উৎসবমুখর কাউন্সিল প্রাঙ্গন, সাজসাজ রব

বিএনপির ৬ষ্ঠ কাউন্সিলকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট ও সোহরাওয়ার্দি উদ্যানসহ আশপাশ এলাকায়।

ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউটে আয়োজন করা হয়েছে মুলমঞ্চ।সবমিলে থাকছে তিনটি মঞ্চ। মূলমঞ্চের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি।ফুল দিয়ে সাজানো হচ্ছে মূল মঞ্চ। মঞ্চের কাজের সুবিধার জন্য নেতাকর্মীদের মঞ্চের বাইরে থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে। তবুও ভীড় সামলানো যাচ্ছে না।

দলের কেন্দ্রীয় নেতারা ছোট ছোট দল নিয়ে কাউন্সিল স্থলে সমাবেত হচ্ছেন।

সারাদেশ থেকে কাউন্সিলবৃন্দ ও ডেলিগেটরা ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিট থেকে আগত নেতৃবৃন্দ ডেলিগেট ও কাউন্সিলর কার্ড সংগ্রহ করছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নেতাকর্মীরা সকাল নয়টার মধ্যেই সমাবেশ স্থলে উপস্থিত থাকবেন। রাতে নেতা-কর্মীদের সমাবেশ স্থল ত্যাগ না করার অনুরোধ জানান তিনি।

এদিকে কাউন্সিলকে ঘিরে পুরো এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকার ভেতরের গাছগুলোতে ব্যানার ফেস্টুন লাগানো হয়েছে।

বিএনপির একটি সুত্র বলেছে, সমাবেশকে পণ্ড করার কোন ষড়যন্ত্রই যেন কাজে না লাগে সেজন্য সকল নেতাকর্মীকে সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাতে অনেক নেতাকর্মী সমাবেশ স্থলে অবস্থান করবেন।

সকাল ১০টায় শুরু হওয়া কাউন্সিলের প্রস্তুতি ভালভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।

সমাবেশ স্থলের আশেপাশে নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা সারছেন। দূরদূরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীদের সমাগমে ইতোমধ্যেই মিলন উৎসবে রুপ নিয়েছে।

খালেদা ৯টা ২০মিনিটে রওনা হবেন

শনিবার সকাল দশটায় কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এর আগে শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা হবেন তিনি।

সেজেছে ঢাকা

বিএনপি’র কাউন্সিলকে ঘিরে সারাদেশের বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে মানুষও তাকিয়ে রয়েছে প্রায় ছয় বছর পর হতে যাওয়া বিএনপির কাউন্সিলের দিকে। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটসহ রাজধানী ঢাকাকে সাজানো হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্লোগান লেখা পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন লাগিয়ে ঢাকাকে দেয়া হয়েছে নতুন রুপ। মনে হয় এ যেন এক নতুন ঢাকা। এর মধ্যে প্রধান্য পাচ্ছে কাউন্সিলের মুল স্লোগান- ‘থামাও ষড়যন্ত্র ফেরাও গণতন্ত্র’।

আসছেন বিদেশী ডেলিগেট

বিএনপির কাউন্সিলে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিরোধী লেবার পার্টির সদস্য সিমন ডান্স জাক। বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকায় পৌঁছেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিনিধি ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য ফিল বেনিওনেরও পৌঁছনোর কথা রয়েছে বলে জানা গেছে।

তিন মঞ্চের একটিতে খালেদা

কাউন্সিলে তিনটি মঞ্চের একটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভাষণ দেবেন এবং দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন। এটির দৈর্ঘ্য হবে ৩৬ ফুট এবং প্রস্থ হবে ২৪ ফুট। অন্য দুটির একটি শিল্পীদের জন্য। যার দৈর্ঘ্য হবে ৩৬ ফুট এবং প্র¯’ হবে ১৮ ফুট। আরেকটি শুধু সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। এটির দৈর্ঘ্য ১৮ ফুট এবং প্র¯’ হবে ১২ ফুট।

লাভলী ও সুপার স্টার

মঞ্চ তৈরির কাজ করছে লাভলী নামের একটি ডেকোরেটর প্রতিষ্ঠান। আর সাউন্ড সিস্টেম কাজ করছেন সুপার স্টার নামের একটি কোস্পানী। এ কোম্পানির মালিক মো. আওলাদ হোসেন পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মধ্যেই ৩৫ টি মাইক লাগানো হয়েছে এবং মঞ্চের দুই পাশে ১০টি করে ২০টি লাইনার এবং মঞ্চের দুই পাশে দুটি এসি লাগানো হয়েছে।

একশ সিসি টিভি

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা লাল-সবুজের রং-কে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হচ্ছে পুরো ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট। চারপাশে উঁচু ছাউনি দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। কাউন্সিল এলাকার নিরাপত্তায় নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী, ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) ও আর্চওয়ে থাকছে।

এ বিষয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ জানান, কাউন্সিলের নিরাপত্তায় ১শ সিসি টিভি, ডজন তিনেক আর্চওয়ে, প্রায় এক হাজার শৃঙ্খলাকর্মী সার্বক্ষণিক পুরো এলাকা দেখাশোনা করবেন।

আশাবাদী নেতারা

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, বিএনপির যে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তার মাধ্যমেই বিএনপি আরও এক ধাপ শক্তিশালী সংগঠন হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এবং একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখবে।

তিনি বলেন, আমরা কাউন্সিলর ও ডেলিগেট কার্ড দিয়েছি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা, উপজেলা, মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা কাউন্সিলর হবেন। সব মিলিয়ে ৩ হাজারের কাছাকাছি কাউন্সিলর হবেন। ১০ হাজারের মত ডেলিগেট কার্ড দেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর