একজন ড্রাইভারের ২৩টি ফ্ল্যাট থাকা দুর্ভাগ্যজনক, এরা কোভিডের চেয়েও ভয়াবহ: স্বাস্থ্য সচিব

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেছেন, ‘একজন ড্রাইভারের যদি ২৩টি ফ্ল্যাট থাকে। এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আর কি হতে পারে! এরা কোভিড-১৯ এর চেয়েও ভয়াবহ। আমি আমার দেশকে ভালবাসি। দেশকে সত্যিকারভাবে ভালোবেসে আমরা কি আমাদের লক্ষ-লক্ষ শহীদদের কথা স্মরণ করে দেশের অনৈতিক অসততা থেকে দূরে থাকতে পারি না।’

শনিবার (১৭ অক্টোবর) কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কিশোরগঞ্জ জেলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও জন-প্রতিনিধিদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান এসব কথা বলেন।

সচিব বলেন, আমরা যদি সত্যিকার অর্থে অপচয় রোধ করতে পারতাম, তাহলে দেশের অধিক সংখ্যক মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে পারতাম। আর এই অপচয় রোধ করতে হলে দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সততার সাথে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যথায় আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবো না।

তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাস্থ্য সেবাকে মানুষের ঘরে ঘরে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। পাশাপাশি এদেশের স্বাস্থ্যখাতকে অনিয়ম ও দুর্নীতি থেকে মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। স্বাস্থ্য খাতে ৫৪ হাজার কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। আশা করছি স্বাস্থ্য খাত অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

করোনার ৩ কোটি ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ। ৩০ হাজার সরকারি চিকিৎসকসহ সারাদেশে ৮৭ হাজার চিকিৎসক সারা দেশে কাজ করে যাচ্ছে।

মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন বলেও বলে তিনি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তিনি বলেন, সেবা গ্রহীতাদের সঠিক সেবা দিতে হবে। এ নিয়ে কোন আপস করা হবে না। ভালো না লাগলে চাকরি ছেড়ে দিন।

স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান জানান, আমাদের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির অভাব নেই। কিন্তু  যন্ত্রপাতি চালানোর মত উপযুক্ত ও দক্ষ জনবল নেই। এ নিয়েও ভেবে দেখা হচ্ছে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকজনের সংকট দূরীকরণে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ক্যাডারকে শক্তিশালী করা হবে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের পদন্নোতির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অন্য কোনো ক্যাডার সার্ভিস থেকে স্বাস্থ্য ক্যাডার পেছনে পড়ে থাকবে না। সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সজল কুমার সাহা, মেডিকেল কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তাজরিনা তৈয়ব, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা আক্তার, সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রমুখ।

মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল কাদির মিয়া।

এর আগে স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের ভুরুঙ্গারচর কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন। সেখানে তিনি নিজ নাম লিপিবদ্ধ করে ক্লিনিক থেকে ফলিসন ট্যাবলেট সংগ্রহ করেন। এই ট্যাবলেট শরীরে আইরন ও ফলিক এসিডের ঘাটতি পূরণ করে।

এরপর তিনি ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর