বর্ষবরণে যৌন নিপীড়ন তেমন বিষয়ই না : নৌমন্ত্রী

পহেলা বৈশাখে নারীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে ‘তেমন বিষয় না’ বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বেসরকারি সংগঠনের অনুষ্ঠানে গত বছরের বহুল আলোচিত এই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে অনেক মানুষ রাস্তায় থাকে। ঢাকা শহরে প্রায় দুই কোটি মানুষ থাকে। একটা টুকিটাকি ঘটনা হতেই পারে। এতগুলো মানুষের মধ্যে এটা তেমন কোনো বিষয়ই না।
সিসি ক্যামেরায় কয়েক যুবকের ছবি ধরা পড়লেও তাদের শনাক্ত করা যায়নি উল্লেখ করে মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পুলিশ। সম্প্রতি একজনকে গ্রেফতারের পর মামলাটি পুনরুজ্জীবনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শাজাহান খান বলেন, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক সমালোচক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে ‘ব্যর্থ’ প্রমাণের চেষ্টা চালিয়েছিল।
জার্মানিতে খ্রিস্টীয় নতুন বছরের অনুষ্ঠানে যৌন হয়রানির ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, উন্নত দেশে এর চাইতে বেশি ঘটে। এর চেয়ে আরো মারাত্মক মারাত্মক ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের কনফারেন্স কক্ষে নতুন ধারা নামে একটি সংগঠনের ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সড়কে দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাড়িচালকদের পক্ষ নিয়ে কয়েক বছর আগে সমালোচনায় পড়া পরিবহন শ্রমিকদের নেতা শাজাহান খান।
নতুনধারার নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ব্র্যাক বাংকের হেড অব কমিউনিকেশন্স জারা জাবিন, জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের সিইও হেলেন জাহাঙ্গীর ও হাজী সেলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজের অধ্যক্ষ শাহনাজ পারভীন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে নানা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১০ নারীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বাংলাদেশে নারীদের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে তার প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করা মৌলবাদী শক্তিকে প্রতিরোধ করার আহ্বানও জানান শাজাহান খান।
তিনি বলেন, এদেশের নারী গার্মেন্ট সেক্টর থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী, পুলিশ.. রেলগাড়ি চালাচ্ছে সম্পূর্ণ দক্ষতার সঙ্গে। তাহলে আমরা কেন তাদের পিছিয়ে রাখব।
তিনি আরো বলেন, আহমদ শফী হেফাজতে ইসলামে আমির, তিনি কী বলেছিলেন? নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অভিভাবকদের বলেছেন কোনো মেয়েদের ক্লাস ফোরের বেশি পড়ানো যাবে না। তার মানে ঘর থেকে তাদের বেড়ানো নিষেধ।
আর একটি কথা বলেছিল, মেয়েদের অসুখ হলে পরে মহিলা ডাক্তার দেখতে হবে। আমার প্রশ্ন হল, মেয়েরা যদি শিক্ষাই না পায়, তাহলে ডাক্তার হবে কোথা থেকে। এরকম অদ্ভূত ধরনের ফতোয়া এদেশের কিছু কিছু মাওলানা দিয়ে থাকেন।
নারীকে পিছিয়ে রাখতে চায় কারা, যারা এই সমাজের অগ্রযাত্রায় বিশ্বাস করে না, যারা অধিকারকে বিশ্বাস করে না, যারা ধর্মের নামে নারীদের গৃহবন্দি করে রাখতে চায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর