প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে একমত নন অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘অবসরে যাওয়া বিচারপতিদের রায় লেখা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা তার নিজস্ব বক্তব্য। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের সাথে একমত নই।’

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। মাহবুবে আলম বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির কথা ধরা হলে, অবসরে যাওয়ার তিন-চার মাস আগ থেকে বিচারপতিরা আদলতে বসতে পারবেন না।’

তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান বিচারপতির মন্তব্য নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত ১৩তম সংশোধনীর বিষয়ে প্রাক্তন বিচারপতি এ বি এম খাইরুল হকের রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খাইরুল হক অন্য ৫ বিচারপতির পক্ষে রায় লিখেছেন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলার লিখিত রায় পরিবর্তন হয়েছে, তা-ও সত্য নয়। প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার দ্বায়িত্বের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১৮ জানুয়ারি এক বাণী দেন।

বাণীর এক অংশে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের মামলাজট নিরসনকল্পে বিদ্যমান অবকাশকালীন ছুটি কমিয়ে আনা ও যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তিকৃত মামলার রায় লেখা নিশ্চিত করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করা সত্ত্বেও সহকর্মী সকল বিচারপতিগণকে এ বিষয়ে সম্মত করতে সমর্থ হইনি। এটা আমার ব্যর্থতা। কোনো কোনো বিচারক রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন, আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী।’

বাণীতে তিনি আরো বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন। তাই তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না। আদালতের নথি সরকারি দলিল। একজন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের নিকট সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রস্তুত করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার হারান। আশা করি, বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বেআইনি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।’

প্রধান বিচারপতির এই বিবৃতির পর আইনজীবীসহ বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর