ভালোবাসা ধরে রাখার জন্য…

স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে ঝগড়া হলে অনেকেই ভাবেন, ‘আমার সঙ্গীটি যদি একটু অন্যরকম হতো, তাহলে হয়ত এমনটা হতো না, তাই না? কিন্তু সেটা তো সম্ভব নয়৷ তাই এক্ষেত্রে কী করণীয় জেনে নিন৷
পার্টনারের কাছ থেকে কী আশা করি আমরা?
প্রথমেই মনে মনে একটা ছবি আঁকুন, ভাবুন, আপনি আপনার স্বামী-স্ত্রী বা সঙ্গীর কাছ থেকে ঠিক কী আশা করেন…৷ কতটা সময় তাঁর সাথে কাটাতে চান বা অবসর সময়ে কী করতে ইচ্ছা করে আপনার৷ বাস্তবে এই মুহূর্তে সবগুলো ইচ্ছাপূরণ হয়ত সম্ভব নয়৷ কিন্তু আপনি যে এ সব বিষয় নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করছেন, সেই ভাবনা বা উপলব্ধিই আপনার মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে৷
বন্ধুদের জন্য সময় রাখুন
বন্ধুদের জন্যও কিছুটা সময় আলাদা করে রাখুন৷ এমন বন্ধু, যাদের সাথে আপনি গল্প করতে বা কিছুটা সময় কাটতে পারেন৷ এমনটা করলে তা নিঃসন্দেহে পার্টনারশিপের সমস্যায় বা দাম্পত্যজীবনে উপকারে আসবে৷ কারণ মাঝে মাঝে অন্যকিছু করা বা খনিকটা সময় একে অপরের কাছ থেকে আলাদা থাকলে প্রিয়তম বা প্রিয়াকে কাছে পাওয়ার আগ্রহ আরো বাড়িয়ে দেয়৷
যখন অসহ্য হয়ে ওঠে
দাম্পত্যজীবনে প্রায়ই ছোটখাটো ঝগড়া হয়৷ অথবা পরিস্থিতির চাপে অনেকেই তাঁর পছন্দের মানুষটিকে কটুকথা বলে ফেলে বা তাঁর প্রতি খারাপ আচরণ করে ফেলে, যা আপনার সঙ্গীকে আহত করতে পারে৷ অথচ এই আচরণের পিছনে হয়ত আপনার ছোটবেলার কোনো ঘটনা জড়িত৷ সেক্ষেত্রে বিষয়টা নিয়ে দু’জনে আলোচনা করুন এবং এ রকম আচরণের কারণ খুঁজে বের করুন৷ দেখবেন আগামীতে অনেক বেশি সচেতন আচরণ করছেন৷
দৈনন্দিন কাজের শক্তি!
মেজাজ খারাপ হলে তার দোষ বা কারণ আমাদের মধ্যে অনেকেই অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে কম-বেশি পছন্দ করি৷ এমনটা না করে আপনার মেজাজ কেমন রাখবেন, তার দায়িত্ব আপনি নিজে নিন৷ সেজন্য খেলাধুলা, ব্যায়াম, নাটক, সিনেমা দেখতে অথবা গান শুনতে পারেন, একা বা কারো সাথে যা আপনাকে আনন্দ দেবে৷ আসলে নিজে খুশি থাকলে ঘরের পরিবেশ যেমন ভালো থাকে, তেমনি তা অন্যের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে৷
ঘরের পরিবেশকে জীবন্ত করে তুলুন
একজন অন্যজনকে দোষ না দিয়ে দৈনন্দিন জীবনে খানিকটা পরিবর্তন আনুন৷ অর্থাৎ ঘরের পরিবেশকে বন্ধুত্বপূর্ণ করুন৷ ঘরকে একটু অন্যভাবে সাজান, ফুল রাখুন, কাছের বন্ধুদের ডেকে আড্ডা দিন বা গান শুনুন৷ নিজে সুন্দর জামা-কাপড় পরে ফিটফাট থাকুন৷ সোজা কথা – বাড়ির দৈনন্দিন পরিবেশকে জীবন্ত করে তুলতে পারলে, সেটাই হতে পারে ভালোবাসার মন্ত্র, সংসারে শান্তির চাবিকাঠি৷
যে আচরণের পরিবর্তন সম্ভব
অনেক সময় রাগের মাথায় বহু দম্পতিকেই একে অপরের ভুল-ক্রুটি বা দোষ বড় করে তুলে ধরতে দেখা যায়৷ কিন্তু সুখি দাম্পত্যজীবনের জন্য সেটা না করে বরং ভালো সময়ে বা সময় বুঝে ঠান্ডা মাথায় আপনার সঙ্গিটিকে বলুন, তাঁর কোন আচরণগুলো আপনাকে কষ্ট দেয়৷ দেখবেন একটু সতর্ক হয়ে চেষ্টা করলেই আস্তে আস্তে এ রকম আচরণ কমে যাবে৷
শ্রদ্ধাবোধ
স্বামী-স্ত্রী বা ভালোবাসার সম্পর্ক – যে কোনো সম্পর্কেই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে তা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যায়৷ তাই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকা আরো জরুরি৷ কোনো ব্যাপরে দ্বিমত থাকতেই পারে, সেক্ষেত্রে একে অপরকে কষ্ট না দিয়ে বা ছোট না করে আপনার কথা খুলে বলুন৷ কারণ ভালোবাসার মানুষকে অপমান বা কষ্ট দিলে সম্পর্কে আস্তে আস্তে চিড় ধরতে শুরু করে৷
যত্ন করে রাখুন
ভালোলাগা থেকেই তো ‘ভালোবাসার’ জন্ম৷ আর ভালো ও সুস্থ থাকতে চাইলে চাই ভালোবাসা ও তার যত্ন৷ ভুল বোঝাবুঝি বা অতি আবেগী না হয়ে বাস্তববাদী হলে ‘ভালোবাসা’ সহজেই জায়গা পাবে৷ দু’জনের মধ্যে সম্পর্কও হবে মধুময়৷ এ সব পরামর্শগুলো দিয়েছেন জার্মানির ‘পার্টনার থেরাপিস্ট’ বা দাম্পত্যসম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ডা. ভল্ফগাং ক্র্যুগার৷

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর