অপরূপ সৌন্দর্য বিলিয়ে দিচ্ছে শাপলা বিলে ফুল ফোটার দৃশ্য

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অপরূপ সৌন্দর্য বিলিয়ে দিচ্ছে কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউপির পশ্চিম মাদার টিলা গ্রামের পাটাধোঁয়া শাপলা বিল। লাল সাদা শাপলার অপরূপ সৌন্দর্যের সমারোহ দেখা যাচ্ছে এই বিলে।

সকালের সূর্যের আলোতে লাল-সাদা শাপলার ঝলমলের উজ্জ্বলতা দেখলেই যে কারো মন কাড়ে। ভোরের আলোয় এর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এ বিলের পানিতে শাপলার লতাপাতাগুলো বিলের পানিকে ঢেকে দিয়েছে।

হাজারো লাল-সাদা শাপলার কারণে এই বিলের নামকরণ করা হয় শাপলার বিল। এ বিলকে অনেকে আবার পদ্য বিল নামে ডাকে। এ বিলের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা প্রতিদিন ভিড় করেন।

দর্শনার্থীদের ভিড়ে দিন দিন মুখরিত হয়ে উঠছে এই পাটাধোঁয়া শাপলা বিল। শাপলার মাঝে বাংলার রূপ খুঁজে পাচ্ছেন এখানকার মানুষ। সূর্যোদয়ের সময় সূর্য রশ্মি ফুটন্ত শাপলার উপর পড়ার পর এক অপরুপ দৃশ্যে ফুটে উঠে এই শাপলা বিলে।

সূর্যোদয়ের সময় আলোক রশ্মি ফুটন্ত শাপলার উপর পড়ার সময় এক অপরুপ দৃশ্যে ফুটে উঠে এই শাপলা বিলে
স্থানীয় নৌকার মাঝি আমিনুল ইসলাম বলেন, শাপলা বিল আমাদের উর্পাজনের পথ হয়েছে। প্রতি বছর এই সময় পাটাধোঁয়া শাপলা বিলে ফোটা শাপলাফুল দেখার জন্য এখানে দূর- দূরান্তের মানুষ আসে। শাপলা ফুল দেখতে আসা মানুষদের নৌকায় উঠিয়ে বিলটি ঘুরাই।

আমিনুল ইসলাম আরো জানান, এই শাপলা বিলে দেখতে আসা মানুষদের নৌকায় ঘুরে বেড়িয়ে তার প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার আয় হয়। এই উর্পাজন দিয়ে তার সংসার চলে।

দর্শনার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, শাপলা বিলে ঘুরতে অনেক ভালো লাগে। ফুল ফোটার অপরূপ দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। এই শাপলা বিলটি একটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

শাপলা বিলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা তানভীর আহমেদ সোহেল বলেন, প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এই শাপলা বিল রৌমারীর এই প্রত্যন্ত এলাকায় সৌন্দর্য বিলিয়ে দিচ্ছে। প্রতি বছর এই সময় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কাজের ফাঁকে বিলে ঘুরতে আসি।

স্থানীয় ওমর আলী জানান, তার পূর্ব পুরুষরা শুকনো মৌসুমে বিলের জমি গুলোতে পাট চাষ করতো। বর্ষার পানিতে বিলটি ভরে গেলে পাট কেটে ওই পানিতে পাট জাঁক দিতো। সেই সময় থেকে এই বিলটির নামকরণ করা হয় পাটাধোঁয়ার বিল।

তিনি আরো জানান, ৫ বছর আগে এ বিলে বর্ষার পানি ঢুকার পর পানি নেমে যাওয়ার কয়েকদিন পরেই আপনা-আপনিভাবে বিলটিতে ফুটতে শুরু করে সাদা ও লাল  শাপলা ফুল। প্রতি বছর আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এখানে শাপলার মৌসুম।

১০ একর জলাভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া লাল ও সাদা শাপলা ফুলের সমাহার দেখতে আসা পর্যটকদের জন্য রয়েছে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা। অল্প ভাড়ায় ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে ১০ একর জলাভূমির সৌন্দর্যময় শাপলা বিল পাড়ি দেয়া যায়। সড়ক ও নৌপথে এই শাপলা বিলে আসা যায়। সড়ক পথে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা হয়ে যেতে হয়। নৌপথে কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দর দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ বেয়ে এই বিলে যাওয়া যায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর