আগাম শিম চাষে ভাগ্য ফিরছে চাষির

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সবজির ভান্ডার খ্যাত মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন এলকায় বাড়ছে আগাম শিম চাষ। আগাম শিম চাষ লাভজনক হওয়ায় জেলার কৃষকরা প্রতি বছরই শিম চাষ করে থাকেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী মেহেরপুর জেলায় এবার প্রায় ১৫৭ হেক্টর জমিতে আগাম শিম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর ও মুজিবনগর উপজেলায় ১৩৭ হেক্টর ও গাংনী উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম শাহাবুদ্দীন জানান, জেলায় সাধারণত, স্থানীয় জাত রহিম রূপবান, হাইব্রিড জাতীয় বারী শিম-৩, ইর্ষা-১ ও অটো জাতের শিমের চাষ করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউপির মহিষাখোলা, দিগলকান্দী, আড়পাড়া, বামন্দী ইউপির রামনগর, ভবানিপুর, মুটমুড়া ইউপির আকুবপুর, মহম্মদপুর, বাওটসহ বিভিন্ন এলাকার চাষিরা শিমের চাষ করে থাকেন।

গোপালনগর গ্রামের শিম চাষি সিদ্দিক হোসন ও ওয়াসিম আলী বলেন, এ বছর আমরা দুই বিঘা জমিতে শিমের চাষ করেছি। দীর্ঘ মেয়াদি বৃষ্টির কারণে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া না গেলেও  বাজারে শিমের চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় লাভের আশা করছি আমরা।

ছবি: ডেইলি বাংলাদেশ

গাংনী উপজেলার দিগলকান্দী গ্রামের চাষি আকবর আলী বলেন, এ বছর আমার এক বিঘা জমিতে অটো জাতের আগাম শিম চাষ করেছি। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এরইমধ্যে আমি ৯৩ টাকা কেজি দরে প্রথম চালানে ২০ হাজার টাকার শিম  বিক্রি করেছি। বর্তমানে বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরে শিম বিক্রি করছি। আশা করছি এখনো ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করব।

একই গ্রামের ওসমান আলী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে লাগাতার বর্ষণের পাশাপাশি ছিল গরম আবহাওয়া। শিম গাছে ফুল ধরলেও তা ঝরে গেছে। সেই সঙ্গে পচন রোগের কারণে পচে যাচ্ছে ফুল ও ফল। পাতায়  পোকা লাগা ও পাতামরা রোগ দেখা দিয়েছে শিম বাগানে। এসব দূর করতে অনেক ধরনের ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না।

শিম চাষিরা বলেন, পচে যাওয়া ও পোকা ধরা রোধে অনেক ধরনের কীটনাশক দেয়া হচ্ছে। তারপরও ফুল পড়ে যাচ্ছে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা শিম চাষে খরচ ২০ হাজার টাকা। এবার বিক্রি হচ্ছে বিঘা প্রতি এক লাখ থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকায়।  গত বছরগুলোতে বিঘা প্রতি ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে।

কাঁঠালপোতা গ্রামের শিম চাষি হাসান ও সিরাজ বলছেন, এক বিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। শিমের ফলন কম হলেও বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় কিছুটা লাভের আশা করছি।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা (ডিডি) স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, আবহাওয়ার কারণে কিছু গাছে রোগ দেখা দিচ্ছে। আমরা ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ানাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছি। আশাকরি আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে এসব থাকবে না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর