অভিযোগ প্রমাণ হলে যে সাজা হতে পারে সাহেদের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে করা একটি মামলার রায় সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করার জন্য দিন ধার্য রয়েছে। মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বনিম্ন ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার বিধান রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করছে, সাহেদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। তাই রায়ে সাহেদের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। অন্যদিকে আসামিপক্ষ বলছে, অভিযোগ প্রমাণ হয়নি, সেজন্য সাহেদ খালাস পাবেন।

গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। এ ঘটনার পর পালিয়ে যান সাহেদ। ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হয়।

Shahed-1

করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৬ জুলাই সাহেদকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এরপর ১৯ জুলাই তাকে নিয়ে উত্তরার বাসার সামনে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। সেখানে সাহেদের নিজস্ব সাদা প্রাইভেটকারে পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ১০ বোতল ফেনসিডিল, একটি পিস্তল এবং একটি গুলি উদ্ধার করা হয়। এরপর উত্তরা পশ্চিম থানায় অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়।

৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ২৭ আগস্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণে সাহেদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আমরা আশা করছি, রায়ে সাহেদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।

ঢাকা মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) তাপস কুমার পাল বলেন, সাহেদকে নিয়ে অভিযান পরিচালনার সময় একটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়। আমরা তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। রায়ে সাহেদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

Shahed-1

তবে সাহেদের আইনজীবী মনিরুজ্জমান বলেন, ‘সাহেদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। রায়ে সাহেদ খালাস পাবেন বলে আমরা আশা করছি।’

আইনে যা রয়েছে

সাহেদের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায়। এই ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আইনের ১৯ (এ) ধারায় বলা হয়েছে, বিনা লাইসেন্সে আগ্নেয়াস্ত্র রেখে কেউ যদি কোনো অপরাধ সংঘটন করে, অপরাধ যদি পিস্তল, রিভলবার, রাইফেল, শর্টগান বা অন্য আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কিত হয় তাহলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অন্য কোনো কঠোর কারাদণ্ড হবে, যার মেয়াদ ১০ বছরের কম হবে না।

উল্লেখ্য, সাহেদের বিরুদ্ধে সারাদেশে অর্ধশত মামলা রয়েছে। এর বেশিরভাগই প্রতারণার অভিযোগে করা। মামলাগুলোর মধ্যে এই প্রথম অস্ত্র আইনের মামলাটির রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর