর থেকে বিএনপিতে স্বাধীনতার দল বলে পরিচিত উদারপন্থি গ্রুপটি জামায়াতকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি। সে সময় বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূইয়ার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নালিশ করেছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। কিন্তু মুজাহিদের নালিশকে পাত্তা দেননি খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে চারদলীয় জোট সম্প্রসারিত হয়ে নামকাওয়াস্তে ২০ দলীয় জোট গঠিত হলেও জোটে জামায়াতের ভাগ্যের শিকে খুব একটা প্রসন্ন হয়নি। ২০ দলীয় জোটে গঠিত হলেও জামায়াতের তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ দলকে বিশেষ সমাদর দেখানো হলেও জামায়াতের ব্যাপারে বিমাতাসুলভ আচরণ করতে থাকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ৯০ বছর কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের মৃত্যুর পর বিএনপির পক্ষ থেকে কোন শোকবার্তা না দেয়া এবং তার জানাজায় দলটির কোন নেতার অংশগ্রহণ না করা, জামায়াতের শীর্ষ নেতা কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর, দলটির বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী ও মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় দেয়ার ঘোষণা সবকিছুতে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের রহস্যজনক নীরবতায় জামায়াতের শীর্ষ নেতারা হতাশ হয়েছেন। তারা বিষয়গুলোকে সহজে গ্রহণ করতে পারেননি।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনাল এ পর্যন্ত দশেরও অধিক মামলার রায় দিয়েছেন। প্রতিটি রায়ের বিপরীতে বিএনপির কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না। সর্বশেষে মতিউর রহমান নিজামী ও মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় দেয়ার পর সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কৌশলের সঙ্গে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মাহবুবুর রহমানের এই বক্তব্যে জামায়াত নেতাদের বুক ভেঙ্গে গেলেও তাদের আশ্বস্ত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায়। রায় সাহেব গোলাম আযমের মৃত্যুতে সমবেদনা জ্ঞাপন করে তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।

জামায়াতের প্রতি বিএনপির এই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতিকে পুরোপুরি প্রত্যাখান করেছেন দলটির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। তারা এই নীতির জন্য ভবিষ্যতে বিএনপিকে চরম মাশুল দিতে হবে বলে হুশিয়ারি ব্যক্ত করেন।

জামায়াতের বদলে যাওয়া দলের নেতৃত্বে যারা আসবে তারাও বিএনপির এই অবস্থানকে সাদা চোখে নিতে পারছেন না। তারা বলছেন, বিগত দিনের সরকার পতনের আন্দোলনে যেখানে বিএনপির নেতা কর্মীদের মাঠে পাওয়া যায়নি সেখানে তাদের নেতাকর্মীরাই দেশব্যাপী জ্বালাও-পোড়াওসহ সাধারণের আন্দোলন-সংগ্রামের একক নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এই কি তার প্রতিদান? বিএনপির এই রহস্যময় অবস্থান ও নীরব থাকাকে জামায়াতের অন্যতম আদর্শগুরু গোলাম আযমের পুত্র ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুল্লা হিল আমান আযমীকে স্বস্তি দেয়নি। তিনি সে সময় তার ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাসে বিএনপিকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে উল্লেখ করে স্ট্যাটাসে লেখেন, জামায়াত ছাড়া বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারেনি, আগামীতেও আসতে পারবে না।

জানা যায়, গোলাম আযম পুত্রের এই স্ট্যাটাসটিকে জামায়াতের নতুন নেতৃত্বে প্রত্যাশীরা উদার অংশটি একটি ভিন্ন বার্তা হিসেবে গ্রহণ করে। তারা গো আজম পুত্রের স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টিকে পজেটিভ হিসেবে দেখছেন এবং আগামী দিনে কি করতে হবে তার কাঙ্খিত গ্রিন সিগন্যাল হিসেবে গণ্য করছেন। আমান আযমীর ফেসবুক স্ট্যাটাস ও এর অন্তর্নিহিত মাজেজায় এটা পরিষ্কার যে, জামায়াত ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে গিয়ে স্বতন্ত্র অবস্থানে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে যা যা প্রয়োজন তার সবই করবে। আর এরই অংশ হিসেবে খুব দ্রুতই তারা পুরনো নেতৃত্বকে সরিয়ে দিয়ে নতুন মুখ নিয়ে দল পুনর্গঠন করতে যাচ্ছে।

জামায়াত রাজনীতি ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা যায়, আমান আযমীকে সামনে রেখে ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নেতৃত্বের বলয় তৈরি করার রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। বর্তমানে এরা দলের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই নেতৃত্বের হাতে রয়েছে সর্বোচ্চ ক্ষমতা।

উল্লেখ্য, মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াত নেতা কামারুজ্জামান বছরখানেক আগে কারাগারে থেকে দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন ও সংগঠন হিসেবে জামায়াতের সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনার নির্দেশনামা দিয়ে একটি চিঠি জামায়াতের তরুণ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। সেই খোলা চিঠিতে কামারুজ্জামান দলের বিতর্কিত নেতৃত্বকে সরিয়ে দিয়ে নতুন প্রজন্মের হাতে দলের নেতৃত্ব তুলে দেয়ার রূপরেখা দিয়েছিলেন। কামারুজ্জামানের সেই চিঠিকে দলের সিনিয়র নেতারা সহজভাবে গ্রহণ করেননি। কিন্তু পরিবর্তিত অবস্থায় তার চিঠির মূল্যায়ন করতে দলটির মধ্যবয়সী নেতারা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। এই অংশের নেপথ্যে রয়েছে শক্তিশালী মাধ্যম।

জামায়াতের রাজনীতি যারা খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন বিষয়টিকে তারা বেশ গভীরভাবে উপলব্ধিতে নিয়ে বলছেন, বর্তমান অবস্থায় দলের পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। বর্তমান নেতৃত্বের বেশিরভাগ নানাভাবে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত, নেতা-কর্মীদের নামে হাজার হাজার মামলা, আত্মগোপন, কারাবরণ সব মিলিয়ে দলের বেশ নাজুক অবস্থা। দল পরিচালনায় যারা আছেন তাদের দেখা পাওয়াও ভার। এ রকম অবস্থায় জামায়াতের কার্যক্রম ও চলমান পক্রিয়া কী আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে? মূলত জামায়াতের পিঠে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি’র তকমা ঘোচানোর জন্যই দলটি নতুন আঙ্গিকে মাঠে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে। সে ক্ষেত্রে যা যা করার তার সবই করবে তারা।

জামায়াতের একটি সূত্র জানায়, সরকার জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সব প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন করে এনেছে। যে কোন সময় নিষিদ্ধের এই ঘোষণা আসতে পারে। সরকারের এই নিষিদ্ধের ঘোষণাকে সামনে রেখে জামায়াতের এই অংশটি দলের একটি সম্ভাব্য নাম নিয়ে মাঠে নেমেছে। নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করার ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে তারা। নতুন বোতলে পুরনো মদ হিসেবে তারা দেশের মানুষের সামনে বাংলাদেশ ডেপেলপমেন্ট পার্টি বা বিডিপি হিসাবে জামায়াতকে দাঁড় করাবে। বিডিপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যথাক্রমে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের ও দলের প্রাক্তন সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান আজাদের নাম বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। তবে বিডিপির নেতৃত্বে থাকা অংশটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বেশি প্রাধান্য দেয়ার কৌশল গ্রহণ করেছে। নতুন নেতৃত্বে বিডিপি আত্মপ্রকাশ করে রাজনীতিতে চমক দেখানোর জন্য যা যা করণীয় তার সবই গ্রহণ করবে বলে জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।

আত্মপ্রকাশের আগে জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আসবে। সেক্ষেত্রে জোটে থাকাকালীন সময়ে বিএনপির নেতৃবৃন্দের অনেক গোপন কর্মকাণ্ড প্রকাশ করে দেবে এমন সম্ভাবনাও রয়েছে বলে সূত্রটি আভাস দিয়েছে।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে বিডিপি রাজনীতিতে তার সহোদর হিসেবে কাজ করে যাবে। সাংবাদিক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির জামায়াতের বিডিপি হয়ে মাঠে নামা প্রসঙ্গে বলেছেন, জামায়াত বা নতুন নাম নিয়ে রাজনীতি করতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। মিশরেও এইভাবেই তারা ক্ষমতায় গিয়েছিল। জামায়াত নতুন নামে এলেও দেখতে হবে, তাদের রাজনৈতিক দর্শন কী হয়।’

শাহরিয়ার কবির জামায়াতের ভাঙনকে ভাঙন না বলে একে সাজানো নাটক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। জামায়াতের এই নাটকের ধারাবাহিকতা মানুষ খুব ভালো করে বোঝে।

প্রসঙ্গত ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৫৯, ৬৪ এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান প্রতিষ্ঠার পর অন্য সব ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে জামায়াত নিষিদ্ধ হয়। পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আরোহন করে সেনাশাসক জিয়াউর রহমান নিজের আখের গোছাতে ১৯৭৯ সালের ২৫ মে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেন জামায়াতকে।

জামায়াতের পরিবর্তিত সংস্করণ বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি)’র ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত না করলেও দেশের উগ্র রাজনীতিতে দলটি যে নতুন মাত্রা যোগ করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন দেখার বিষয় কবে, কখন জামায়াত নতুন লেবাসে মাঠে নামে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর