বাহিনীগুলো’র নেপথ্যে রাজনৈতিক আশীর্বাদ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই মূলত নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ৮ ইউনিয়নে ১৯টি ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ গড়ে উঠেছে। আর তারা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে। ক্ষমতার রাজনীতিতে ‘শক্তি প্রদর্শন’ করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের নানাভাবে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ফলে বাহিনীগুলোর প্রয়োজনেও পাশে থাকতে হয়েছে ‘বাহিনী তোষণকারী নেতাদের।’ বিভিন্ন নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে এসব বাহিনীকে প্রকাশ্যে আনার অভিযোগ পুরনো। ফলে নির্বাচন এলে স্বাভাবিক সময়ের থেকে কয়েকগুণ বেশি ক্ষমতাধর হয়েছে তারা।

রাজনৈতিক নেতা ও সন্ত্রাসী বাহিনীর এমন রসায়নেই বাহিনীগুলো বছরের পর বছর বেগমগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। বেশির ভাগ সময়েই তাদের দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যাশিত ভূমিকার অভাবে সন্ত্রাসের এই জনপদকে নিরাপদ করে গড়ে তোলা যায়নি।

বাহিনীগুলো গড়ে ওঠার পেছনে প্রধান তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। সেগুলো হল- রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়, সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ এবং জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে বেগমগঞ্জে বিভিন্ন দলীয় গ্রুপ তৈরি।

আর এই তিন কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের সাঁড়াশি অভিযানে দেখা যায়নি বলে জানান স্থানীয়রা।

আবার কখনও কখনও একশ্রেণির অসাধু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলার অভিযোগ এসেছে।

তবে পুলিশ এ বক্তব্য অস্বীকার করে বলছে, তারা বরাবরই বাহিনীগুলো দমনে শক্ত অবস্থানে ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন যুগান্তরকে বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বাহিনীগুলোর বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখেছি।

যেসব বাহিনীর নাম বলা হচ্ছে বিভিন্ন সময়ে তাদের গ্রেফতারও করা হয়েছে। পরে তারা জামিন নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি সুমন বাহিনীর সুমন জামিন নিয়ে বের হয়েছে। তিনি বলেন, বেগমগঞ্জ থানা অনেক বড়।

সে হিসেবে আরও জনবল প্রয়োজন। এই থানাটি ভেঙে পশ্চিমাঞ্চলের ৬ ইউনিয়ন নিয়ে বাংলাবাজার থানা নামের আরেকটি থানা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। দুই বছর আগের প্রস্তাবটি এখনও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পেন্ডিং আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীর অনেক সদস্য সরকারি দলে ভিড়েছে।

পরে বাহিনীগুলো এতটাই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলার দুঃসাহসও তারা দেখিয়েছে।

আবার আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই বিভিন্ন সময়ে অপরাধীদের ছাড়াতে থানায় অসংখ্য তদবির করেছেন বলে জানা গেছে। সন্ত্রাসী গ্রুপ কয়েক দফায় হামলা করেছে পুলিশ, র‌্যাব, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরও।

আবার বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধানদের নামে রয়েছে ‘ফ্যান গ্রুপ’।

রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকায় খুন, হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ একের পর এক অপকর্ম করেও পার পেয়ে যাচ্ছে তারা।

আবার গ্রেফতার হলেও কিছুদিন পর জামিনে বের হয়ে ফের জড়িয়ে পড়ছে পুরনো অপরাধে। চৌমুহনী পৌরসভার আগামী নির্বাচন ঘিরে ফের সক্রিয় হচ্ছে কয়েকটি বাহিনী।

স্থানীয়রা বলছেন, গত এক দশকে বেগমগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সব কার্যক্রম চলেছে তিন নেতাকে ঘিরেই।

তারা হলেন- ৩৭ বছর পর ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরন, চৌমুহনী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সাল, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আনারস মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদের ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মিনহাজ আহমেদ জাবেদ।

বর্তমানে মিনহাজ আহমেদ জাবেদ দেশের বাইরে রয়েছেন। ফলে এখন আওয়ামী রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ এমপি মামুনুর রশীদ কিরন ও মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সালের হাতে।

ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটি এবং ইউপি নির্বাচনের মনোনয়নও অনেকটা তাদের পছন্দ অনুযায়ী হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। আবার দলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বও রয়েছে।

এই দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের কখনও তাদের কাছে এবং কখনও তাদের অনুসারীদের কাছে ভেড়ার অভিযোগ রয়েছে।

জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আলম সেলিম যুগান্তরকে বলেন, ‘বেগমগঞ্জে ক্রিমিনাল (সন্ত্রাসী) খুবই বেশি। এই আসনে আমরা আগে কখনই জিততে পারিনি। এখানে বিএনপি-জামায়াতের ত্রাসের রাজত্ব ছিল। পঁচাত্তরের পর প্রথম ২০১৪ সালে আমরা সেখানে জিতেছি। কিন্তু ওখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে একতা নেই। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই অনুপ্রবেশ হচ্ছে। এরাই বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে।’

যুগান্তরের অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, বেগমগঞ্জের ৮ ইউনিয়নে ১৯টি বড় বাহিনী রয়েছে। এদের বড় একটি অংশ এক সময় বিএনপি’র রাজনীতিতে ছিল।

এখন এই বাহিনীগুলোর পেছনে কারা রয়েছে তা নিয়েও অনুসন্ধান চালায় যুগান্তর। বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি এবং ভুক্তভোগীরা জানান, একলাশপুরে দেলোয়ার বাহিনী বা মামা বাহিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুই নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে কাজ করত।

‘কাতা রাসেল’ বাহিনী স্থানীয় সম্রাট বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতার ছত্রছায়ায় কাজ করে। আগে তার যোগাযোগ ছিল উপজেলা যুবলীগের এক নেতার সঙ্গে।

আলাইয়ারপুরের টিটু বাহিনীর টিটু (বিএনপি সমর্থক), শাহাবুদ্দিন বাহিনীর শাহাবুদ্দিন (প্রবাসে ছিল), লিটন বাহিনীর (বিএনপি’র সাবেক এমপির সঙ্গে ছবি রয়েছে) ও শাকিল বাহিনী (ছাত্রদল করত) বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের ছত্রছায়ায় কাজ করে।

এদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান মিলনকে তারা ধাওয়া করে। তখন সে পুকুর সাঁতরে পার হয়। এ সময় কুপিয়ে জখম করা হয় যুবলীগ নেতা মনাকে।

স্থানীয়রা জানান, শরীফপুর ও হাজীপুরের সম্রাট বাহিনীর সম্রাট ও সুমন বাহিনীর সুমনের সঙ্গে সখ্য ছিল শরীফপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা আলমগীর নাসির হোসেন শাফুর।

পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সম্রাট ও সুমন দু’জনেই সরকারি দলের সমর্থক বনে যান। এই ইউনিয়নে জুয়েল বাহিনী নামের আরেকটি গ্রুপ আছে।

এদের সবার বাড়ি হাজীপুর ইউনিয়নের যে অংশ পৌরসভায় পড়েছে (পৌর হাজীপুর) সেই এলাকায়। এরা বিভিন্ন সময়ে পৌর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে সখ্য থাকার কথা জানিয়ে প্রভাব বিস্তার করত।

সম্প্রতি নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সম্রাটের ভাগিনা মোসলেহ উদ্দিন রায়হানকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আমান উল্যাপুর ইউনিয়নে গিয়ে জানা যায়, সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কোন্দল রয়েছে। সবুজ বাহিনী ও ধোপা মামুন বাহিনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপের ছত্রছায়ায় কাজ করে।

আর নিজাম-বিশু বাহিনী বিএনপি’র রাজনীতি করে। বিএনপি’র সময়েও তারা এই এলাকার ত্রাস ছিল। এখন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ তাদের সমর্থনে রয়েছে বলে জানা যায়।

জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত পিয়াস-জহির বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক এক চেয়ারম্যান।

গোপালপুরের মাছুম বাহিনীর মাছুম উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ও পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলে বলে স্থানীয়রা জানান।

আর ছয়ানির রাসেল বাহিনীর রাসেল (বিএনপি সমর্থক) এলাকায় টিটু বাহিনীর টিটুর ‘ডান হাত’ বলে পরিচিত।

এই ইউনিয়নের জাবেদ বাহিনী ও বাবু বাহিনী ইউনিয়ন যুবলীগের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে সখ্য বজায় রেখে চলেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া রাজগঞ্জে মিলা-সুজন বাহিনী বিএনপি’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের যোগাযোগ রয়েছে পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গেও। মঞ্জু বাহিনী উপজেলা যুবলীগের এক নেতার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেন বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি এখলাসপুরে নারী বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা দেলোয়ার এক সময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে হয়ে ওঠেন আওয়ামী সমর্থক।

নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের সঙ্গে তার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, সাংসদ কিরনকে ফুল দিচ্ছেন দেলোয়ার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সাংসদ মামুনুর রশীদ কিরন যুগান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় বা যে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে কত মানুষ আসে ছবি তুলতে, দেখা করতে, আমি তো তাদের সবাইকে চিনিও না। এই ছবি কখন তুলেছে আমি জানিও না। আমরা কোনো সমাবেশে গেলে মানুষ এসে পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলে। এখানেও তেমনই হয়েছে। এটা দিয়ে কাউকে আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা বলার সুযোগ নেই। বাহিনী কারা চালায় সবাই জানে।’

কারা চালায়- এমপিকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘বেগমগঞ্জে খোঁজ নেন তাহলেই জানতে পারবেন। আমি কারও বিরুদ্ধে বলতে চাই না। আমার নাম যদি কেউ বলে, আমার যদি কোনো সম্পৃক্ততা পান সেটাও লেখেন কোনো আপত্তি নেই। আমি সব সময় সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে ছিলাম। জীবনে কারও থেকে এক কাপ ফ্রি চাও খাইনি। আজীবন সাধারণ জীবনযাপন করেছি। আমি যদি অন্যায় করি আমারও বিচার হোক। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা লেইখেন না।’

এমপির কাছে যুগান্তরের প্রশ্ন ছিল- ‘কীভাবে বাহিনীগুলো গড়ে উঠল?’ এর জবাবে সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরন বলেন, জামায়াত-বিএনপি’র সময় তাদের সৃষ্টি হয়। কিছু লোকের ছত্রছায়ায় এসব বাহিনী রাতের বেলায় কাজ করে, হাইজ্যাক করে। এদের কারণে ১০-১২ জন লোক মারা যায়। দুর্গম এলাকাগুলোতে এগুলো বেশি হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশনে যেতে হবে। আমরা প্রশাসনকেও বলেছি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

এদিকে পৌর মেয়র আকতার হোসেন ফয়সাল ও তার ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন বাবরের সঙ্গেও বাহিনীর শীর্ষ নেতাদের বেশ কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যুগান্তরের হাতে আসা এসব ছবিতে তাদের সঙ্গে দেখা গেছে, সম্রাট বাহিনীর প্রধান বাদশা চৌধুরী সম্রাট ওরফে সম্রাট, সুমন বাহিনীর প্রধান খালাসি সুমন ওরফে সুমন ও জুয়েল বাহিনীর প্রধান জুয়েলকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর মেয়র আকতার হোসেন ফয়সাল যুগান্তরকে বলেন, ‘এগুলো ফেইক ছবি। এগুলো ফেসবুকে কীভাবে যেন জোড়া দেয়, ওইটা করেছে। এগুলো আমার অরিজিনাল কিছু নয়। আমি দেলোয়ারকে চিনিও না। ঘটনার আগে আমি তার নামও শুনিনি।’ সম্রাট-সুমনের সঙ্গে ছবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এগুলো এডিট করা। আপনি ভালোভাবে দেখলেই বুঝবেন। এখন তো ফেসবুকে ছেলেকে মেয়ে বানিয়ে ফেলে।’

পৌর মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সাল আরও বলেন, ‘আসলে বেগমগঞ্জ এত খারাপ এলাকা নয়। এসব ছ্যাঁচড়া মাস্তান-টাস্তান সব এলাকাতেই থাকে।

এটাকে যেভাবে নুন মরিচ লাগিয়ে, মসলা লাগিয়ে মিডিয়া চালিয়েছে মনে হয় এটা গেরিলা বা তামিল গেরিলা অথবা উলফা-টুলফা টাইপের হয়ে গেছে।

এটা নিয়ে কথা বললেও ভাই সমস্যা। এরা কেউ এমন কিছু নয় যে, একেবারে এরশাদ শিকদার হয়ে গেছে অথবা শীর্ষ সন্ত্রাসী কতগুলো আছে না (?) এ রকম হয়ে গেছে।

এখানে দেলোয়ার যেটা দেলোয়ার বাহিনী বলে এইটা তো ওখানে মুরগি চুরি ও ডাব চুরি করত। গ্রামের কিছু ছিঁচকে পোলাপান থাকে না?- এই করত, সেই করত, সিএনজি চালাত এই আর কি। একটা ঘটনা করে ফেলেছে সেটা ভাইরাল হয়ে গেছে।

এটা সে খুব খারাপ করেছে। এজন্য তার ফাঁসি হওয়া উচিত। ঘটনা যেটাই হোক কিন্তু ভাইরাল হয়ে এটা সবার চোখে পড়ে গেছে। যাহোক আমার কথা হচ্ছে, দু-চারটা মার্ডার হয়েছে আগে, সেগুলোর আসামি অ্যারেস্টও হয়েছে।

এখন কেউ যদি হাইকোর্ট থেকে জামিন পায় তাহলে আমি-আপনি কি করব?’ তিনি আরও বলেন, ‘ডাবল মার্ডার কেসের আসামির ছয় মাস-সাত মাস পর হাইকোর্ট থেকে কীভাবে জামিন হয় আমি ভাই বুঝি না।’

সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোর বিষয়ে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও বেগমগঞ্জের তিনবারের সংসদ সদস্য বরকত উল্লাহ বুলু যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা যখন ছিলাম তখন এমন বাহিনী ছিল না। তবে কিছু মানুষের কাছে দেশীয় অস্ত্র ছিল। গত ১০-১২ বছরে এই সশস্ত্র বাহিনীগুলো হয়েছে।’

বিএনপি’র কর্মী-সমর্থকদের বাহিনী রয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘কর্মী-সমর্থক পর্যায়ে সেটা থাকতে পারে তবে আমার জানা নেই। কিন্তু কথা হল তারা বিএনপি করলেও আমাদের সময়ে তো বাহিনী করতে পারেনি। এখন কীভাবে বাহিনী করে? এত অস্ত্রের কথা, সন্ত্রাসের কথা বেগমগঞ্জে কেউ কখনও শোনেনি। আর যদি বলে বাহিনী আমাদের সময়ে ছিল, তাহলে বলুক কে ছিল?’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর