সাগরে ভেসে ভেসেই ২ বছর পার করেছেন এই নারী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোল্যান্ডো ভিসবাল সমুদ্রে মাছ ধরেন। এটাই তার পেশা। অন্যান্য দিনের মত সেদিনও মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরছিলেন তিনি এবং তার সঙ্গে থাকা আরো কয়েকজন। হঠাৎ করেই নজরে আসে পানিতে ভাসছে কিছু একটা। যতই কাছে এগিয়ে যাচ্ছেন ততই স্পষ্ট হচ্ছে সেটি। কাছে দিয়ে দেখতে পান এক নারী। প্রথমে রোল্যান্ডো ভেবেছিলেন মৃত বোধহয়।

কিন্তু না দেখেন জীবিত আছেন সেই নারী। টেনে নৌকায় তুলতেই কাঁদতে থাকেন সেই নারী। রোল্যান্ডো তাকে বোতলে করে পানি খেতে দেন। ততক্ষনে অচেতন হয়ে যাচ্ছে উদ্ধার হওয়া সেই নারী। তীরে নিয়ে আসা হয় তাকে। জানা যায়, কলোম্বিয়া এই নারীর নাম অ্যাঞ্জেলিকা গাইতান।

স্বামীর সঙ্গে কিছুতেই যখন পেরে উথছিলেন না তখন একদিন মনের দুঃখে ঝাঁপ দিয়েছিলেন মাঝসমুদ্রে। তাও ২ বছর আগের কথা।  ৪৬ বছরের অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানের প্রায় ২০ বছরের দাম্পত্য জীবন বিষাক্ত হয়ে উঠেছিল। স্বামী প্রায়ই গায়ে হাত তুলত। প্রথম বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে শুরু হয় অত্যাচার। বেশ কয়েক বার পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরেই পুলিশ ছেড়ে দিত স্বামীকে। আবার শুরু হত মারধর। ২০১৮ এর সেপ্টেম্বরে স্বামী মেরে মুখ ফাটিয়ে দেয়। এরপর আর স্থির থাকতে পারেননি অ্যাঞ্জেলিকা। বাড়ি ছেড়ে পালান।

সেই থেকে বাড়ির কেউ তার খোঁজ জানত না। ছয় মাস রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন। শেষে একটি আশ্রয় শিবিরে ঠাঁই হয়। কিন্তু সেই আশ্রয়ও যায়।  অশান্তি থেকে বাঁচতে পৃথিবী থেকেই বিদায় নিতে চেয়েচিলেন তিনি। তবে ভাগ্য সহায় হয়নি তার। অশান্তির সংসার ছাড়লেও বিশ্ব সংসার তাকে ছাড়েনি।

তার সেই মরে যাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ হয়নি দীর্ঘ দুই বছরে। কীভাবে! সাগরে ঝাঁপ দেয়ার দুই বছর পর মাঝসমুদ্রে ভাসমান কলোম্বিয়ার সম্প্রতি ওই নারীকে উদ্ধার করেন মৎস্যজীবী রোলান্ডো ভিসবাল ও তার এক বন্ধু। এভাবেও বেঁচে ফেরা যায়। উদ্ধারের পর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, মাঝে দুই বছর অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানের কোনো খোঁজ ছিল না।

সংবাদ মাধ্যমকে রোলান্ডো জানান, ফেসবুকে ভিডিওটি শেয়ার করেন, সেখানে দেখা যায়, একজন মাঝসমুদ্রে ভেসে যাচ্ছেন। তখনই মৎস্যজীবীরা অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানকে উদ্ধার করেন। এরপর তার মেয়েরা গাইতনের খোঁজ নেন। মাকে নিজেদের কাছে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছেন অ্যাঞ্জেলিকা গাইতানের দুই মেয়ে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর