নির্যাতন ভোগ করে দ্রেশদ্রোহি আর পালিয়ে বেড়ানোরা মুক্তিযোদ্ধা: মেজর হাফিজ

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রপরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে এখন জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ। একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি (খালেদা জিয়া) এমন কি বললেন যে দেশ রসাতালে গেলো? নামগ্রোত্রহীণ এক উকিল তার নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানিদের হাতে দুটি সন্তানসহ ছয় মাস বন্দি থাকলেন, নির্যাতন ভোগ করলেন, তিনি আজ দ্রেশদ্রোহি হয়ে গেলেন, আর যারা পালিয়ে বেড়ালো তারা হয়ে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এর আয়োজন করে।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে যদি গণতন্ত্র, ভোটাধিকার থাকতো; আর যদি আগামী একমাসের মধ্যে কোনো কারণে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে দেখা যাবে কে দেশদ্রোহি আর কে দেশনেত্রী।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সেদিন অন্যদের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেছিলেন। তিনি শহীদদের পূর্ণ সম্মান দিতে চান। আমরা মুক্তিযোদ্ধারাও চাই, শহীদদের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ হোক। তাদের আরো সুযোগ-সুবিধা নিয়ে উচ্চ সম্মান দেয়া হোক। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই সরকারের সেই ধরনের কোনো মনমানসিকতা নেই।
সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো, মামলাবাজি বন্ধ করুন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন। বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করুন। যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামলার জন্য অনুমতি দিয়েছেন, একদিন তাদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যেভাবে সরকার মামলাবাজি শুরু করেছে তাতে প্রধান বিচারপতির নামে দেশদ্রোহিতার মামলা হলে মোটেও আশ্চর্য হবো না।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আইন প্রণয়নের উদ্যোগের সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, আইন প্রণয়ন করে কোনো শ্রদ্ধা বা সম্মান পাওয়া যায়না। বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে আইন করতে যাচ্ছে তা অর্থহীন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কারো কথা তাদের (আওয়ামী লীগ) পছন্দ না হলে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হবে, সে যদি মুক্তিযোদ্ধাও হয়।
তিনি বলেন, এই দেশে যেহেতু আইনের শাসন নেই, নির্বাচিত আইনসভাও নেই সেজন্য তাদের প্রত্যেকটি কথা অসাড় বলে গুরুত্ব দিতে চাইনা। বর্তমানের যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে মুক্তিযোদ্ধারা হতাশ। এখন তামাশা ছাড়া আর কিছু হচ্ছেনা। গণতন্ত্র বিলুপ্ত আইনের শাসন নির্বাসনে, মানুষের অধিকার নেই।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর