একই জমিতে ৫ প্রকারের ফসল চাষে সাবলম্বী কৃষকরা

সুষ্ঠ পরিকল্পনা, ইচ্ছাশক্তি আর শ্রম দিলে যে কোনো খামার বা প্রকল্প লাভজনক প্রতিষ্ঠানে গড়ে তোলা সম্ভব-সেটাই প্রমাণ করেছেন ইজ্জত আলী, আঃ রশিদ, শহিদ ও জাফর আলীসহ আরও অনেক কৃষক।

নিজের সীমিত সম্পদের প্রতি ইঞ্চি মাটির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে লাভবান হয়েছেন এসব কৃষকরা। একই সঙ্গে দেশকে স্বয়ং সম্পূর্ন হিসেবে গড়ে তোলার পথ দেখাচ্ছেন অন্য কৃষকদের। এলাকায় তারা একেকজন সফল আখ চাষি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

রৌমারী উপজেলার লাঠিয়াল ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা এসব কৃষকরা প্রায় ১০ বছর আগে থেকেই নেমে পড়েন আখ চাষ করে আবার একই জমিতে ভূট্টা। বাদাম, মরিচ, মূলা, শাখ, লাল. শাখসহ ৫ প্রকারের ফসল ফলিয়ে ওই নদী ভাঙ্গা সর্বহারা এলাকার দরিদ্র কৃষকরা আখ ক্ষেতে ৫ প্রকারের ফসল চাষ করেই সফলতা অর্জন করেছে। এক বিঘা জমিতে আখ চাষে খরচ হয়ে থাকে ৩০ হাজার টাকা, সেখানে তারা ফসল ফলিয়ে নিচ্ছেন ৫টি।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৮ মাস সময় লাগে আখ পরিপূর্ণ হতে, ৮মাস পর বিক্রয় করা হয়, এর আগে ৪ পদের ফসল বিক্রয় করে থাকেন প্রায় এক লাখ টাকা। সবশেষ আখ বিক্রয় করে থাকে প্রায় ২ লাখ টাকা। প্রথম বারেই লাভের মুখ দেখতে পেয়ে খুশি এসব চাষিরা। সেই থেকে ইজ্জত আলী একটু বেশি পরিসরে একই জমিতে বিভিন্ন ধরণের ফসল চাষ শুরু করেন । যার ফলে তার সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা।

প্রতি বছরই জমি বন্ধক রেখে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছেন চর লাঠিয়াল ডাঙ্গা গ্রামের প্রায় একশ’ দরিদ্র কৃষক। এদের নিজের ভিটেবাড়ি ছাড়া মাঠে এক শতক জমিও নেই। অন্যের জমি প্রতি বছর ২০ হাজার টাকায় এক বছরের নামে চুক্তি করে মালিকদের দিয়ে ওই জমিতে ৫ প্রকারের ফসল ফলিয়ে তাদের স্বচ্ছলতার মুখ দেখতে পেয়েছেন। তবে আগামীতে আরও ভালো ফসল ফলানোর আশা করছেন এসব কৃষকরা।

সরেজমিন ইজ্জত আলী, আঃ রশিদ, জাফর আলী, ওমর আলী, মজিবুর রহমানসহ আরও অনেকেই এক বিঘা ২ বিঘা করে জমিতে গড়ে তোলা বিভিন্ন জাতের ফসল। বিক্রি করেই প্রতি বছর এক লাখ টাকার বেশি আয় করছেন।

প্রতিদিন এক হাজার থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেন ইজ্জত আলী । তিনি জানান, এরই মধ্যে ২২ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করা হয়েছে। আরো ৪০ হাজার টাকার বাদাম বিক্রয় করা হয়। একই সঙ্গে রয়েছে ভূট্টা। ওই ভূট্টা কম হলেও ২০ হাজার টাকা বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে আখ চাষি কৃষকরা বলেন, আমরা একই সঙ্গে একাধিক ফসলের চাষ করে অনেক সাফল্য পেলেও উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের কোনো সহযোগিতা করা হয়নি। এমনকী সময় মতো কোনো পরামর্শও মিলেনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর